মাদারীপুরে জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সরকারি হাসপাতাল গুলো

- আপডেট সময় : ৬৮ বার পড়া হয়েছে
কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন ভবন। সেই সাথে রয়েছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি। অথচ, জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালে আড়াইশো’র বেশি জনবল সংকটে হয় না সব ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা। মুমূর্ষু রোগীদের দায়সারা সেবা দিয়ে পাঠানো হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে মাঝপথে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। দীর্ঘদিনেও পাল্টায়নি সরকারি হাসপাতালগুলোর এমন চিত্র। সিভিল সার্জণ বলছেন, জনবল নিয়োগের ব্যাপারে চলমান রয়েছে কার্যক্রম।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত দেড় বছরের ছেলে ইয়াকুবকে নিয়ে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা ১০০ শয্যা হাসপাতালে আসেন যাদুয়ারচর গ্রামের বাসিন্দা মা খাদিজা আক্তার। চিকিৎসক ভর্তি করিয়ে দিলেও ২৪ ঘন্টায়ও পাননি কাঙ্খিত সেবা। পরে বাধ্য হয়ে শিশুকে নিয়ে চলে যান ঢাকা মেডিকেলে। অথচ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্প্রতি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণ করা এখানে। গুয়াতলা মৌজায় চকচকে ভবন দাঁড়িয়ে থাকলেও এখানে নেই মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা।
একই অবস্থা ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালেরও। জনবল সংকটে এখানে থাকা আইসিইউ, সিটিস্ক্যান মেশিন, ডিজিটাল এক্সরে, আল্টাসনোগ্রাম মেশিনসহ অধিকাংশই যন্ত্রপাতি থাকে অলস পড়ে। আর মুমূর্ষু রোগীদের দায়সারা সেবা দিয়ে পাঠানো হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে মাঝপথে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকেই।
জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কিছু সংখ্যক চিকিৎসক থাকলেও যোগদানের পরপরই অনেকেই অন্যত্র চলে যাচ্ছেন তারা। তাই সেইপদে নতুন কাউকে পদায়নও করা যাচ্ছে না। অবশ্য, জনবল সংকটের ঘাটতি পূরনে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান জেলার সিভিল সার্জণ ডা. শরিফুল আবেদীন কমল।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, জেলা সদর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হন প্রায় ৫শ’ রোগী। বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিতে থাকেন কয়েক হাজার মানুষ। একের পর এক নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন ভবন। বাড়ানো হচ্ছে হাসপাতালের শয্যাও। অথচ নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয়নি কোন জনবল। এতে কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়া ক্ষুব্ধ জেলাবাসী।
২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল, ৫০ শয্যা করে তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২০ শয্যার কবিরাজপুর হাসপাতালে মোট পদ: ৮৬১টি, মঞ্জুরকৃত পদ: ৫৯৪টি, শূর্ণ্য পদের সংখ্যা: ২৬৮টি
মাদারীপুর জেলা সদর হাসাপাতাল: মোট ১৬৪ জনবলের বিপরীতে আছে ১৩৫ জন। খালি পদের সংখ্যা ৩০টি। এরমধ্যে শূর্ণ্য রয়েছে ৭জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ।
কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: মোট ২২০ জনবলের বিপরীতে আছে ১৪৪ জন। খালি পদের সংখ্যা ৭৬টি। এরমধ্যে শূর্ণ্য রয়েছে ১৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ।
রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: মোট ১৯৯ জনবলের বিপরীতে আছে ১৪১ জন। খালি পদের সংখ্যা ৫৮টি। এরমধ্যে শূর্ণ্য রয়েছে ০৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: মোট ২৫৩ জনবলের বিপরীতে আছে ১৬৭ জন। খালি পদের সংখ্যা ৮৬টি। এরমধ্যে শূর্ণ্য রয়েছে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ।
২০ শয্যাবিশিষ্ট কবিরাজপুর হাসপাতাল, রাজৈর: মোট ২৫ জনবলের বিপরীতে আছে ৭ জন। খালি পদের সংখ্যা ১৬টি। এরমধ্যে শূর্ণ্য রয়েছে ০৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ।