৩৪ বছর পর রায়, সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন
- আপডেট সময় : ১২:৩৩:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪ ২২৯ বার পড়া হয়েছে
১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে নিয়ে মোমেনবাগ বাসার যাবার উদ্দেশ্যে রিকশায় চেপে বসেন সগিরা মোর্শেদ। অকস্মাত কয়েকজন আগন্তুক তার পথরোধ করে দাড়ায়। এক পর্যায়ে বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়া পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ নিয়ে রাজধানী ঢাকা নয়, গোটা দেশজুড়ে চালঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। অপরাধীদের পাকড়াও করতে মাঠে নামে গোয়েন্দারা।
ক্ষমতার মসনদে স্বৈরাচার এইচ এম এরশাদ। এরশাদের মন্ত্রী সভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান। সিদ্ধেশ^রীতে তার শশুড় বাড়ি। জানা যায় মাহমুদুল হাসানের সম্বন্ধী রেজাউল হকের ছেলে মারুফ রেজা।
৩৪ বছর পর বুধবার (১৩ মার্চ) সোগেরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায়ে আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজার যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইন।
হত্যাকাণ্ডের পর পরই মারুফ রেজার নাম নিয়ে কানাঘুষা চলে আসছিলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা চাপা পড়ে যায়। সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলাটি তৎকালীন সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মামলা।
হাত বদল হয়ে অবশেষে চাঞ্চল্যকর সর্গিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার তদন্ত যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে।
২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সগিরার কাজের মেয়েকে মারধর করেন আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শাহীন। আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে বসে আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন এবং ১৫ হাজার টাকা দেন হাসান আলী। ১০ হাজার টাকা পরে দেওয়ার কথা থাকলেও তা আর দেননি।
২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়।
এরপর ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যদিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলায় ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় নিহতের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজার যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সগিরার ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন ও অপর আসামি মন্টু মোরলকে খালাস দিয়েছেন আদালত।