প্রযুক্তিনির্ভর মৎস্যচাষ ও খামার যান্ত্রিকীকরণে সবরকমের সহায়তা দেবে সরকার: ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০২:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪ ২২৭ বার পড়া হয়েছে
‘ভরবো মাছে মোদের দেশ, গড়বো স্যার্ট বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে মঙ্গলবার ৩০ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪ উদযাপিত হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে মৎস্য সপ্তাহে বিস্তারিত কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে মাছ উৎপাদনে সাফল্য এবং কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর জানাতে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) মৎস্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবদুর রহমান।
২০৩০ সালে ৬৫ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০৪১ সালে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এর সফলতা অর্জনে অত্যাধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি মৎস্যচাষ ও ব্যবস্থাপনা এবং খামার যান্ত্রিকীকরণের পাশাপালি উৎপাদনশীলতা প্রসারের লক্ষ্যে সরকার সকল রকমের সহায়তা দেবে বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে উন্নীতকরণের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জেলেদের অর্থেসামাজিক উন্নয়ন, মৎস্য অভয়াশ্রম ও সংরক্ষিত এলাকা স্থাপন, ইলিশ সংরক্ষণ, সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বিকাশে সামুদ্রিক মাছের মজুদ নিরূপণ ও স্থায়িত্বশীল আহরণ, মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের ভ্যালুডইন জিয়ন, রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এসময় মন্ত্রী পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছার দেশে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছে ৪৯ ১৫ লাখ মেট্রিক টন যা ২০১০-১১ অর্থবছরের মোট উৎপাদনের (৩০.৬২ লাখ মেট্রিক টন) চেয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। মৎস্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় নাবাগিছু দৈনিক মাছ পূরণ ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ দশমিক ৮০ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। দেশের মোট জিডিপি’র ২.৫৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপি’র ২২.২৬ শতাংশ মৎস্য উপখাতের অবদান। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১২ শতাংশের অধিক মানুষ মৎস্য খাতের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে।
মৎস্য মন্ত্রী জানান, মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘দ্যা স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২৪’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে অভান্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ ২য়, বন্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম এবং ইলিশ উৎপাদনে ১ম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক দূরদর্শিতায় ঐতিহাসিক সমুদ্র বিজয়ের মাধ্যমে ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক জলসীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষা, টেকসই মৎস্য আহরণ ও সুনীল অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের এম সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ‘নাফ সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে হাসিনা সরকার। প্রকৃত জেলেদের সনাক্ত করে তাদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান করা হচ্ছে। এযাবত নিবন্ধিত প্রায় ১৮.১০ লক্ষ জেলের মধ্যে ১৫.৮০ লক্ষ জেলেকে পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়েছে। জাটকা সংরক্ষণে ৪ মাস পরিবার প্রতি মাসিক ৪০ কেজি এবং ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের জন্য পরিবার প্রতি ২৫ কেজি হারে চাল প্রদান করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাটকা ও মা-ইলিশ আহরণ নিষিত সময়ে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৫৬টি জেলে পরিবারকে মোট ৭১,৬১১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে মন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোঃ আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।