ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউক্রেনের যুবক, প্রেমিকাকে বিয়ে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৭৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

প্রেমের টানে এখন ইউক্রেনের যুবক বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে ছুটে আসেন এবং এখানের এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেনের ওই যুবকের নাম এন্ড্রি প্রকিপ। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর বর্তমানে তার নাম মোহাম্মদ। গত ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পৌছে হলফনামার মাধ্যমে ধর্ম পরিবর্তন করেন।

জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা পূর্ব কালাছড়া গ্রামের মৃত কামাল মিয়ার বড় মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে (২৬) বিয়ে করেন। বৃষ্টি জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পরিবর্তন করে স্বামীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছেন বৃষ্টি প্রকিপ। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বৃষ্টি সবার বড়। পড়াশোনা করেছেন এসএসসি পর্যন্ত। টুকটাক ইংরেজী জানেন।

বৃষ্টি প্রকিপ বলেন, ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে এন্ড্রি প্রকিপের সাথে পরিচয়। টানা দুই বছরের প্রেম। বাধা হয়নি হাজার হাজার কিলোমিটারে পথ। বাধা হয়নি ধর্ম। এন্ড্রি নিজে থেকেই বিয়ের এবং ধর্ম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেন। ওকে আমি বিশ্বাস করি। কারণ একটি আংটি কেনার জন্য আমার কাছে টাকা পাঠায়। আংটিটি এখনো আমার হাতে আছে। ১৯ ডিসেম্বর দেশে এসে আমাকে বিয়ে করার কথা জানিয়েছে।

ওর কথায় আমার ন্যূনতম সংশয় হয়নি এবং সে আসবে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল। বিয়ে করতে পেরে আমরা খুশি। সবার দোয়া চান। এর আগে আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করে নিজের নাম বৃষ্টি প্রকিপ রেখেছে।

এন্ড্রি প্রকিপ ওরফে মোহাম্মদ বলেন, তার বিয়ে করা দরকার ও সে মুসলিম হবে-এ দুটি বিষয় আকৃষ্ট করেছে তাকে। তাই আমি আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছি। নিজের নতুন নাম রেখেছি মোহাম্মদ। বৃষ্টিকে বিয়ে করতে পেরে আমি আনন্দিত। ফেসবুকে দুই বছর আগে বৃষ্টির সঙ্গে পরিচয়। বৃষ্টি মুসলিম মেয়ে, অনেক ভালো এবং আমার দেশে তো মেয়েদের তুলনায় অনেক ভিন্ন ও ব্যতিক্রমধর্মী। তাই ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে এখানে এসে তাকে বিয়ে করেছি। এক মাস পর চলে যাব। সকল প্রক্রিয়া শেষের তাকে সঙ্গে নিয়ে যাব। বাংলাদেশকে অনেক ভালো লাগছে।

বৃষ্টির দাদি জোহেরা বেগম বলেন, আমরা খুশি। নাতিন জামাই অনেক সুন্দর। দুই মনের মিলন হওয়ায় হাজার মাইলের দূরত্ব পেরিয়ে প্রেমের টানে এখানে এসেছে। উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেম্বার মো. ফরহাদ আলী বলেন, ইউক্রেনের নাগরিক এক যুবক বাংলাদেশে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে আমার গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। এমন ঘটনায় সবাই খুশি। এ দম্পত্তিকে দেখতে দূর দুরান্ত থেককে অনেকেই ছুটে আসছেন আমাদের এলাকায়।আমরা সবাই তাদের খোজখবর রাখছি এবং তাদের পাশে আছি। এটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউক্রেনের যুবক, প্রেমিকাকে বিয়ে

আপডেট সময় : ১২:৪৮:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

 

প্রেমের টানে এখন ইউক্রেনের যুবক বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে ছুটে আসেন এবং এখানের এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেনের ওই যুবকের নাম এন্ড্রি প্রকিপ। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর বর্তমানে তার নাম মোহাম্মদ। গত ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে বাংলাদেশে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পৌছে হলফনামার মাধ্যমে ধর্ম পরিবর্তন করেন।

জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা পূর্ব কালাছড়া গ্রামের মৃত কামাল মিয়ার বড় মেয়ে বৃষ্টি আক্তারকে (২৬) বিয়ে করেন। বৃষ্টি জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পরিবর্তন করে স্বামীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছেন বৃষ্টি প্রকিপ। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বৃষ্টি সবার বড়। পড়াশোনা করেছেন এসএসসি পর্যন্ত। টুকটাক ইংরেজী জানেন।

বৃষ্টি প্রকিপ বলেন, ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে এন্ড্রি প্রকিপের সাথে পরিচয়। টানা দুই বছরের প্রেম। বাধা হয়নি হাজার হাজার কিলোমিটারে পথ। বাধা হয়নি ধর্ম। এন্ড্রি নিজে থেকেই বিয়ের এবং ধর্ম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেন। ওকে আমি বিশ্বাস করি। কারণ একটি আংটি কেনার জন্য আমার কাছে টাকা পাঠায়। আংটিটি এখনো আমার হাতে আছে। ১৯ ডিসেম্বর দেশে এসে আমাকে বিয়ে করার কথা জানিয়েছে।

ওর কথায় আমার ন্যূনতম সংশয় হয়নি এবং সে আসবে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল। বিয়ে করতে পেরে আমরা খুশি। সবার দোয়া চান। এর আগে আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করে নিজের নাম বৃষ্টি প্রকিপ রেখেছে।

এন্ড্রি প্রকিপ ওরফে মোহাম্মদ বলেন, তার বিয়ে করা দরকার ও সে মুসলিম হবে-এ দুটি বিষয় আকৃষ্ট করেছে তাকে। তাই আমি আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছি। নিজের নতুন নাম রেখেছি মোহাম্মদ। বৃষ্টিকে বিয়ে করতে পেরে আমি আনন্দিত। ফেসবুকে দুই বছর আগে বৃষ্টির সঙ্গে পরিচয়। বৃষ্টি মুসলিম মেয়ে, অনেক ভালো এবং আমার দেশে তো মেয়েদের তুলনায় অনেক ভিন্ন ও ব্যতিক্রমধর্মী। তাই ১৯ ডিসেম্বর বেলজিয়াম থেকে এখানে এসে তাকে বিয়ে করেছি। এক মাস পর চলে যাব। সকল প্রক্রিয়া শেষের তাকে সঙ্গে নিয়ে যাব। বাংলাদেশকে অনেক ভালো লাগছে।

বৃষ্টির দাদি জোহেরা বেগম বলেন, আমরা খুশি। নাতিন জামাই অনেক সুন্দর। দুই মনের মিলন হওয়ায় হাজার মাইলের দূরত্ব পেরিয়ে প্রেমের টানে এখানে এসেছে। উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেম্বার মো. ফরহাদ আলী বলেন, ইউক্রেনের নাগরিক এক যুবক বাংলাদেশে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে আমার গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। এমন ঘটনায় সবাই খুশি। এ দম্পত্তিকে দেখতে দূর দুরান্ত থেককে অনেকেই ছুটে আসছেন আমাদের এলাকায়।আমরা সবাই তাদের খোজখবর রাখছি এবং তাদের পাশে আছি। এটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।