কক্সবাজারে জোরদার অপারেশন ডেভিল হান্ট, গ্রেফতার ৫২

- আপডেট সময় : ০২:০৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজার জেলাজুড়ে হঠাৎ জোরদার হয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট। গত বুধবার বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৩০ জনের মত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেস্বাসেবক লীগ শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবি লীগ নেতাকে নিজ বাড়িসহ নানা স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটকৃতরা হলেন- রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামশুল আলম মন্ডল, রামু উপজেলা মৎস্যজীবি লীগের সভাপতি মোহামদ সেলিম, রাজারকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, চাকমারকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ফতেখারকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন সেস্বাসেবক লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাইকেল বড়ুয়া, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মেম্বার আবু তাহের টুনু।
উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসাইন মিথুন, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম, মনজুর, সিনিয়র সদস্য ও সাবেক মেম্বার সিরাজুল বশর, দানু মিয়া চৌধুরী, জালিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল মনজুর, আওয়ামী লীগ নেতা রিদুয়ান ইসলাম।
চকরিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুজ্জামান অহিদ। পেকুয়ায় সাবেক এমপি জাফর আলমের ভাগিনা হাসান আল বশির, আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ মাদু মেম্বার, মগনামা নুন্যার পাড়ার মোস্তাক মিয়া।
মহেশখালীর যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন, এমপি আশেকের ঘনিষ্ট সহচর সাদ্দাম, আওয়ামী লীগ নেতা মফিজ মেম্বার, সিরাজ মেম্বার।
কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন এবং লেমশীখালী ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক নুরুল আমিন।
এছাড়া কক্সবাজার সদর উপজেলায় পৌর ৮ নং ওয়ার্ডের ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইমরানসহ, খুরুশকুল ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন, ঝিলংজার ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. নাছির উদ্দিন সহ ৩ জন কে গ্রেপ্তার রয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। নিয়মিত এই অভিযান চলমান থাকবে।
জানা যায়, গত বুধবার চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে। আদালত আনোয়ারুল কবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭টি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, জাফর আলম চকরিয়া থানার পাঁচটি ও পেকুয়া থানার দুটি মামলার আসামি। এর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি মামলায় ১৪ দিন ও পেকুয়া থানার ২টি মামলায় ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। জাফর আলমকে বুধবার সকালে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। ৭টি মামলায় শুনানি শেষে তাঁকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে চকরিয়া থানার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। জাফর আলমকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে ঝটিকা মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কিছু নেতাকর্মী। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় তাঁরা ঝটিকা মিছিল করেন। এতে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের কর্মী এনামুল হক। এই মিছিলের পর জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলার ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠে। যার প্রেক্ষিতে জোরদার হয় অপারেশন ডেলিভ হান্ট।
এদিকে ৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকত এলাকায় যুবলীগ নেতা মোনাফ সিকদারের নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল নিয়ে রীতিমতো পুলিশ বেকায়দায় পড়েন। ওই ঝটিকা মিছিলের পর পুলিশ একদিনে ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছিল ।