আউটসোর্সিংয়ের কর্মীদের জাতীয়করণের দাবি কতটুকু যৌক্তিক
- আপডেট সময় : ০৩:২০:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪ ৮৫ বার পড়া হয়েছে
আউটসোর্সিং মূলত একটি ব্যবসায়িক শব্দ, যার মানে হচ্ছে, কোন কাজ কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কর্মচারীকে দিয়ে না করিয়ে সেই কাজ বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়া নেয়া। এর সঙ্গে জাতীয়করণের কোন সম্পর্ক নেই।
এই আউটসোসিং এর মধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ করে দেয় কতিপয় কোম্পানি। তাদের নিয়োগকৃত এসব ব্যক্তি বেতন-ভাতাও মেটাবেন সংশ্লিষ্ট কোম্পানি।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানন্ত্রী ভারতে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ৮ আগস্ট রাতে বঙ্গভবনে শপথ নেন, নোবেল জীয় ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা।
আর পর থেকেই আউটসোসিংয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা তাদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে মঠে নামে। কিন্তু বিগত ১৫ বছর তারা এমনি আন্দোলন করেননি কেন? এমন প্রশ্নে উত্তরে তারা বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ছিলাম।
গণতান্ত্রিক সরকার আমলে কেন নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তাদের উত্তর আমরা কোন কথা বলতে পারিনি। চাকরী চলে যাবার ভয় ছিলো। নির্যাতনের হুমঙ্কি ছিলো।
একটা লক্ষনিয় বিষয় হচ্ছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেবার পর পরই চাকরী জাতীয়করণের দাবি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থায় আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। অথচ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিলো টানা বছর।
তখন এসব ব্যক্তিরা দাবি নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মধ্যেই সীমবদ্ধ ছিলো। হঠাৎ এমন কি হলো যে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরুতেই একজোট হয়ে দাবি জানানোর ?
এসব দাবি নিয়ে মাঠে থাকা লোকজন জানান, হাসিনা সরকারের সময় তারা সোচ্চার হতে পারেননি প্রাণের ভয়ে। যেকারণে শোষিত হয়ে নীরবে সহ্য করেছেন যন্ত্রণা। তবে, আউটসোসিং কর্মীদের জাতীয়করণ করতে হবে এমন বাধ্যবাদকতা ছিলো না।
আউটসোর্সিং মূলত একটি ব্যবসায়িক শব্দ, যার মানে হচ্ছে, কোন কাজ কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কর্মচারীকে দিয়ে না করিয়ে সেই কাজ বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়া নেয়া।
দীর্ঘ বছর গণতন্ত্রের নাম দিয়ে দেশ চালানো আওয়াম সরকারের অমনি মনবাধিকার লঙ্ঘন গোটা বিশ^কে অবাক করেছে। রাস্তায় নামা এসব মানুষদের অভিযোগ হাসিনা সরকার আমলে তারা কোন কথা বলতে পারেননি। প্রতিটি মুহূর্তে নিরাপত্তাহীনতার ভয় তাদের তাড়া করেছে।
বর্তমন অন্তর্বর্তী সরকার মানবিক। এর প্রধান উপদেষ্টা একজন মানবিক মানুষ। যে কারণে বিগত ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে বঞ্চিত মানুষ আজ রাজপথে নেমে এসেছেন।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, দাবি নিয়ে মাঠে নাম ব্যক্তিরা অনেকেই মিথ্যা বলছেন। কারণ, তারা কোন কোম্পানির মধ্যমে চাকরী পেয়েছেন। বেতনও সেই কোম্পানিই পরিশোধ করেছে। জাতীয়করণের শর্তে তাদের কাজ দেওয়া হয়নি।
কিন্তু হাসিনা সরকার আমলে কোন কোন সংস্থার লোকেরা দাবি জানালেও তা হালে পানি পায়নি। কারণ, জাতীয় করণে কোন শর্তে তাদের চাকরী দেওয়া হয়নি। এমন দাবি করে বর্তমান সরকারকে চাপে ফেলার আওয়ামী কৌশল হতে পারে।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধীন সাধারণ আনসার সদস্যদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আনসার শাখা-২ এর উপসচিব কে এম আল আমীন স্বাক্ষরিত আদেশে এ কমিটি গঠন করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধীন সাধারণ আনসার (পুরুষ/মহিলা), অ্যাসিস্ট্যান্ট প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি) ও প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) কর্তৃক উত্থাপিত দাবি-দাওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে নির্দেশক্রমে কমিটি গঠন করা হলো।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদকে।
কমিটির সদস্যরা হলেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ মহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল তসলিম এহসান, ২৭ আনসার ব্যাটালিয়ন বান্দরবান সুয়ালকের পরিচালক রাসেল আহমেদ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহকারী পরিচালক (রেকর্ড) মো. আবুল কালাম আজাদ, ১৩ আনসার ব্যাটালিয়ন রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি মারিশ্যার কোম্পানি কমান্ডার মো. হুমায়ুন কবির শরীফ।
সাধারণ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য কর্তৃক গঠিত আহ্বায়ক কমিটি থেকে চার জন এবং সদস্য সচিব আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরিচালক (প্রশাসন) জাহানারা আক্তার।