বান্দরবানে মেঘলার ২৫ প্রাণী ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে

- আপডেট সময় : ১২:৫৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
অবশেষে বন্ধ হয়ে গেল বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্যটনকেন্দ্র মেঘলায় অবস্থিত মিনি চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য রাখা ২৫টি বন্যপ্রাণীকে উন্নত চিকিৎসা আর সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা সাফারি পার্কে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের নেতৃত্বে একটি দল মেঘলা এলাকার মিনি চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে এবং এসময় দুটি বড় ভালুক, একটি বাঁশ ভালুক, একটি বড় বিড়াল, ১৩টি হরিণ, দুটি খরগোশ ও ছয়টি বানর বান্দরবান জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বুঝে নেয়। পরে সেগুলো খাঁচায় করে গাড়িতে করে ডুলহাজারা সাফারি পার্কে নেওয়া হয়।
এসময় চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নূরজাহানের কাছে বন্যপ্রাণীগুলো বুঝিয়ে দেন বান্দরবান জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ রায়হান।
এদিকে এর আগে আইন অমান্য করে অবৈধভাবে এ ধরনের মিনি চিড়িয়াখানা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নূরজাহান। দীর্ঘদিন পর বন্যপ্রাণীগুলোকে উপযুক্ত স্থানে পাঠাতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নূরজাহান জানান, ব্যাঙের ছাতার মতো গজানো চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণীদের প্রতি অত্যাচার করা হচ্ছে। আর আমরা বন্যপ্রাণীদের এ অত্যাচার থেকে মুক্ত করে তাদের সঠিক স্থানে সংগ্রহ করবো এখন থেকে।
বান্দরবান বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান জানান, চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ বান্দরবান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরপরই আমরা বন্যপ্রাণীগুলোকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়ায় জন্য কাজ শুরু করি এবং সবার সহযোগিতায় ২৫টি বন্যপ্রাণীকে সাফারি পার্কে হন্তান্তর করার চেষ্টা সফল হলো।
এদিকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানে জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে মিনি চিড়িয়াখানা পরিচালিত হয়ে আসছিল। আর এ চিড়িয়াখানার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা মূলত বন্যপ্রাণী সর্ম্পকে অবগত হতো। তবে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে মেঘলা মিনি চিড়িয়াখানায় রক্ষিত বন্যপ্রাণীগুলো জব্দ করার কথা বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের কাছে জানানো হয়। পরে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাণীগুলো হন্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে মেঘলায় মিনি চিড়িয়াখানা বন্ধ ও বন্যপ্রাণীগুলোকে সাফারি পার্কে পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম মঞ্জুরুল হক।
১৯৯৪ সালে একটি ভালুক শাবক দিয়ে মেঘলা চিড়িয়াখানার যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে মিনি চিড়িয়াখানাটিতে অজগর সাপ, মায়া হরিণ, খরগোশ, বানরসহ নানা ধরনের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা হতো দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য।