ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ১৫ বছরে অন্যায় কাজের জন্য পুলিশ দুঃখিত ও লজ্জিত: আইজিপি Logo রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জনের Logo সমমনা দলের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের বৈঠক Logo জাতীয় ইমাম পরিষদের পৌর শাখার সভাপতি আশরাফুল-সেক্রেটারি কাদির Logo শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ভারতীয় মদ সহ গ্রেফতার-১ Logo আওয়ামী স্বৈরশাসনের সময় দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে :  ড্যাব মহাসচিব Logo বিনিয়োগকারী নয়, পুঁজিবাজারে অস্থিরতার নেপথ্যে প্লেয়ার ও রেগুলেটররা : অর্থ উপদেষ্টা Logo ঢাকায় বসে কোনো পরিকল্পনা করবে না: ফাওজুল কবির Logo মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন, বাল্কহেডসহ আটক ৯ Logo বান্দরবানে মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কর্মশালা

স্বজনপ্রীতির অনন্য উচ্চতার স্বাক্ষর রাখলেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৭:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮৯ বার পড়া হয়েছে

সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বোন নূরন নাহার আনোয়ার, তার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। অথচ তারা দুস্থ ও অসহায়। দুস্থ তালিকায় রয়েছেন নূরন নাহারের মেয়ে জামাই মোহাম্মদ জাভেদ চৌধুরীও। তাদের ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ব্যক্তি পর্যায়ে বিশেষ অনুদানপ্রাপ্ত ভাগ্যবান ব্যক্তিরা হচ্ছেন, সাবেক হাসিনা সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বোন, বোনের জামাই এবং ভাগ্নি জামাই।

এখানেই শেষ নয়, নুরুজ্জামান আহমেদের স্ত্রীর ভাতিজা গোলাম মোস্তফা, গোলাম ফারুক, আবু সাঈদ খান, আবু জাফর খানসহ তাঁদের পরিবারের ১৬ ব্যক্তির নাম রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকায় কালীগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনশ্বর গ্রামে উল্লেখিত ব্যক্তিরা মোট ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা পেয়েছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও গোলাম ফারুকদের পরিবারের ১০ সদস্য ফের সহায়তার টাকা পান।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ। এই প্রতিষ্ঠান দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের চিকিৎসা, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ ও গৃহ মেরামত বাবদ সহায়তা দেয়। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লালমনিরহাট জেলার ১ হাজার ৬৩১ জন ব্যক্তিকে ২ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার টাকা বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়েছে।

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ২০১৬ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় বাদ পড়েন। ২০১৪ সাল থেকে লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

গোলাম ফারুক অবশ্য তালিকায় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামের বিষয়টি জানেন না বলে মুঠোফোনে দাবি করেছেন। তবে কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সদ্য বিদায়ী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক তাদের টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়নের সদস্য রাকিবুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দরিদ্র মানুষকে বঞ্চিত করে তার আত্মীয়স্বজনকে তুষ্ট করেছেন।

আর নূরন নাহার আনোয়ার ও জাভেদ চৌধুরী সপরিবার কানাডায় থাকায় হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নূরন নাহারের ছোট ভাই কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ সোমবার একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, তারা (বোন ও ভাগনি জামাই) ভালো মানুষ। অন্য কেউ হয়তো তাদের নাম ব্যবহার করেছেন।

তালিকায় সাবেক মন্ত্রীর এপিএসের শ্বশুর-শাশুড়ি ও শ্যালক

কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তালেব আলবানী সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) শ্বশুর। আবু তালেবসহ তার স্ত্রী মুসারত রেহেনা ও ছেলে ফুয়াদ হাসানের নাম আছে ২০২১-২২ অর্থবছরের অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকায়। জানতে চাইলে আবু তালেব বলেন, তাদের নাম অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারে।

তবে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা গ্রামের আশিক বাবু ভিন্ন বক্তব্য দেন। তিনি এপিএস মিজানুর রহমানের চাচাতো ভাই। তার নামও আছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনুপ্রাপ্তদের তালিকায়। আশিকের দাবি, এপিএস মিজান তার কাছ থেকে একটি মাদ্রাসার নিয়োগ বাবদ ৭ লাখ টাকা নেন। কিন্তু চাকরি না হলে অনুদানের দুটি চেক দিয়ে ১ লাখ টাকা ফেরত দেন।

আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের দেলজার রহমানের নামে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও তিনি সেই টাকা পাননি। দেলজারের দাবি, এপিএস মিজানুরের মামা সেকেন্দার আলী তাকে দিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে হিসাব খুলে নেন। কিন্তু পরে টাকা পাননি। দেলজারের মতো অন্তত ২০ জন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তালিকায় তাদের নাম থাকলেও টাকা পাননি।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা আত্মগোপনে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার এপিএসের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এই অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের আরও ঘটনা রয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন মিয়ার শ্বশুর মোহাম্মদ হোসেন, তার শাশুড়ি, স্ত্রী ও স্ত্রীর চার বোন গত তিন অর্থবছরে প্রায় দুই লাখ টাকা পেয়েছেন।

যদিও লিটনের শ্বশুর কালীগঞ্জের দক্ষিণ দলগ্রামে মোহাম্মদ হোসেন একজন সচ্ছল কৃষক। দুস্থদের টাকা তার স্ত্রী কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে লিটন মিয়া বলেন, তার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় এই টাকা নেন।

কালীগঞ্জের গোপাল রায় গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ইনসানা বেগম ও তার স্বামী জেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মনজু আলী শেখ ২০২১-২২ অর্থবছরে দুবার করে মোট ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা পান। ইনসানার দাবি, তার শ্বশুর ক্যানসার রোগী হওয়ায় তারা এই টাকা পেয়েছেন। তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, দুস্থ নন, শুধু দলীয় পরিচয়ে এমন শতাধিক ব্যক্তি অনুদান পেয়েছেন।

ভুয়া মাস্টাররোলে অর্থ আত্মসাৎ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ও গরিব, অসহায় ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজকল্যাণ কমিটিকে ১ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়।

এই কমিটির সদস্যসচিব ও সাবেক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাকের (৪ সেপ্টেম্বর তিনি রংপুরের পীরগঞ্জে বদলি হয়েছেন) দাবি, ৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা দিয়ে মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার জন্য এবং ৮ লাখ টাকা ভিক্ষুক পুনর্বাসনে ব্যয় হয়েছে। বাকি বরাদ্দ গরিব ও অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

স্বজনপ্রীতির অনন্য উচ্চতার স্বাক্ষর রাখলেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৯:২৭:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

বোন নূরন নাহার আনোয়ার, তার স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। অথচ তারা দুস্থ ও অসহায়। দুস্থ তালিকায় রয়েছেন নূরন নাহারের মেয়ে জামাই মোহাম্মদ জাভেদ চৌধুরীও। তাদের ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ব্যক্তি পর্যায়ে বিশেষ অনুদানপ্রাপ্ত ভাগ্যবান ব্যক্তিরা হচ্ছেন, সাবেক হাসিনা সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বোন, বোনের জামাই এবং ভাগ্নি জামাই।

এখানেই শেষ নয়, নুরুজ্জামান আহমেদের স্ত্রীর ভাতিজা গোলাম মোস্তফা, গোলাম ফারুক, আবু সাঈদ খান, আবু জাফর খানসহ তাঁদের পরিবারের ১৬ ব্যক্তির নাম রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকায় কালীগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনশ্বর গ্রামে উল্লেখিত ব্যক্তিরা মোট ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা পেয়েছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও গোলাম ফারুকদের পরিবারের ১০ সদস্য ফের সহায়তার টাকা পান।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ। এই প্রতিষ্ঠান দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের চিকিৎসা, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ ও গৃহ মেরামত বাবদ সহায়তা দেয়। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লালমনিরহাট জেলার ১ হাজার ৬৩১ জন ব্যক্তিকে ২ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার টাকা বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়েছে।

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ২০১৬ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় বাদ পড়েন। ২০১৪ সাল থেকে লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

গোলাম ফারুক অবশ্য তালিকায় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামের বিষয়টি জানেন না বলে মুঠোফোনে দাবি করেছেন। তবে কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সদ্য বিদায়ী কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক তাদের টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়নের সদস্য রাকিবুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দরিদ্র মানুষকে বঞ্চিত করে তার আত্মীয়স্বজনকে তুষ্ট করেছেন।

আর নূরন নাহার আনোয়ার ও জাভেদ চৌধুরী সপরিবার কানাডায় থাকায় হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নূরন নাহারের ছোট ভাই কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ সোমবার একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, তারা (বোন ও ভাগনি জামাই) ভালো মানুষ। অন্য কেউ হয়তো তাদের নাম ব্যবহার করেছেন।

তালিকায় সাবেক মন্ত্রীর এপিএসের শ্বশুর-শাশুড়ি ও শ্যালক

কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তালেব আলবানী সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) শ্বশুর। আবু তালেবসহ তার স্ত্রী মুসারত রেহেনা ও ছেলে ফুয়াদ হাসানের নাম আছে ২০২১-২২ অর্থবছরের অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকায়। জানতে চাইলে আবু তালেব বলেন, তাদের নাম অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারে।

তবে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা গ্রামের আশিক বাবু ভিন্ন বক্তব্য দেন। তিনি এপিএস মিজানুর রহমানের চাচাতো ভাই। তার নামও আছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনুপ্রাপ্তদের তালিকায়। আশিকের দাবি, এপিএস মিজান তার কাছ থেকে একটি মাদ্রাসার নিয়োগ বাবদ ৭ লাখ টাকা নেন। কিন্তু চাকরি না হলে অনুদানের দুটি চেক দিয়ে ১ লাখ টাকা ফেরত দেন।

আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের দেলজার রহমানের নামে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও তিনি সেই টাকা পাননি। দেলজারের দাবি, এপিএস মিজানুরের মামা সেকেন্দার আলী তাকে দিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে হিসাব খুলে নেন। কিন্তু পরে টাকা পাননি। দেলজারের মতো অন্তত ২০ জন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তালিকায় তাদের নাম থাকলেও টাকা পাননি।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা আত্মগোপনে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার এপিএসের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এই অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের আরও ঘটনা রয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন মিয়ার শ্বশুর মোহাম্মদ হোসেন, তার শাশুড়ি, স্ত্রী ও স্ত্রীর চার বোন গত তিন অর্থবছরে প্রায় দুই লাখ টাকা পেয়েছেন।

যদিও লিটনের শ্বশুর কালীগঞ্জের দক্ষিণ দলগ্রামে মোহাম্মদ হোসেন একজন সচ্ছল কৃষক। দুস্থদের টাকা তার স্ত্রী কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে লিটন মিয়া বলেন, তার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় এই টাকা নেন।

কালীগঞ্জের গোপাল রায় গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ইনসানা বেগম ও তার স্বামী জেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মনজু আলী শেখ ২০২১-২২ অর্থবছরে দুবার করে মোট ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা পান। ইনসানার দাবি, তার শ্বশুর ক্যানসার রোগী হওয়ায় তারা এই টাকা পেয়েছেন। তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, দুস্থ নন, শুধু দলীয় পরিচয়ে এমন শতাধিক ব্যক্তি অনুদান পেয়েছেন।

ভুয়া মাস্টাররোলে অর্থ আত্মসাৎ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ও গরিব, অসহায় ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজকল্যাণ কমিটিকে ১ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়।

এই কমিটির সদস্যসচিব ও সাবেক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাকের (৪ সেপ্টেম্বর তিনি রংপুরের পীরগঞ্জে বদলি হয়েছেন) দাবি, ৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা দিয়ে মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার জন্য এবং ৮ লাখ টাকা ভিক্ষুক পুনর্বাসনে ব্যয় হয়েছে। বাকি বরাদ্দ গরিব ও অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে।