ঢাকা ১১:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, অনলাইনে মিলবে ১১টা থেকে Logo রাজনীতিতে পরিত্যক্ত মানুষগুলোর আওয়াজই বড় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী Logo মধুপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী Logo ফের রক্তঝরলো রোহিঙ্গা শিবিরে! Logo দুর্বৃত্তের গুলিতে নড়াইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার মোস্তফা কামালের মৃত্যু Logo প্রগতিশীল রাজনীতিক হায়দার আকবর খান রনো প্রয়াত Logo উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ থেকে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে : রিজভী Logo জিম্বাবুয়েকে হারালো বাংলাদেশ Logo পাঠ্যপুস্তক থেকে কৃষি শিক্ষা বাদ দিয়ে ঢোল তবলা দেয়া হয়েছে : শায়খে চরমোনাই Logo আমাদের চালিকাশক্তি অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক পয়লা বৈশাখ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ওরা সন্ত্রাসী কিন্তু পেশা লোক দেখানো

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৯০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পেশায় কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ চা-বিক্রেতা কিংবা প্রাইভেটকার চালক। মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সখ্যতা। এরপর তারা গড়ে তোলেন কিশোর গ্যাং, যার মাধ্যমে এলাকায় অপরাধ চালিয়ে আসছিলেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও এর আশপাশের এলাকায় ‘দে ধাক্কা’ ও ‘ডায়মন্ড’ নামে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা জুলফিকার আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)। গত শুক্রবার মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জুলফিকার আলী (৩৭), তার অন্যতম সহযোগী মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), মো. শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮) ও মো. সুরুজ মিয়া (৩৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, দুটি চাপাতি ও সাতটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরজুড়ে গ্রেপ্তার জুলফিকার ও তার সহযোগীদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা নামে দুটি কিশোর গ্যাং। গ্যাং দুটির সদস্যরা নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন।
জুলফিকারের কিশোর গ্যাং চালানোর জন্য হারুন, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ও সুরুজ মিয়া সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। জুলফিকার মূলত ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা গ্রুপের সদস্যদের দেশি-বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ করতেন। দুটি কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ছিনতাই, মাদক, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করতেন। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, কিশোর গ্যাং সদস্যরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে পথচারীদের মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঠিকাদারের কাজ আটকে দিতেন। জুলফিকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে শুরু করেন। কিছুদিন ওয়ার্কশপে কাজ করার পর নারায়ণগঞ্জে পিকআপ ভ্যানে হেলপারের কাজ শুরু করেন। এ অবস্থায় মালামাল চুরির দায়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা হয়। এরপর পালিয়ে সৌদি চলে যান তিনি।

২০২১ সালে দেশে আসার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দুই মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। জেলে বসে হারুনের সঙ্গে জুলফিকারের সখ্যতা গড়ে ওঠে। জুলফিকার জামিনে মুক্ত হয়ে হারুনকে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টিউবওয়েলের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। এ সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে কৃষ্ণ শামছুদ্দিন ও সুরুজসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ২০২২ সালে জুলফিকার ডায়মন্ড নামে কিশোর গ্যাং তৈরি করেন। এ গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য দিক-নির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহ দিতে শুরু করেন। পরে আরও একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করে যার নাম দেন দে ধাক্কা। কিশোর গ্যাং বাহিনী দুটিকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করতে থাকেন জুলফিকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ওরা সন্ত্রাসী কিন্তু পেশা লোক দেখানো

আপডেট সময় : ১২:৪৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পেশায় কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ চা-বিক্রেতা কিংবা প্রাইভেটকার চালক। মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সখ্যতা। এরপর তারা গড়ে তোলেন কিশোর গ্যাং, যার মাধ্যমে এলাকায় অপরাধ চালিয়ে আসছিলেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও এর আশপাশের এলাকায় ‘দে ধাক্কা’ ও ‘ডায়মন্ড’ নামে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা জুলফিকার আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)। গত শুক্রবার মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জুলফিকার আলী (৩৭), তার অন্যতম সহযোগী মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), মো. শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮) ও মো. সুরুজ মিয়া (৩৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, দুটি চাপাতি ও সাতটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরজুড়ে গ্রেপ্তার জুলফিকার ও তার সহযোগীদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা নামে দুটি কিশোর গ্যাং। গ্যাং দুটির সদস্যরা নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন।
জুলফিকারের কিশোর গ্যাং চালানোর জন্য হারুন, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ও সুরুজ মিয়া সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। জুলফিকার মূলত ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা গ্রুপের সদস্যদের দেশি-বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ করতেন। দুটি কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ছিনতাই, মাদক, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করতেন। র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, কিশোর গ্যাং সদস্যরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে পথচারীদের মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঠিকাদারের কাজ আটকে দিতেন। জুলফিকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে শুরু করেন। কিছুদিন ওয়ার্কশপে কাজ করার পর নারায়ণগঞ্জে পিকআপ ভ্যানে হেলপারের কাজ শুরু করেন। এ অবস্থায় মালামাল চুরির দায়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা হয়। এরপর পালিয়ে সৌদি চলে যান তিনি।

২০২১ সালে দেশে আসার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দুই মাস জেল খেটে জামিনে বের হন। জেলে বসে হারুনের সঙ্গে জুলফিকারের সখ্যতা গড়ে ওঠে। জুলফিকার জামিনে মুক্ত হয়ে হারুনকে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টিউবওয়েলের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। এ সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে কৃষ্ণ শামছুদ্দিন ও সুরুজসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ২০২২ সালে জুলফিকার ডায়মন্ড নামে কিশোর গ্যাং তৈরি করেন। এ গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য দিক-নির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহ দিতে শুরু করেন। পরে আরও একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করে যার নাম দেন দে ধাক্কা। কিশোর গ্যাং বাহিনী দুটিকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করতে থাকেন জুলফিকার।