রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকা ও স্মার্ট কার্ড বাতিলে নির্বাচন কমিশনে আবেদন
- আপডেট সময় : ০৮:২৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২৬৫ বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজারে ৩৪ আশ্রয় শিবিরে থাকা মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ধীরে ধীরে বাংলাদেশের ভোটার ও এনআইডি স্মার্ট কার্ড পর্যন্ত পেয়ে যাচ্ছে। দিনে দিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিষফোঁড়া মানুষ চিন্তায় পিছিয়ে পড়া এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট অফিস এবং প্রশাসনের কিছু সংখ্যক অসাধু কর্মীর সহযোগিতায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিকের অধিকার পেয়ে যাচ্ছে। দিন দিন বিষয় ভয়ানক রূপ নিতে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। তারা বাধ্য ভিনদেশিদের এই অপতৎপরতা বন্ধ করতে অবশেষে নির্বাচন কমিশন বরাবরে আবেন করতে বাধ্য হয়েছেন।
আবেদনে রোহিঙ্গাদের নামে ইস্যুকৃত স্মার্ট কার্ড বাতিল এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আবেদন জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মহা পরিচালক জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনু-বিভাগ ঢাকা বরাবরে পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কক্সবাজার স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজের করা আবেদনের অনুলিপি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, গোয়েন্দা সংস্থার বরাবরেও পাঠানো হয়েছে।
লিখিত অভিযোগটি গত ৩০ মার্চ মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনু-বিভাগ, সচিব নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার দপ্তরে অভিযোগ গুলো গ্রহণ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার ২নং গর্জনিয়া ইউনিয়নের ঘোষনার পাড়া এলাকায় বাংলাদেশী ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও স্মার্ট কার্ড অর্জন করেছেন একই পরিবারের ৫ রোহিঙ্গা নাগরিক।
এই ৫ জনের পরিচয় হচ্ছে, নুরুল হোসেন পিতা ছৈয়দ আকবর, মাতা দিলন বাহার, স্ত্রী গুল বাহার, জন্মতারিখ ২৫/১১/১৯৫৭ ইংরেজি। আই, ডি নং ১১১৯০০৮৭২০ ফরম নং ৭৭২৪১৩ মোস্তাক আহমদ পিতা নুর হোছন মাতা গোল বাহার বেগম জন্মতারিখ ১৬/০৩/১৯৮৬ ইংরেজি আইডি নং ৬৮৮৪৫৭৭৫৩৪ ফরম নং ৭৭২৪১১।
নুরুল আবছার পিতা নুর হোসেন মাতা গুল বাহার বেগম,জন্মতারিখ ১৬/০৯/১৯৯৫ ইংরেজি, আইডি নং ৭৮০৫৯৯৯৮৫৮, ফরম নং ৪৬৪৬৩৪৪৩,
নুরুল বশর পিতা নুর হোছন মাতা গোলবাহার বেগম,জন্মতারিখ ৬/৮/১৯৮১ ইংরেজি আইডি নং ৭৩১৬৯৭৮১৪৮,ফরম নং ৭৭২৪১২,
গুল বাহার বেগম পিতা ইউসুপ আলী মাতা আমিনা খাতুন জন্মতারিখ ৯/১০/১৯৬৩ ইংরেজি, আইডি নং ৩৭৪৭০৪৭০৩৭।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের নিয়ে রোহিঙ্গা নুরুল আবছার বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছে। তারা পুরো গর্জনিয়া ইউনিয়ন তথা থোয়াঙ্গা কাটা, থিমছড়ি, বড়বিল, নারিচবনিয়া, জুমছড়ি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আবছার বাহিনী।
সম্প্রতি গর্জনিয়া ইউনিয়নের ঘোষনার পাড়া এলাকায় রোহিঙ্গা নুরুল আবছারের আস্তানায় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ( র্যাব) অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে রোহিঙ্গা আবছার বাহিনীর প্রধান আবছার পালিয়ে গেলেও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু তালেব বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও নগদ অর্থসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আবু তালেব এর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান নুরুল আবছারসহ বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। থিমছড়ি এলাকার একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গর্জনিয়ায় চোরাচালান, ডাকাতি, খুন অপহরণসহ নানা অপরাধ বাড়ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর সচেতন মহলের পক্ষে দায়েরকারী মোঃ আইয়ুব ও ইকবাল জানান, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। দিন দিন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের উৎপাত বেড়েই চলেছে।
গর্জনিয়া ইউনিয়নে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নুরুল আবছার, নুর হোছন গংদের ছত্রছায়ায় নিত্যনতুন রোহিঙ্গারা এসে পাহাড়ি জমি জবরদখল করে বসতি গড়ে তুলছে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নুরুল আবছার ও একই পরিবারের ৫ রোহিঙ্গা
সদস্যকে বাংলাদেশী ভোটার তালিকা ও স্মার্ট কার্ড বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানানো হয়েছে।