মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিবকে জখমের ঘটনায় মামলা
																
								
							
                                - আপডেট সময় : ৬০ বার পড়া হয়েছে
 
মাদারীপুরে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহকে (২৩) কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চার নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার ছাত্রনেতাকে আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ মাতুব্বর বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে ৯ জনকে এজাহারভুক্ত ও ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার প্রায় একদিন চলে গেলেও পুলিশ অভিযুক্ত একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশ বলছে, আসামিদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে অভিযান পরিচালনা করছে। আসামিরা ঘটনার পরেই গা ঢাকা দিয়ে পালিয়েছে। এদিকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বুধবার মধ্যরাতে মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলায় এনসিপির কমিটি স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের ভ‚ইয়া কমিউটিনি সেন্টারে এনসিপির সদর উপজেলা কমিটির আয়োজনে কর্মিসভায় কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহকে কুপিয়ে জখম করা হয়। গুরতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় চিকিৎসক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহকে হামলার ঘটনায় এনসিপির জেলা কমিটি যুগ্ম সমন্বয়কারী হাসিবুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি ৮ জন হলেন এনসিপির জেলা কমিটির ২ নম্বর সদস্য মো. আবদুল রহিম, ৫ নম্বর সদস্য আবদুল্লাহ আদিল (টুটুল), ৬ নম্বর সদস্য রাতুল হাওলাদার ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মুজিবুল্লাহ সরদার। এ ছাড়াও জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রোমান শেখ, জুলাই আন্দোলনে আহত গুলিবিদ্ধ যোদ্ধা ইসমাইল, আরাফাত হোসেন ও মেহেদী হাসানকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, কর্মিসভা চলাকালীন সময় অভিযুক্ত আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অর্তকিত হামলা চালায়। এতে গুরতর জখম হয় জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহ।
মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের অভিযোগ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভ‚মিকা রাখার পরেই এনসিপির সদর উপজেলা কমিটিতে তাদের বাদ দেওয়া হয়। বুধবারের কর্মিসভায় পদবঞ্চিত কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৭ জনই কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।
মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ হাসিবুল্লাহ বলেন, ‘কর্মিসভায় আমি ছিলাম না। তবুও আমি প্রধান আসামি। আরও ৮ জন আসামি যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন তিনজনও আসামি। এমনকি অভ্যুত্থানে শহীদ নাজমুল হত্যা মামলার বাদী মুজিবুল্লাহকেও আসামি করা হয়েছে। রাজনীতিতে নোঙরামির একটা সীমা থাকা দরকার। মামলা দিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ষড়যন্ত্র করছে একটি চক্র। পুলিশের কাছে আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি।’
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আকাশ মাতুব্বর বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এনসিপিতে ঢুকে পড়েছে। আমাদের হত্যা ও নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্য নিয়ে একটি পক্ষ কাজ করছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে হাসিবুল্লাহ। মাসুমের ওপর হামলা তার নেতৃত্বেই হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চেয়ে মামলা করেছি। আসামিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিতের দাবি জানাই।
জানতে চাইলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, ‘হামলার ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, দ্রæতই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ ওসি আরও বলেন, ‘কমিটি ও অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর জেরেই গতকাল মাসুম বিল্লাহ ওপর হামলা চালায় একটি পক্ষ। যারা হামলা করেছে ও আসামি তারা এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ গুরত্ব সহকারে তদন্ত করছে।’
																			















