ঢাকা ০৯:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কালীগঞ্জে ৩ হাজার ২শত কৃষককে দেওয়া হল বিনামূল্যে সার ও বীজ Logo খাতের সফল খামারি উদ্যোক্তাদের মাঝে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান Logo কাজী মামুনুর রশীদ কচি সদস্য হওয়াতে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা Logo মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে জাতীয় ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা Logo ইসলামপুর ইউনিয়নে ঈদের চাল নিয়ে পরিষদ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগ Logo মর্গ্যান স্কুলের দুর্নীতির তদন্তে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর, ৬ শিক্ষকের নামে মামলা Logo মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের জেলা কর্মশালা অনুষ্ঠিত  Logo মাদক, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ প্রতিরোধের অঙ্গীকার করলেন  ছাত্রদল নেতা সোহেল   Logo ঝিনাইদহে অনলাইন জুয়া সাইটের বাংলাদেশী এজেন্ট গ্রেফতার Logo ভোলায় অস্ত্র গুলিসহ সিরাজ বাহিনীর দুই সদস্য আটক

শ্যালো নৌকার শব্দ শুনলেই ত্রাণের আশায় ছুটে আসে বানভাসি মানুষ

শ্যামল ভৌমিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৩:১৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪ ২৯৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

দুই সপ্তাহে যাবত বন্যায় কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদী অববাহিকার বন্যা কবলিত হাজারো মানুষ। বানের জল এসব এলাকার মানুষের কর্ম কেড়ে নিয়েছে। কর্মহীন মানুষের দীর্ঘ মিছিল। শ্যালো নৌকার শব্দ শুনলেই ত্রাণের আশায় ছুটে আসে বানভাসি মানুষ।

জেলা সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার বাসিন্দা ছামিনা বেগম। ৪ সন্তান ও কর্মহীন দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে পার্শ্ববর্তী উচুঁ স্থানে পলিথিন টানিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

ছামিনা জানালেন, বানের জল কেড়ে স্বামী কর্ম। কোন কাজ নেই তাই। বন্যার শুরুতেই সরকারি ভাবে ১০ কেজি চাল পেয়েছেন। তাও শেষ হয়ে গেছে। আগামী দিনগুলো শিশু সন্তানদের নিয়ে কিভাবে পারি কাটাবেন, সেই ভাবনায় নির্ঘুমরাত কাটে ছামিনার। ধরা গলায় কথা বলতে গিয়ে আটকে যাচ্ছিল।

এক পর্যায়ে কেঁদে ফেললেন ছামিনা। জানান বাড়ী থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। বাড়িঘর মেরামতের সামর্থ নেই তাদের।

একই এলাকার জামাল হোসেন। ৬ সদস্যের সংসার। চোখেমুখে হতাশা। মুখের কথা হারিয়ে ফেলেছেন জামাল। চারিদিকে থৈ থৈ করছে বানের। এযেন সাক্ষাত যমদূত হয়ে এসেছে জামাল হোসেনদের জীবনে।

কর্মহীন মানুষগুলোর ঘরে খাবারও নেই। সে জানায়, ত্রাণ সহায়তা ছাড়া এই মহুর্তে তার আর কোন উপায় নেই। দীর্ঘদিন পানিতে বাড়ী-ঘর তলিয়ে থাকায় পঁচে-গলে গিয়েছে ঘরের বেড়া দরজা। পানি নেমে যাওয়ার পর ঘর-দরজা নতুন করে মেরামত ছাড়া ঐঘরে বাস করা সম্ভব হবে না।

একই অবস্থা পার্শ্ববর্তী মোগলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড়। বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘ হওয়ার চরম দুর্ভোগে আছে জেলার ৫৫ ইউনিয়নের ২ লাখেরও বেশী মানুষ। দীর্ঘ ১৩দিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় এলাকার অধিকাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বানের জরেল যুবে আছে বসতবাড়ী ও সড়ক। একারণে বাড়ি ফেরা সম্ভব অনেকের পক্ষে।
গবাদি পশুসহ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়ে দুর্ভোগে দিন কাটাছে তাদের।

জেলা প্রশাসনের তরফে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৫৮৭ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৩৩ লাখ টাকা ও ২৫ হাজার প্যাকেট শুকনো বিতরণ করা হলেও, অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ত্রাণের আওতায় আসেনি।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বিভাগ জানায়, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শ্যালো নৌকার শব্দ শুনলেই ত্রাণের আশায় ছুটে আসে বানভাসি মানুষ

আপডেট সময় : ০৩:১৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

 

দুই সপ্তাহে যাবত বন্যায় কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদী অববাহিকার বন্যা কবলিত হাজারো মানুষ। বানের জল এসব এলাকার মানুষের কর্ম কেড়ে নিয়েছে। কর্মহীন মানুষের দীর্ঘ মিছিল। শ্যালো নৌকার শব্দ শুনলেই ত্রাণের আশায় ছুটে আসে বানভাসি মানুষ।

জেলা সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার বাসিন্দা ছামিনা বেগম। ৪ সন্তান ও কর্মহীন দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে পার্শ্ববর্তী উচুঁ স্থানে পলিথিন টানিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

ছামিনা জানালেন, বানের জল কেড়ে স্বামী কর্ম। কোন কাজ নেই তাই। বন্যার শুরুতেই সরকারি ভাবে ১০ কেজি চাল পেয়েছেন। তাও শেষ হয়ে গেছে। আগামী দিনগুলো শিশু সন্তানদের নিয়ে কিভাবে পারি কাটাবেন, সেই ভাবনায় নির্ঘুমরাত কাটে ছামিনার। ধরা গলায় কথা বলতে গিয়ে আটকে যাচ্ছিল।

এক পর্যায়ে কেঁদে ফেললেন ছামিনা। জানান বাড়ী থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। বাড়িঘর মেরামতের সামর্থ নেই তাদের।

একই এলাকার জামাল হোসেন। ৬ সদস্যের সংসার। চোখেমুখে হতাশা। মুখের কথা হারিয়ে ফেলেছেন জামাল। চারিদিকে থৈ থৈ করছে বানের। এযেন সাক্ষাত যমদূত হয়ে এসেছে জামাল হোসেনদের জীবনে।

কর্মহীন মানুষগুলোর ঘরে খাবারও নেই। সে জানায়, ত্রাণ সহায়তা ছাড়া এই মহুর্তে তার আর কোন উপায় নেই। দীর্ঘদিন পানিতে বাড়ী-ঘর তলিয়ে থাকায় পঁচে-গলে গিয়েছে ঘরের বেড়া দরজা। পানি নেমে যাওয়ার পর ঘর-দরজা নতুন করে মেরামত ছাড়া ঐঘরে বাস করা সম্ভব হবে না।

একই অবস্থা পার্শ্ববর্তী মোগলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড়। বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘ হওয়ার চরম দুর্ভোগে আছে জেলার ৫৫ ইউনিয়নের ২ লাখেরও বেশী মানুষ। দীর্ঘ ১৩দিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় এলাকার অধিকাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বানের জরেল যুবে আছে বসতবাড়ী ও সড়ক। একারণে বাড়ি ফেরা সম্ভব অনেকের পক্ষে।
গবাদি পশুসহ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়ে দুর্ভোগে দিন কাটাছে তাদের।

জেলা প্রশাসনের তরফে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৫৮৭ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৩৩ লাখ টাকা ও ২৫ হাজার প্যাকেট শুকনো বিতরণ করা হলেও, অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ত্রাণের আওতায় আসেনি।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বিভাগ জানায়, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।