মাছের উৎপাদন বাড়াতে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ করবে সরকার
- আপডেট সময় : ১১:৩১:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
সরকার মৎস্য খাতে উৎপাদন বাড়াতে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নের লক্ষ্যে ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়)’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্পটির প্রস্তাব ইতোমধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বাড়ানো এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। দেশের ২৫০টি উপজেলায় ২ হাজার ৫০০টি প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে, যেখানে গৃহস্থালি পুকুরে মাছ চাষের কৌশল দেখানো হবে। প্রকল্পের অধীনে মাঠ পর্যায়ে সহকারী নিয়োগ, মৎস্য চাষিদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সভায় পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিনিধি জানান, জুলাই ২০০৯ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পের দুটি পর্যায় সম্পন্ন হয়েছে, তবে সেই পর্যায়ে স্থাপিত প্রদর্শনীগুলো টেকসই হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে ডিপিপিতে তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আইএমইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পূর্ববর্তী পর্যায়ে প্রদত্ত প্রযুক্তিগুলো চাষিদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়নি। এছাড়া ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য খামারগুলো বেশ অগ্রসর হয়েছে; সে হিসেবে প্রকল্পটি পিছিয়ে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে সীমিত রাখা প্রয়োজন।
সভায় সুপারিশ করা হয় প্রকল্পটির ব্যয় ৫০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে এবং বাস্তবায়নে নতুন জনবল নিয়োগ না করে মৎস্য অধিদপ্তরের নিজস্ব জনবল ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের স্থাপিত প্রদর্শনীগুলোর বর্তমান অবস্থা ডিপিপিতে উল্লেখ করতে হবে এবং পুনর্গঠন শেষে পরিকল্পনা কমিশনে পুনরায় জমা দিতে হবে।
সরকার মৎস্য খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ৭৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০০৯-২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পের দুটি পর্যায় ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, তবে সেই পর্যায়ে স্থাপিত প্রদর্শনীগুলোর টেকসই কার্যকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ডিপিপিতে উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া পূর্ববর্তী পর্যায়ের প্রদত্ত মৎস্য প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে জনপ্রিয় হয়নি বলে আইএমইডির প্রতিনিধি জানান।
আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে এবং প্রকল্পে নতুন জনবল নিয়োগের পরিবর্তে মৎস্য অধিদপ্তরের নিজস্ব জনবল ব্যবহার করা হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রদর্শনীগুলোর বর্তমান অবস্থা ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্পটি পুনরায় পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (পরিকল্পনা) মো. সাহেদ আলী বলেন, দেশে মাছের চাহিদা বাড়াতে এ প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও মাছ চাষিদের স্বাবলম্বী করে তুলবে। এর আগেও একই ধরনের দুটি প্রকল্প অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে শেষ হয়েছে। ওই প্রকল্পে আমাদের হেক্টর প্রতি লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৩.৫ মেট্রিক টন, সেখানে ৫ মেট্রিক টন করে মাছ উৎপাদন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্পের অধীন ২৫০ উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষকদের মাছ চাষে নানা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হবে। এবারের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এখান থেকে সরাসরি লাভবান হবে দেড় থেকে ২ লাখ খামারি।
সাহেদ আলী বলেন, এখন আমাদের জনপ্রতি প্রতিদিনের চাহিদা ৬২ গ্রাম, আমরা পাচ্ছি ৬৮ গ্রাম। বর্তমানে সারা দেশের চাহিদা ৪৮ লাখ মেট্রিক টন। এখন উৎপাদন চাহিদা ৪৯.১৫ লাখ মেট্রিক টন, যা চাহিদার চেয়ে ১.১৫ মেট্রিক টন বেশি। ২০৩০ সাল নাগাদ মাছের চাহিদা পরিকল্পনা করা হয়েছে ৬৫ লাখ মেট্রিক টন, সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। জলাশয় কমে যাওয়ায় আগামীতে লক্ষ্যপূরণ করতে প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে উৎপাদন বাড়লেও মাছের দাম না কমার অন্যতম কারণ খাদ্য ও শ্রমিকদের খরচ বেড়ে যাওয়া।