ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫

ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভীড়

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্য সময়ের তুলনায় ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো বেশি দর্শনার্থীর পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে। এবার টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি। এতদিন বাসায় শুয়ে-বসে টিভি দেখে কাটানোও বিরক্তিকর। তাই এই সময় ঘরে বসে না থেকে নগরবাসীর অনেকে পরিবার নিয়ে ছুটছেন বিনোদনকেন্দ্রে। ঢাকা অনেকটা ফাঁকা থাকায় ঈদকে স্বস্তিতে ঘোরার উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন অনেকে। কিন্তু অনেক সময় এই বিনোদনের জন্য ভোগান্তির শিকার হতে হয় মানুষকে। বিশেষ করে চিড়িয়াখানায় প্রবেশের ক্ষেত্রে। প্রতি বছর ঈদে চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। প্রচন্ড ভীড়ে নারী শিশুদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে হচ্ছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদে এক-দেড় লাখ দর্শনার্থীর সমাগম হয় চিড়িয়াখানায়। তখন প্রবেশে বাধে বিপত্তি। টিকিট কাটা থেকে প্রবেশ, দুই ক্ষেত্রেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তা ছাড়া ওই এলাকায় দেখা দেয় যানজট।এসময় পকেটমার, অজ্ঞানপার্টি ও ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে তরুনীদের।
শুধু চিড়িয়াখানাই নয়, শাহবাগ যাদুঘর, হাতিরঝিল, শিল্পকলা একাডেমী, শিশু একাডেসী,বলদাগার্ডেনরমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ঈদের সময় যানজট লেগেই থাকে। সে কারণে স্বস্তিতে ঘোরার আনন্দ অস্বস্তিতে রূপ নেয়। তাই এবার যাতে ওই ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে না হয় সেই প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী।
জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবেশের জন্য এবার ১৪টি বুথে টিকিটি বিক্রি করা হচ্ছে। এর বাইরে ছোট গাড়ি রাখার পার্কিংয়েও একটি বুথে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৬টি লম্বা লাইন দিয়ে প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকবে। আশপাশে যাতে যানজট না থাকে সেই বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘প্রতিবছরই ঈদে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা এক থেকে দেড় লাখ ছাড়িয়ে যায়। গেটে অনেক জটলা হয়। বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর চিড়িয়াখানায় প্রবেশ যেন মসৃণ হয়, সে জন্য লাইনের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া এবং লাইন লম্বা করে দেওয়া হচ্ছে। যানজট যাতে এড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশপাশে যাতে যানজট না থাকে, সে জন্য এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র‌্যাব, আর্মি, যৌথ বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় মিটিং করা হয়েছে। যানজট এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ, র‌্যাব দর্শনার্থীর নিরাপত্তায় সমন্বয় মিটিং করা হয়েছে।
চিড়িয়াখানায় প্রবেশের টিকিটের মূল ৫০ টাকা। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর টিকিট লাগবে না। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধীর সঙ্গে যিনি অ্যাটেনডেন্ট থাকবেন, তার টিকিট লাগছে না।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে নতুন করে ভেতরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চুনকাম ও রং করা হয়েছে। দর্শনার্থীর আকর্ষনের জন্য পতাকা বসানো হয়েছে। ক্রটিপুর্ণ সিসি ক্যামেরাগুলো সংস্কারের মাধ্যমে সক্রিয় করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা কোন দিক থেকে কোন দিকে যাবেন, সেই নির্দেশনার বোর্ডগুলোও যেখানে যেখানে দরকার, সে সকল দর্শনীয় স্থানে বসানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, চিড়িয়াখানার ভেতরে বাইরের কোনো খাবার পাওয়া যাবে না। খাবার বিক্রি করে শুধু পর্যটন করপোরেশন। আগে দুটি জায়গা খাবার বিক্রি করা হতো। গত বছর পর্যটন করপোরেশনের দুটি রেস্তোরাঁর আওতায় দুটি বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এবার আরেকটি অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র বসানো হয়েছে। এটি স্থাপন করা হয় জিরাফের খাঁচার বিপরীত পাশে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, পানি বা পানীয় জাতীয় খাবার একটি বড় বিষয়। এগুলো খুব দরকার পড়ে। পানি বা পানীয় জাতীয় খাবারের জন্য দর্শনার্থীদের যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়, সেজন্য অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র থাকছে। ঈদের দিন থেকে শুরু করে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এটি থাকবে। দর্শনার্থীদের সেবা প্রদান করছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের সময় দর্শনার্থীর ভিড় থাকায় প্রাণীদের ওপর খুব ধকল যায়। সেই ধকল যাতে মোকাবিলা করতে পারে সে জন্য প্রাণীগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন ও মিনারেলস দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ঠা-া পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে করে অতিরিক্ত দর্শনার্থীদের চাপে ভারসাম্যহীন এবং অসুস্থ হয়ে না পড়ে পশুপাখী।
অপরদিকে রাজধানীর চিড়িয়াখানা ছাড়া হাতিরঝিল, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমন্ডি লেক, জিয়া উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেন, শ্যামলী শিশু মেলাসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীর ভিড় জমে। এদিকে রাজধানীর বাইরের চট্টগ্রামের সাজেক, ফয়েস লেক, কক্সবাজার কুয়াকাটা, নন্দরপার্ক, ফ্যান্টাসি কিংডম বিনোদন জায়গায় দর্মসার্থীদের ভীড় বেড়েছে। এ অবস্থায় অন্য সময়ের তুলনায় আইনশৃংখলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েনের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভীড়

আপডেট সময় : ১০:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

অন্য সময়ের তুলনায় ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো বেশি দর্শনার্থীর পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে। এবার টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি। এতদিন বাসায় শুয়ে-বসে টিভি দেখে কাটানোও বিরক্তিকর। তাই এই সময় ঘরে বসে না থেকে নগরবাসীর অনেকে পরিবার নিয়ে ছুটছেন বিনোদনকেন্দ্রে। ঢাকা অনেকটা ফাঁকা থাকায় ঈদকে স্বস্তিতে ঘোরার উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন অনেকে। কিন্তু অনেক সময় এই বিনোদনের জন্য ভোগান্তির শিকার হতে হয় মানুষকে। বিশেষ করে চিড়িয়াখানায় প্রবেশের ক্ষেত্রে। প্রতি বছর ঈদে চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। প্রচন্ড ভীড়ে নারী শিশুদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে হচ্ছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদে এক-দেড় লাখ দর্শনার্থীর সমাগম হয় চিড়িয়াখানায়। তখন প্রবেশে বাধে বিপত্তি। টিকিট কাটা থেকে প্রবেশ, দুই ক্ষেত্রেই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তা ছাড়া ওই এলাকায় দেখা দেয় যানজট।এসময় পকেটমার, অজ্ঞানপার্টি ও ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে তরুনীদের।
শুধু চিড়িয়াখানাই নয়, শাহবাগ যাদুঘর, হাতিরঝিল, শিল্পকলা একাডেমী, শিশু একাডেসী,বলদাগার্ডেনরমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ঈদের সময় যানজট লেগেই থাকে। সে কারণে স্বস্তিতে ঘোরার আনন্দ অস্বস্তিতে রূপ নেয়। তাই এবার যাতে ওই ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে না হয় সেই প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী।
জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবেশের জন্য এবার ১৪টি বুথে টিকিটি বিক্রি করা হচ্ছে। এর বাইরে ছোট গাড়ি রাখার পার্কিংয়েও একটি বুথে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৬টি লম্বা লাইন দিয়ে প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকবে। আশপাশে যাতে যানজট না থাকে সেই বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘প্রতিবছরই ঈদে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা এক থেকে দেড় লাখ ছাড়িয়ে যায়। গেটে অনেক জটলা হয়। বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর চিড়িয়াখানায় প্রবেশ যেন মসৃণ হয়, সে জন্য লাইনের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া এবং লাইন লম্বা করে দেওয়া হচ্ছে। যানজট যাতে এড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশপাশে যাতে যানজট না থাকে, সে জন্য এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র‌্যাব, আর্মি, যৌথ বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় মিটিং করা হয়েছে। যানজট এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ, র‌্যাব দর্শনার্থীর নিরাপত্তায় সমন্বয় মিটিং করা হয়েছে।
চিড়িয়াখানায় প্রবেশের টিকিটের মূল ৫০ টাকা। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর টিকিট লাগবে না। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধীর সঙ্গে যিনি অ্যাটেনডেন্ট থাকবেন, তার টিকিট লাগছে না।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে নতুন করে ভেতরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চুনকাম ও রং করা হয়েছে। দর্শনার্থীর আকর্ষনের জন্য পতাকা বসানো হয়েছে। ক্রটিপুর্ণ সিসি ক্যামেরাগুলো সংস্কারের মাধ্যমে সক্রিয় করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা কোন দিক থেকে কোন দিকে যাবেন, সেই নির্দেশনার বোর্ডগুলোও যেখানে যেখানে দরকার, সে সকল দর্শনীয় স্থানে বসানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, চিড়িয়াখানার ভেতরে বাইরের কোনো খাবার পাওয়া যাবে না। খাবার বিক্রি করে শুধু পর্যটন করপোরেশন। আগে দুটি জায়গা খাবার বিক্রি করা হতো। গত বছর পর্যটন করপোরেশনের দুটি রেস্তোরাঁর আওতায় দুটি বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এবার আরেকটি অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র বসানো হয়েছে। এটি স্থাপন করা হয় জিরাফের খাঁচার বিপরীত পাশে।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, পানি বা পানীয় জাতীয় খাবার একটি বড় বিষয়। এগুলো খুব দরকার পড়ে। পানি বা পানীয় জাতীয় খাবারের জন্য দর্শনার্থীদের যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়, সেজন্য অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র থাকছে। ঈদের দিন থেকে শুরু করে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এটি থাকবে। দর্শনার্থীদের সেবা প্রদান করছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের সময় দর্শনার্থীর ভিড় থাকায় প্রাণীদের ওপর খুব ধকল যায়। সেই ধকল যাতে মোকাবিলা করতে পারে সে জন্য প্রাণীগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন ও মিনারেলস দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ঠা-া পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে করে অতিরিক্ত দর্শনার্থীদের চাপে ভারসাম্যহীন এবং অসুস্থ হয়ে না পড়ে পশুপাখী।
অপরদিকে রাজধানীর চিড়িয়াখানা ছাড়া হাতিরঝিল, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমন্ডি লেক, জিয়া উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেন, শ্যামলী শিশু মেলাসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে দর্শনার্থীর ভিড় জমে। এদিকে রাজধানীর বাইরের চট্টগ্রামের সাজেক, ফয়েস লেক, কক্সবাজার কুয়াকাটা, নন্দরপার্ক, ফ্যান্টাসি কিংডম বিনোদন জায়গায় দর্মসার্থীদের ভীড় বেড়েছে। এ অবস্থায় অন্য সময়ের তুলনায় আইনশৃংখলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েনের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।