‘বিশ্বনাথে বাসিয়া নদীসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না’
- আপডেট সময় : ১৮ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সারওয়ার আলম বলেন, বাসিয়া নদী’সহ জনগূরুত্বপূর্ণ স্থানে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সিলেটের সব জনগূরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে মানুষ যাতে যানজটের কবলে না পড়েন সেজন্য সড়কে থাকা সিএনজি স্ট্যান্ড’সহ সকল প্রকারের স্ট্যান্ডে দ্রæত সরিয়ে নিতে হবে। প্রকৃত মানুষ হতে হলে আমাদেরকে ধর্মীয় আচার মেনে চলতে হবে, কারণ ধর্মই একমাত্র আমাদেরকে পরিপক্ষ করে গড়ে তুলতে পারে। আর বিদেশ যাওয়ার পূর্বে শিক্ষার্থীদেরকে সুশিক্ষা ও কর্ম দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এতে দেশে থাকলে কিংবা বিদেশে গেলেও যে কারও জীবনে সফলতা এনে দিবে। বাংলাদেশ কৃষির উপর দাঁড়িয়ে আছে, আর তাই কৃষকের কল্যাণের জন্য সরকার প্রতি বছর কৃষিখ্যাতে প্রণোদনা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ভ‚র্তকি দিচ্ছেন। তাই এক টুকরো জমি খালি না রেখে চাষাবাদের আওতায় আনতে হবে। এতে করে নিজেদের পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নও হবে।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শনকালে আয়োজিত সভায় ও সাংবাদিকদের নানান প্রশ্নের জবাবে উপরে উল্লেখিত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরোও বলেন, চিকিৎসা সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। এক্ষেত্রে কোন অবহেলা চলবে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এখানে এসে দেখলাম লোকবল একে বারেই কম, মাত্র চারজন চিকিৎসক দিয়ে তারা সেবা দিচ্ছে। এখানে পরিচ্ছন্নতা কর্মীও নেই, আমি আসার খবর শুনে আজ তারা ভাড়াটে লোক দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও অনেক ঘাটতি আছে, সেগুলো পুরণ করার চেষ্ঠা করা হবে। যাতে এলাকার সাধারণ রোগীরা ভালো মানের একটা সেবা পায়। উপজেলার যে কেউ কোন অনিয়ম-দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকলে, তদন্ত সাপেক্ষে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। মানুষকে হয়রাণী হতে হয় এমন কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সারওয়ার আলম বিশ্বনাথ পরিদর্শনকালে দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে থানা পরিদর্শন করেন। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে গিয়ে তিনি হেঁটে হেঁটে পরিদর্শন করেন হাসপাতালে থাকা পুরুষ-নারী ও শিশু এবং এনসিডি কর্নার’সহ প্রত্যেকটি বিভাগ। এসময় তিনি ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের সাথে কথা বলে সেবার মান সম্পর্কে জানতে চান।
পরে তিনি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার এবং ভিক্ষাভিত্তি দূরীকরণের লক্ষ্যে শুকনো খাবার’সহ ২টি ভ্যানগাড়ী ও অসহায় ৩ ব্যক্তিকে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে ৩টি গরু প্রদান করা হয়।
এরপর বিকেলে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় উপজেলাধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘সাউন্ড বক্স ও ক্রীড়া সামগ্রী’ বিতরণ করেন এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এরপর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন ডিসি মোঃ সারওয়ার আলম। এছাড়া তিনি উপজেলা ভুমি অফিস, বিশ্বনাথ পৌরসভা কার্যালয়, উপজেলা প্রার্ণীসম্পদ অফিস, কৃষি অফিস, শিক্ষা অফিস, সমাজসেবা অফিস পরিদর্শন করেন।
উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনন্দা রায়ের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা কৃষি কর্তকর্তা বিল্লাল হোসেন ও একাডেমিক সুপার ভাইজার আব্দুল হামিদের পরিচালনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে সিলেটে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম যোগদানের পর ওই প্রথম বারের মতো বিশ্বনাথ উপজেলা পরিদর্শনে আসেন। আর তাঁর পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক’সহ বিভিন্ন দপ্তরগুলোতে দেখা যায় সাজ সাজ রব। ভিন্নরুপে সেজে উঠেছে সর্বত্র। নিত্যদিনের যানজটের এ শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিল। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি আনসার, গ্রাম পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এজন্য অনেক সাধারণ জনগণকে বলতে শুনা গেছে ‘ডিসি’ যদি প্রতি মাসেই এভাবে পরিদর্শনে আসতেন, তাহলে আমরা পরিস্কার-পরিছন্ন এলাকা পাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে দ্রুত কাঙ্খিত সেবা পেতাম।




















