ঢাকা ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মাঠে সক্রিয় হচ্ছে আ.লীগ!

মহিউদ্দিন তুষার
  • আপডেট সময় : ১৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত। তবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কারণে দলটির বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ জমতে থাকে। অবশেষে রাজনৈতিক সহিংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংসের অভিযোগে দলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সরকারের যুক্তি ছিল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। যদিও দলটির সমর্থকদের মতে, এটি ছিল একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দেশের রাজপথে নতুন এক চিত্র ফুটে উঠেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ আবারও মাঠে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে দমন-পীড়ন, সাংগঠনিক ভাঙন ও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে দলটির নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক ও শঙ্কা। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে স্থানীয় পর্যায়ে গোপন বৈঠক থেকে প্রকাশ্য কর্মসূচি পর্যন্ত আয়োজন করা হচ্ছে। ছোট ছোট মিছিল, মানববন্ধন, এমনকি সামাজিক কর্মসূচির আড়ালে সাংগঠনিক সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের মিছিলের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় তারা ককটেল ফাটিয়ে পালাতে চাইলেও ছয়জনকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার সকালে শিশু মেলার সামনে এ ঘটনা ঘটে। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আনুমানিক সকাল ৮টা ১০ মিনিটে দিকে শিশু মেলার সামনে হঠাৎ কিছু লোকজনকে জড়ো হতে দেখা যায়। তখন পুলিশ তাদের জড়ো হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে, দেহতল্লাশির একপর্যায়ে সেখানে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায় তারা। পরে পুলিশ ধ্বস্তাধ্বস্তি করে ছয়জনকে আটক করে। এ ছয়জনকে ছাড়িয়ে নিতে আরেক প্রান্ত থেকে ৮-১০টা মোটরসাইকেল এগিয়ে এসে আরও একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। একই দিনে ভোরে মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করার চেষ্টা করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গত রোববার রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান । এর আগের দিন শনিবার রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিল করায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ১১ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। তার আগের দিন শুক্রবার শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বাংলামোটর, উত্তরা ও মিরপুরে মিছিল করে দলটি। এর পরদিন শনিবার আগারগাঁওয়ে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। একই দিন সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে বড় আকারের বিক্ষোভ মিছিল করেছে যুবলীগ। শনিবার রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডের রাপা প্লাজার সামনে থেকে ৩২ নম্বর সড়কের দিকে মিছিল হয়েছে। এ ঘটনায় পরে দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
পতালক আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, দীর্ঘদিন নিক্রিয় থাকলে দলটির ভিত্তি ভেঙে পড়বে। তাই কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দলকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশে নতুন রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে চাইছে। বিভিন্ন অঞ্চলে দলের দীর্ঘদিনের ভোট ব্যাংক ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। নেতারা আশঙ্কা করছেন, নিক্রিয় থাকলে সমর্থকরা অন্য দলে চলে যাবে। এছাড়া বহির্বিশ্বে নিজেদের প্রভাব দেখাতে মাঠে সক্রিয়তা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।
একাধিক নেতা জানান, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলা পর্যায়ে নতুন করে কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, দরিদ্রদের সহায়তা প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে মাঠে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে প্রচার চালানো হচ্ছে। অনেক তরুণকে মাঠে আনার চেষ্টা চলছে। এসব কর্মকান্ডে প্রবাস থেকে অর্থ ও কৌশলগত সহায়তা পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আওয়ামী লীগের এসব কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিষিদ্ধ দল কোনোভাবেই বৈধ রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না। তবে বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, মাঠের সক্রিয়তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কিছু এলাকায় পুলিশের সঙ্গে দলীয় কর্মীদের মুখোমুখি অবস্থানের ঘটনাও ঘটছে। এতে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংঘাত আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। একাংশ মনে করছে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দলের মাঠে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। অন্যদিকে অনেকেই বলছেন, আওয়ামী লীগ অতীতে ক্ষমতায় থেকে যেসব অনিয়ম ও গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকান্ড করেছে, তার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া তাদের মাঠে নামা গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, আওয়ামী লীগের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিশ্বাসযোগ্যতা পুনর্গঠন। ৫ আগস্টের পর তারা যদি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি উপস্থাপন করতে না পারে, তবে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আওয়ামী লীগের মাঠে সক্রিয় হওয়া দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। একদিকে সরকার আরও কঠোর অবস্থান নেবে, অন্যদিকে বিরোধী শক্তিগুলোর সমীকরণে পরিবর্তন আসতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাঠে সক্রিয় হচ্ছে আ.লীগ!

আপডেট সময় :

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত। তবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কারণে দলটির বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ জমতে থাকে। অবশেষে রাজনৈতিক সহিংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংসের অভিযোগে দলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সরকারের যুক্তি ছিল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। যদিও দলটির সমর্থকদের মতে, এটি ছিল একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দেশের রাজপথে নতুন এক চিত্র ফুটে উঠেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ আবারও মাঠে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে দমন-পীড়ন, সাংগঠনিক ভাঙন ও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে দলটির নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক ও শঙ্কা। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে স্থানীয় পর্যায়ে গোপন বৈঠক থেকে প্রকাশ্য কর্মসূচি পর্যন্ত আয়োজন করা হচ্ছে। ছোট ছোট মিছিল, মানববন্ধন, এমনকি সামাজিক কর্মসূচির আড়ালে সাংগঠনিক সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের মিছিলের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় তারা ককটেল ফাটিয়ে পালাতে চাইলেও ছয়জনকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার সকালে শিশু মেলার সামনে এ ঘটনা ঘটে। শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আনুমানিক সকাল ৮টা ১০ মিনিটে দিকে শিশু মেলার সামনে হঠাৎ কিছু লোকজনকে জড়ো হতে দেখা যায়। তখন পুলিশ তাদের জড়ো হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে, দেহতল্লাশির একপর্যায়ে সেখানে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায় তারা। পরে পুলিশ ধ্বস্তাধ্বস্তি করে ছয়জনকে আটক করে। এ ছয়জনকে ছাড়িয়ে নিতে আরেক প্রান্ত থেকে ৮-১০টা মোটরসাইকেল এগিয়ে এসে আরও একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। একই দিনে ভোরে মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করার চেষ্টা করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গত রোববার রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান । এর আগের দিন শনিবার রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিল করায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ১১ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। তার আগের দিন শুক্রবার শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বাংলামোটর, উত্তরা ও মিরপুরে মিছিল করে দলটি। এর পরদিন শনিবার আগারগাঁওয়ে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। একই দিন সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে বড় আকারের বিক্ষোভ মিছিল করেছে যুবলীগ। শনিবার রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডের রাপা প্লাজার সামনে থেকে ৩২ নম্বর সড়কের দিকে মিছিল হয়েছে। এ ঘটনায় পরে দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
পতালক আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, দীর্ঘদিন নিক্রিয় থাকলে দলটির ভিত্তি ভেঙে পড়বে। তাই কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দলকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশে নতুন রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে চাইছে। বিভিন্ন অঞ্চলে দলের দীর্ঘদিনের ভোট ব্যাংক ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। নেতারা আশঙ্কা করছেন, নিক্রিয় থাকলে সমর্থকরা অন্য দলে চলে যাবে। এছাড়া বহির্বিশ্বে নিজেদের প্রভাব দেখাতে মাঠে সক্রিয়তা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।
একাধিক নেতা জানান, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলা পর্যায়ে নতুন করে কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, দরিদ্রদের সহায়তা প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে মাঠে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে প্রচার চালানো হচ্ছে। অনেক তরুণকে মাঠে আনার চেষ্টা চলছে। এসব কর্মকান্ডে প্রবাস থেকে অর্থ ও কৌশলগত সহায়তা পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আওয়ামী লীগের এসব কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিষিদ্ধ দল কোনোভাবেই বৈধ রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না। তবে বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, মাঠের সক্রিয়তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কিছু এলাকায় পুলিশের সঙ্গে দলীয় কর্মীদের মুখোমুখি অবস্থানের ঘটনাও ঘটছে। এতে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংঘাত আরও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। একাংশ মনে করছে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দলের মাঠে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। অন্যদিকে অনেকেই বলছেন, আওয়ামী লীগ অতীতে ক্ষমতায় থেকে যেসব অনিয়ম ও গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকান্ড করেছে, তার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া তাদের মাঠে নামা গ্রহণযোগ্য নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, আওয়ামী লীগের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিশ্বাসযোগ্যতা পুনর্গঠন। ৫ আগস্টের পর তারা যদি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি উপস্থাপন করতে না পারে, তবে পুনরায় সক্রিয় হওয়ার এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আওয়ামী লীগের মাঠে সক্রিয় হওয়া দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। একদিকে সরকার আরও কঠোর অবস্থান নেবে, অন্যদিকে বিরোধী শক্তিগুলোর সমীকরণে পরিবর্তন আসতে পারে।