পাইকগাছায় মিনহাজ নদীর খনন ও ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
- আপডেট সময় : ৬৩ বার পড়া হয়েছে
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মিনহাজ নদীর মুখে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে এবং জলাবদ্ধতার কারণে মৎস্যচাষিদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে শত শত এলাকাবাসী মিনহাজ নদীর ইজারা বাতিল এবং নদী খননের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
জানা গেছে, পাইকগাছার ২৫১.২৫ একর আয়তনের মিনহাজ নদী (বদ্ধ জলাশয়) উপজেলার লস্কর, গড়ইখালী, চাঁদখালী এবং কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের কয়েকটি বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। আষাঢ়ের অতিবৃষ্টিতে এই চার ইউনিয়নের কয়েকটি বিলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। মিনহাজ নদীর মুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি ভাটার সময় শিবসা নদীতে যেতে পারছে না, ফলে পুরো এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কিছু এলাকার মৎস্য লিজের ঘের প্লাবিত হয়ে মাছ ভেসে গিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা আমন ধানের বীজতলাও তৈরি করতে পারছেন না।
লস্কর ইউনিয়নের মিনহাজ নদীর পাড়ে খড়িয়া গোড়া বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জিএম সামছুর রহমান। সমাবেশে উপস্থিত শত শত এলাকাবাসী নদীর ইজারা বাতিল এবং দ্রুত খননের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াত নেতা মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মোজাফফর হোসেন, আসমত শিকারী, মাওলানা আবুল কালাম, সজল সানা সহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে খুলনা জেলা প্রশাসক স্থানীয় সুন্দরবন মৎস্যজীবী সমিতিকে ১৪৩১ থেকে ১৪৩৬ সাল পর্যন্ত মিনহাজ নদীর ইজারা প্রদান করেছে। যার বার্ষিক ইজারামূল্য ৩৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং ভ্যাট বাবদ ৯ লাখ টাকা। ইজারা নেওয়ার পর থেকে উক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে, যা পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে সুন্দরবন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তারা সরকারকে ইজারামূল্য পরিশোধ করে নীতিমালা অনুসরণ করে জলাশয় ব্যবহার করছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, চারটি ইউনিয়নে অবস্থিত আটটি স্লুইস গেটের মধ্যে সাতটি বন্ধ থাকায় পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একটি গেট দিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি সরতে পারছে না। এছাড়াও মিনহাজ নদীর মুখ ভরাট হওয়ায় পানি প্রবাহে সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার যদি ইজারা বাতিল করে, তবে তাদের কিছু করার নেই।
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত মিনহাজ নদীর খনন করে এর নাব্য ফিরিয়ে আনা হোক এবং ইজারা বাতিল করে উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক, যাতে কৃষকরা নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে পারে এবং জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পায়।

















