সুন্দরবন সংলগ্ন নদীর চর দখলে নিয়ে রিসোর্ট ও ট্যুরিস্ট পয়েন্ট গড়ে তোলার অভিযোগ

- আপডেট সময় : ৪০ বার পড়া হয়েছে
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে এ অ্যান্ড এন ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস নামে একটি প্রতিষ্ঠান সুন্দরবনের পাশে অনুমোদনহীন জায়গায় রিসোর্ট তৈরি করছে
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে নদীর চর দখলে নিয়ে রিসোর্ট ও ট্যুরিস্ট পয়েন্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। চরের গাছ কেটে সাবাড়ের পর নদী-খাল ভরাট করে চলাচলের রাস্তাসহ পর্যটকদের রাত্রিযাপনের উপযোগী আবাসস্থল তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া চারপাশে বাঁধ বানিয়ে চরের মধ্যে লেকসদৃশ জলাধার বানানোর পাশাপাশি রাস্তার শেষপ্রান্তে জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মৌখালী এলাকায় চলছে এ ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খুলনার জনৈক মাহাবুব আলম প্রায় আট মাস আগে থেকে মালঞ্চ নদীর তীরে ‘এ অ্যান্ড এন ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস’ নামে রিসোর্ট ও ট্যুরিষ্ট পয়েন্টটি নির্মাণ করেছেন। এর আগে বাঁধ প্রশস্ত এবং উঁচু করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। পরবর্তী সময়ে বহিরাগত এক ব্যক্তি (মাহাবুব আলম) এসে প্রভাবশালী ট্যুরিষ্ট ব্যবসায়ী পরিচয়ে ডাম্পিং করা বাঁধের ওপর স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, সুন্দরবন থেকে ভেসে আসা বিভিন্ন গাছের ফুল ও ফল জমে চরে কৃত্রিম বনভূমি সৃষ্টি হয়। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি সামাজিক বনায়নের সঙ্গে জড়িতরা কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট এসব বনভূমি সংরক্ষণে
নানা উদ্যোগ নেয়। অথচ চরে জন্মানো গাছ কেটে সাবাড়ের পাশাপাশি শুধু ব্যবসা করতেই সেখানে রিসোর্ট সেন্টার ও ট্যুরিস্ট পয়েন্ট গড়ে তোলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ অ্যান্ড এন ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরসের মালিক মাহাবুব আলম দাবি করেন, তিনি এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়েছেন।
শুধু এই রিসোর্টই নয়, সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ, বুড়িগোয়ালিনী ও হরিনগর এলাকায় একের পর এক রিসোর্ট ও কলকারখানা গড়ে উঠছে। সেগুলোর সংখ্যাও কম নয়। কমপক্ষে ২৫টি। এগুলোর কোনোটিরই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নেই। আরও কয়েকটির নির্মাণকাজ চলছে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (শ্যামনগর পওর উপ-বিভাগ) ইমরান সরদার বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে প্রায় ছয় মাস আগে স্থাপনার নির্মাণকাজ বন্ধে তাদের চিঠি দেওয়া হয়। পাউবোর জায়গায় কারও কোনো রিসোর্ট সেন্টার বা ট্যুরিস্ট পয়েন্ট করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। দ্রুতই এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনী খাতুন বলেন, নদী খাল দখল করে কোন ভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করতে দেয়া হবে না,আমরা দ্রুত ওটা উচ্ছেদের ব্যবস্থা করছি।