ঢাকা ০২:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মতিউর ও স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের চিঠি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪ ২০২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

এ যাবতকালের সর্বোচ্চ আলোচিত দুর্নীতিবাজ এক সরকারী কর্মকর্তার নাম মতিউর রহমান। গড়ে সম্পদের পাহাড়। একাধিক স্ত্রী রয়েছে তার। দুই হাতে কামিয়েছেন কাড়ি কাড়ি অবৈধ টাকা। নগর থেকে গ্রাম, সর্বত্রই মতিউরের নাম মুখে মুখে। অনেকের প্রশ্ন অবৈধ টাকা উপার্জনের বড্ড মাতাল ছিলেন মতিউর।

এমন কথা কেন? মূলত মতিউর রহমান অবৈধ আয়ের একটা বড় জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছেন। যেখানে অবৈধ টাকা দিতে অনেকেই কসুর করেনি।

বলা হচ্ছে, ছাগলকান্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার দুই স্ত্রী ও সন্তানদের কথা। এরই মধ্যে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের হিসাব বিবরণীর জন্য নোটিশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২১ কর্মদিবসের মধ্যে এই হিসাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকালে দুদক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।

মতিউর ছাড়া বাকিরা হলেন মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্নব, মেয়ে ফারজানা রহমান ইস্পিতা ও দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলী।

৩০ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ক্রয়কৃত কোনো জমি আছে কিনা, সেটি জানতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি দেয় দুদক।

জানা যায়, মতিউরের বিরুদ্ধে এর আগে চারবার দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন চিট পেয়েছিলেন তিনি।

মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম দুদকে অভিযোগ আসে ২০০৪ সালে। সে সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের। অভিযোগ আছে, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়র মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়ে দিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।

২০০৮ সালে আবারও দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়, ক্লিন চিট পান মতিউর। এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরও দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগ ছিল অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির। কিন্তু কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারও ক্লিন চিট।

এবারে পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে দুদক আগের চারবারের প্রতিটি বিষয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছে মতিউর, তা-ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানায় দুদক।

ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতেই এনবিআরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মতিউর ও স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের চিঠি

আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

 

এ যাবতকালের সর্বোচ্চ আলোচিত দুর্নীতিবাজ এক সরকারী কর্মকর্তার নাম মতিউর রহমান। গড়ে সম্পদের পাহাড়। একাধিক স্ত্রী রয়েছে তার। দুই হাতে কামিয়েছেন কাড়ি কাড়ি অবৈধ টাকা। নগর থেকে গ্রাম, সর্বত্রই মতিউরের নাম মুখে মুখে। অনেকের প্রশ্ন অবৈধ টাকা উপার্জনের বড্ড মাতাল ছিলেন মতিউর।

এমন কথা কেন? মূলত মতিউর রহমান অবৈধ আয়ের একটা বড় জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছেন। যেখানে অবৈধ টাকা দিতে অনেকেই কসুর করেনি।

বলা হচ্ছে, ছাগলকান্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার দুই স্ত্রী ও সন্তানদের কথা। এরই মধ্যে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের হিসাব বিবরণীর জন্য নোটিশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২১ কর্মদিবসের মধ্যে এই হিসাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকালে দুদক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।

মতিউর ছাড়া বাকিরা হলেন মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্নব, মেয়ে ফারজানা রহমান ইস্পিতা ও দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলী।

৩০ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ক্রয়কৃত কোনো জমি আছে কিনা, সেটি জানতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি দেয় দুদক।

জানা যায়, মতিউরের বিরুদ্ধে এর আগে চারবার দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন চিট পেয়েছিলেন তিনি।

মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম দুদকে অভিযোগ আসে ২০০৪ সালে। সে সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের। অভিযোগ আছে, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়র মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়ে দিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।

২০০৮ সালে আবারও দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়, ক্লিন চিট পান মতিউর। এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরও দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগ ছিল অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির। কিন্তু কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারও ক্লিন চিট।

এবারে পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে দুদক আগের চারবারের প্রতিটি বিষয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছে মতিউর, তা-ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানায় দুদক।

ঈদুল আজহার আগে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতেই এনবিআরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।