ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে মীমাংসা হলেও বাউন্ডারি ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ, ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন Logo প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করলেন ডিআইজি খান সাঈদ হাসান Logo কয়রায় নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে অবৈধভাবে জেলি পুশ করে ওজন বৃদ্ধি করা চিংড়ি আটক Logo চট্টগ্রাম বন্দরসহ জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রোডমার্চের সমর্থনে গাইবান্ধায় সংহতি মিছিল Logo শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে পত্নীতলায় বৃক্ষরোপণ Logo মোংলায় ৩৬ ঘন্টা পার হলেও ডুবন্ত কার্গো জাহাজ উদ্ধারে অগ্রগতি নেই Logo বেবু আহ্বায়ক, সুজন সদস্য সচিব Logo জলঢাকায় পোনা মাছ নিধন রোধে ২৬টি চায়না জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দিল প্রশাসন Logo ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-০১ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন যারা Logo ৩১ দফার বাস্তবায়নেই রাষ্ট্রে ফিরবে সুশাসন ও গণতন্ত্র

সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না: জামায়াতের আমির

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২৫২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা চাই না এই জাতিকে আর কেউ বিভক্ত করুক। আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না। যারাই এখানে জন্ম নিয়েছে, তারা গর্বিত নাগরিক। সব ধর্মের মানুষ দলমত-নির্বিশেষে এখানে বসবাস করবে। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। যদি মসজিদে নামাজ পড়ার সময় পাহারা দিতে না হয়, তাহলে মন্দিরে উপাসনার সময়ও যেন পাহারা দেওয়ার প্রশ্ন না ওঠে।’

আজ শনিবার বিকেলে বগুড়ায় সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতের বগুড়া জেলা ও শহর শাখার উদ্যোগে শহরের ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন একটা বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে, যে দেশে বিচারকের চেয়ারে বসে কোনো দুর্বৃত্ত ঘুষ খাওয়ার চিন্তা করবে না। কেউ যদি ঘুষের দিকে হাত বাড়ায়, তাঁর হাত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। ন্যায়বিচারের জন্য মানুষের এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ঘুরতে হবে না। জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে একটি মানবিক বাংলাদেশ দেখতে চায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জামায়াতে ইসলামী তরুণদের প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, ‘জামায়াত তরুণদের এমন শিক্ষা দিতে চায়, তারা আল্লাহর ভয় করবে, মানুষকে ভালোবাসতে শিখবে, দেশকে ভালোবাসতে শিখবে। সুশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত কাজ তাঁদের হাতে চলে আসবে। কোনো মামা-খালুর তদবির চলবে না। যার যার যোগ্যতায় চাকরি পাবে। জামায়াত সেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। জামায়াত এমন বাংলাদেশ চায়, যেখানে হিংসা হানাহানি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির কবর রচিত হবে। প্রতিশোধের রাজনীতি না চাইলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের খুন হত্যা, গুম এবং অর্থ চুরির বিচার হতে হবে।’

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, ‘ভালো মানুষ কখনো পালান না। কারণ, তাঁরা দেশকে ভালোবাসেন। আমরা তাড়া করিনি। পালালেন কেন? দেশের প্রতি যাঁদের ভালোবাসা, চোখের পানি ও কান্না মেকি, তাঁরাই দেশ থেকে পালিয়ে যান।’ বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের পালানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তিনি শুধু বিচারক নন। একজন রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত হিসেবে কাজ করেছেন। আল্লাহ তাঁকে শাস্তি দিয়েছেন। পিলখানায় ৫৭ জন সাহসী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে জুলুম শুরু হয়েছিল। ৫ আগস্ট সেই জুলুমের অবসান হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যারা হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুড়েছিল, তাদের কাছে ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার আর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেই। তাদের নাম আর জনগণ শুনতে চায় না। তাদের জাতি আর প্রকাশ্যে হাঁটতে দেবে না। আগে তাদের বিচার হবে। যে আদালতে জামায়াত নেতাদের অন্যায়ভাবে জুলুম বিচার করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, সেই আদালতে তাদের আসতে হবে। তারা অন্যায় করেছে, জুলুম করেছে, লুটপাট করেছে, বৈষম্য করেছে। তবু আমরা বিশ্বাস করি ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়ে তারা যে পাওনা বুঝে পাবে, তাতে তাদের সাধ মিটে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জামায়াত কোনো দখল-ভাঙচুরে জড়ায়নি দাবি করে দলটির আমির বলেন, ‘ভুলের ঊর্ধ্বে আমরা নই। কেউ যদি বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারে, তবে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইব।’ এ সময় বিগত সরকারের সময় জামায়াতের মতো আর কেউ এত নির্যাতনের শিকার হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

জামায়াতের বগুড়া শহর শাখার আমির আবিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না: জামায়াতের আমির

আপডেট সময় : ১০:৪৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা চাই না এই জাতিকে আর কেউ বিভক্ত করুক। আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু শব্দ শুনতে চাই না। যারাই এখানে জন্ম নিয়েছে, তারা গর্বিত নাগরিক। সব ধর্মের মানুষ দলমত-নির্বিশেষে এখানে বসবাস করবে। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। যদি মসজিদে নামাজ পড়ার সময় পাহারা দিতে না হয়, তাহলে মন্দিরে উপাসনার সময়ও যেন পাহারা দেওয়ার প্রশ্ন না ওঠে।’

আজ শনিবার বিকেলে বগুড়ায় সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতের বগুড়া জেলা ও শহর শাখার উদ্যোগে শহরের ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন একটা বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে, যে দেশে বিচারকের চেয়ারে বসে কোনো দুর্বৃত্ত ঘুষ খাওয়ার চিন্তা করবে না। কেউ যদি ঘুষের দিকে হাত বাড়ায়, তাঁর হাত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। ন্যায়বিচারের জন্য মানুষের এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ঘুরতে হবে না। জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে একটি মানবিক বাংলাদেশ দেখতে চায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জামায়াতে ইসলামী তরুণদের প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, ‘জামায়াত তরুণদের এমন শিক্ষা দিতে চায়, তারা আল্লাহর ভয় করবে, মানুষকে ভালোবাসতে শিখবে, দেশকে ভালোবাসতে শিখবে। সুশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত কাজ তাঁদের হাতে চলে আসবে। কোনো মামা-খালুর তদবির চলবে না। যার যার যোগ্যতায় চাকরি পাবে। জামায়াত সেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। জামায়াত এমন বাংলাদেশ চায়, যেখানে হিংসা হানাহানি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির কবর রচিত হবে। প্রতিশোধের রাজনীতি না চাইলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের খুন হত্যা, গুম এবং অর্থ চুরির বিচার হতে হবে।’

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াতের আমির বলেন, ‘ভালো মানুষ কখনো পালান না। কারণ, তাঁরা দেশকে ভালোবাসেন। আমরা তাড়া করিনি। পালালেন কেন? দেশের প্রতি যাঁদের ভালোবাসা, চোখের পানি ও কান্না মেকি, তাঁরাই দেশ থেকে পালিয়ে যান।’ বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের পালানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তিনি শুধু বিচারক নন। একজন রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত হিসেবে কাজ করেছেন। আল্লাহ তাঁকে শাস্তি দিয়েছেন। পিলখানায় ৫৭ জন সাহসী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার মাধ্যমে জুলুম শুরু হয়েছিল। ৫ আগস্ট সেই জুলুমের অবসান হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যারা হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুড়েছিল, তাদের কাছে ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার আর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেই। তাদের নাম আর জনগণ শুনতে চায় না। তাদের জাতি আর প্রকাশ্যে হাঁটতে দেবে না। আগে তাদের বিচার হবে। যে আদালতে জামায়াত নেতাদের অন্যায়ভাবে জুলুম বিচার করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, সেই আদালতে তাদের আসতে হবে। তারা অন্যায় করেছে, জুলুম করেছে, লুটপাট করেছে, বৈষম্য করেছে। তবু আমরা বিশ্বাস করি ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়ে তারা যে পাওনা বুঝে পাবে, তাতে তাদের সাধ মিটে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জামায়াত কোনো দখল-ভাঙচুরে জড়ায়নি দাবি করে দলটির আমির বলেন, ‘ভুলের ঊর্ধ্বে আমরা নই। কেউ যদি বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারে, তবে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইব।’ এ সময় বিগত সরকারের সময় জামায়াতের মতো আর কেউ এত নির্যাতনের শিকার হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

জামায়াতের বগুড়া শহর শাখার আমির আবিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানী প্রমুখ বক্তব্য দেন।