ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কোটা আন্দোলনকারী নিহত

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:০০:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪ ১১৫ বার পড়া হয়েছে

নিহত আবু সাঈদ

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

রংপুরে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে কোটা সংস্কারের এক আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম আবু সাঈদ (২২)। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমর্থক।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ, লাঠিচার্জে কমপক্ষে ১০ সাংবাদিক পুলিশসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান আসিফ আল মতিনও বিষয়টি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ২টায় রংপুর নগরীর লালবাগ থেকে শুরু করে মডার্ন মোড়, পার্কের মোড়সহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এই সংঘর্ষ শুরু হয়। যা এখনও চলমান রয়েছে। প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাব্যাপী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রংপুর জিলা স্কুল থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার নিয়ে মিছিল বের করেন। এর আগে নগরীর সব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সেখানে সমবেত হন। মিছিলটি পুলিশ লাইন্সের কাছে এলে পুলিশ মিছিলকারীদের গতিরোধ করে।

এ সময় লাঠিচার্জ করে। কিন্তু পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিলকারীরা নগরীর জাহাজ কোম্পানি এলাকায় এসে নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে আধা ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন।

পরে শিক্ষার্থীরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ আবারো তাদের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে চার কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে নগরীর লালবাগ এলাকায় পৌঁছে সেখানে কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

পরে মিছিলকারীরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি এলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় আন্দোলনকারীরা লালবাগ থেকে পার্কের মোড় এবং মর্ডান মোড় পুরো চার কিলোমিটার এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে নিবৃত করার চেষ্টা করে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সাঈদ লুটিয়ে পড়েন।

আবু সাঈদকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ তার মরদেহ হাসপাতালের ডেড হাউজে নিয়ে রেখেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ২৫ জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

আন্দোলনকারী ও কোটার পক্ষে থাকা সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা লাঠি, গাছের ডালসহ বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করছে।

আন্দোলনকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন অভিযোগ করেছেন, ছাত্রলীগ বহিরাগতদের এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তার অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে বেরোবির শিক্ষার্থী আবু সাইদ নিহত হয়েছেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কোটা আন্দোলনকারী নিহত

আপডেট সময় : ০৫:০০:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪

 

রংপুরে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে কোটা সংস্কারের এক আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম আবু সাঈদ (২২)। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমর্থক।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ, লাঠিচার্জে কমপক্ষে ১০ সাংবাদিক পুলিশসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান আসিফ আল মতিনও বিষয়টি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ২টায় রংপুর নগরীর লালবাগ থেকে শুরু করে মডার্ন মোড়, পার্কের মোড়সহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এই সংঘর্ষ শুরু হয়। যা এখনও চলমান রয়েছে। প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাব্যাপী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রংপুর জিলা স্কুল থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার নিয়ে মিছিল বের করেন। এর আগে নগরীর সব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সেখানে সমবেত হন। মিছিলটি পুলিশ লাইন্সের কাছে এলে পুলিশ মিছিলকারীদের গতিরোধ করে।

এ সময় লাঠিচার্জ করে। কিন্তু পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিলকারীরা নগরীর জাহাজ কোম্পানি এলাকায় এসে নগরীর প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে আধা ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন।

পরে শিক্ষার্থীরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ আবারো তাদের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে চার কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করে নগরীর লালবাগ এলাকায় পৌঁছে সেখানে কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

পরে মিছিলকারীরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি এলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় আন্দোলনকারীরা লালবাগ থেকে পার্কের মোড় এবং মর্ডান মোড় পুরো চার কিলোমিটার এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে নিবৃত করার চেষ্টা করে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সাঈদ লুটিয়ে পড়েন।

আবু সাঈদকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ তার মরদেহ হাসপাতালের ডেড হাউজে নিয়ে রেখেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ২৫ জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

আন্দোলনকারী ও কোটার পক্ষে থাকা সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা লাঠি, গাছের ডালসহ বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করছে।

আন্দোলনকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন অভিযোগ করেছেন, ছাত্রলীগ বহিরাগতদের এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তার অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে বেরোবির শিক্ষার্থী আবু সাইদ নিহত হয়েছেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিলো।