মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের কোলজুড়ে এলো ফুটফুটে কন্যাসন্তান

- আপডেট সময় : ১৭ বার পড়া হয়েছে
খুলনার পাইকগাছায় পৌরসদরের প্রধান সড়কের পাশে এক দোকানের সিঁড়িতে জন্ম নিলো এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। সন্তানের মা একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী, যিনি দীর্ঘ দিন ধরেই রাস্তায় দিন কাটাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডাক্তার বা ধাত্রী ছাড়াই ভূমিষ্ঠ হয় ২.৬ কেজি ওজনের এই শিশুটি। তবে এই ঘটনার পর সমাজের মানবিকতা ও একই সাথে নিষ্ঠুরতার এক ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটে পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডে, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের সামনে, এস এম সাউন্ড-এর দোকানের সিঁড়িতে। প্রসব বেদনায় ছটফট করা অবস্থায় কেউ পাশে না থাকলেও, পরে দোকানদার লাবু ও পথচারী ২নং কপিলমুনি ইউপির শ্যামনগর গ্রামের মানবিক পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হালিম সানা এগিয়ে আসেন। মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আব্দুল হালিম সানা তাৎক্ষণিকভাবে নবজাতক ও তার মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে পাইকগাছা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক শাকিলা আফরোজ জানিয়েছেন, মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন। তবে, মানসিক ভারসাম্যহীন মা শিশুটিকে বারবার চেপে ধরার চেষ্টা করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও শিশুকে আলাদা করে রেখেছেন।
এই নবজাতকের পিতৃপরিচয় অজানা। মানুষরূপী কিছু পশুর আক্রমণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া এই নারীর ঠিকানা বা পরিচয় সম্পর্কেও কেউ জানে না। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। হাসপাতালে গিয়ে দেখে শুনে কী করা যায়, ইউএনও স্যারের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সবাই মিলে চেষ্টা করুন তার পরিচয়টা জানা যায় কিনা। আর সেটা সম্ভব না হলে সরকারিভাবে যা যা করা যায় তার জন্য সমাজসেবা অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
এদিকে, পিতৃপরিচয়হীন এই শিশু ও মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হালিম সানা উপজেলাব্যাপী প্রশংসায় ভাসছেন। এই ঘটনা একদিকে যেমন সমাজে বিদ্যমান অমানবিকতার চিত্র তুলে ধরছে, তেমনি অন্যদিকে কিছু মানুষের মানবিকতা ও সহানুভূতির মাধ্যমে আশার আলোও দেখাচ্ছে। এখন দেখার পালা, এই মা ও শিশুর ভবিষ্যৎ কিভাবে নির্ধারিত হয়।