ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কৌশলী প্রচারণায় বিএনপির মনোয়ন প্রত্যাশীরা

হালিম মোহাম্মদ
  • আপডেট সময় : ৬৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন। তারা বিভিন্ন কৌশলে তাদের প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। রাজধানীর কোথাও কোথাও তাদের ছবি সম্মিলিত পোষ্টার ফেষ্টুন দেখা যাচ্ছে। যদিও বিএনপির হাই কমান্ড থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন ঘোষণা হয়নি। তবে দলের নীতিনির্ধারক মহলের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় থেকে ঢাকার প্রতিটি আসনে কর্মতৎপরতা চালাচ্ছেন।
ঢাকার মোট ২০ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের নির্বাচনী এলাকার পাড়া মহল্লায় প্রচার প্রচারণা শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে এমপি হতে ঢাকা-১ থেকে শুরু করে ঢাকা-২০ পর্যন্ত ২০ আসনে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এর মধ্যে কোনো কোনো আসনে একাধিক প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন। আবার একই পরিবারের সদস্যরা একটি আসনে মনোনয়ন চাইছেন। দু-একটিতে একক প্রার্থী শক্তিশালীও আছেন। বিভিন্ন কৌশলে হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে মনোয়নের আলোচনায় রয়েছেন মেহনাজ মান্নান, আমানউল্লাহ আমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, তানভীর আহমেদ রবিন, ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, মির্জা আব্বাস, হামিদুর রহমান হামিদ ও আফরোজা আব্বাস। হাবিবুন নবী সোহেল, হাবিবুর রশীদ হাবীব, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, আমিনুল হক, এস এ সিদ্দিক সাজু, কামাল জামান মোল্লা, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. হানিফ ও সুলতানা আহমেদ, হাবিবুন নবী সোহেল, হাবিবুর রশীদ হাবীব, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, এস এ সিদ্দিক সাজু, কামাল জামান মোল্লা, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, সুলতানা আহমেদ।
ঢাকা-১ আসনটি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মাঠে রয়েছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আব্দুল মান্নানের মেয়ে ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নান।
ঢাকা-২ আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড, ঢাকা মেট্রোপলিটন কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ থানা, সাভার উপজেলার আমিনবাজার ইউনিয়ন, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন, কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন (হযরতপুর, কলাতিয়া, তারানগর, শাক্তা, রোহিতপুর, বাস্তা, কালিন্দী, এবং আগানগর ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য আমানউল্লাহ আমান, তার ছেলে ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফান ইবনে আমান এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল ধানের শীষ পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন।
ঢাকা-৩ আসনটি ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া, কোন্ডা ও শুভাঢ্যা এই ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও তার পুত্রবধূ ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী ধানের শীষ পেতে চান।
ঢাকা-৪ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন শ্যামপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন আলোচনায় আছেন।
ঢাকা-৫ আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৮, ৪৯, ৫০, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ ধানের শীষ পেতে চান।
ঢাকা-৬ আসন ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। যার অন্তর্ভুক্ত থানা হচ্ছে: ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, কোতয়ালির একাংশ ও বংশালের একাংশ। এর পূর্বে গেন্ডারিয়া, পশ্চিমে সিদ্দিকবাজার, উত্তরে ফুলবাড়িয়া ও দক্ষিণে নাজিরাবাজার। সাবেক মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-৭ আসনটি ঢাকা মহানগরের বংশালের একাংশ, কোতোয়ালির একাংশ, চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ ও ধানমন্ডির একাংশ নিয়ে গঠিত। এ আসনের পূর্বে নাজিরাবাজার, পশ্চিমে হাজারীবাগ, উত্তরে পলাশী ও দক্ষিণে কামরাঙ্গীরচর। এ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, সহ যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সাবেক বিএনপি নেতা প্রয়াত নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-৮ আসন মতিঝিল, শাহবাগ, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বলা যায়। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গভবন, সচিবালয়সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই আসনেই অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ০৮, ০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০, ২১ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
ঢাকা-৯ আসনটি ঢাকা মেট্রোপলিটন খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়ন, দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন ও মান্ডা সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬ ও ০৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
ঢাকা-৮ ও ৯ দুই আসনেই প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, তার স্ত্রী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। এছাড়া এ দুই আসনের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবীবের নামও শোনা যাচ্ছে।
ঢাকা-১০ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ২২ নং ওয়ার্ড তথা কলাবাগান, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম রবি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বোন বিন্দু নির্বাচন করতে পারেন বলেও জানা গেছে।
ঢাকা-১১ আসন ঢাকা মেট্রোপলিটন এর বাড্ডা থানা, ভাটারা থানা, রামপুরা থানা, হাতিরঝিল থানার একাংশ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২১, ২২ , ২৩,৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১,ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইউম এবং তার স্ত্রী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায়।
ঢাকা-১২ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সভাপতি নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, কেন্দ্রীয় সহ অর্থবিষয়ক সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করা মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-১৩ আসন ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী এবং সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মনোনয়নের প্রত্যাশায় আছেন।
ঢাকা-১৪ আসন ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি েেকরারেশনের ০৭, ০৮, ০৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে দারুস সালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক এস এ সিদ্দিক সাজু, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন ও যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জগলুল পাশা পাপেল মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
ঢাকা-১৫ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ০৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মিল্টন ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মামুন হাসান মনোনয়ন পেতে আশাবাদী।
ঢাকা ১৬ আসন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২, ৩, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তার ত্যাগ ও দৃঢ়তার কথা বিবেচনায় এ আসনটিতে তিনিই যে মনোনয়ন পেতে পারেন তা অনেকটাই নিশ্চিত।
ঢাকা-১৭ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ ওয়ার্ড এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। মূলত গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে এই আসনটি। এ আসনে ‘জিয়া পরিবার’ থেকে কেউ প্রার্থী হবেন বলে আলোচনা চাউর হয়েছে। সেইসঙ্গে বিএনপি নেতা কামাল জামাল মোল্লা ও মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম এর নামও আলোচনায় আছে।
ঢাকা-১৮ আসন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড নং ১, ১৭, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, কফিলউদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান মাঠে রয়েছেন।
ঢাকা-১৯ আসন ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া, ধামসোনা, পাথালিয়া, ইয়ারপুর, আশুলিয়া, বিরুলিয়া, বনগাঁও ইউনিয়ন এবং সাভার ইউনিয়ন ও সাভার পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, ব্যবসায়ী হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ এবং কফিলউদ্দিন প্রচারণায় আছেন।
ঢাকা-২০ আসন ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের তমিজ উদ্দিন ও তরুণ নেতা ইয়াসিন ফেরদৌস মোরাদ প্রচারণা শুরু করছেন।
আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মূল্যায়নের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্যতার প্রয়োজন। তারপর বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল কি না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাদের কতটা অবদান ছিল, দলের পেছনে কতটা সময় দিয়েছেন এ বিষয়গুলো বিবেচনায় যারা ফিট হবেন, তাদের প্রার্থী করা হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্যতার প্রয়োজন। তারপর বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল কি না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাদের কতটা অবদান ছিল, দলের পেছনে কতটা সময় দিয়েছেন- এ বিষয়গুলো বিবেচনায় যারা ফিট হবেন, তাদের প্রার্থী করা হবে।
গন অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের জ্ঞান ফিরলেও তিনি শঙ্কা মুক্ত নন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত এবং উন্নত চিকিৎসায় নুরের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ এই মেডিকেল বোর্ড গতকাল দুপুরে বৈঠকে বসেন। তারপরই তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ভিন্ন মাত্রায় নুরের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়েছে। এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক হাসপাতালে ভীড় না করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজধানীর কাকরাইলে হামলায় গুরুতর আহত গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের চিকিৎসায় উচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নুরুল হকের চিকিৎসায় শুক্রবার রাতেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আজ তার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে মেডিকেল বোর্ড আলোচনা করেছে। সে আঙ্গিকে রোর্ডেও পরামর্শ মতে নুরের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ। আজ সকালে ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আবু হানিফ বলেন, ‘নুরের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। জাতীয় পার্টি নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নুরের ওপর হামলা করেছে। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে কর্মসূচি না দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে ফোন আসে।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের পক্ষের শক্তি শঙ্কায় রয়েছে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে শুধু জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী নয়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জন সহযোগী অধ্যাপক জাহিদ রায়হান বলেন, নাক, কান, মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন নুর। মাথা ও নাকের হাড় ভেঙ্গেছে, এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। সকালে নুরুল হক নুরকে সিটি স্ক্যান ও এক্স-রে শেষে আবার আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহিদ রায়হান।
অপরদিকে নুরের ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ
বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলাকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। গত শনিবার ঝিনাইদহে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় নুরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, নুরের মাথায় আঘাতের কারণে রক্তক্ষরণ হয়েছে, নাক ও ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে। বর্তমানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। ডা. মোস্তাক জানান, মাথার সিটিস্ক্যান রিপোর্টে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি সামান্য ফোলা দেখা গেছে। চোখ ও মুখ ফুলে গেছে, ডান চোখে রক্ত জমাট বেঁধেছে। তবে শরীরের অন্য কোথাও গুরুতর আঘাত মেলেনি।
নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদ রায়হান বলেন, নুর এখনো শঙ্কামুক্ত নন। মাথার ভেতরে পানি জমাট বাঁধলেও আপাতত অপারেশনের প্রয়োজন নেই বলে ধারণা চিকিৎসকদের। নাক-কান-গলা, চক্ষু, নিউরোসার্জারি ও ক্যাজুয়েলটি বিভাগের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড নুরের চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ করছে। বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, নুর বর্তমানে অক্সিজেন সম্বলিত বেডে ভর্তি আছেন এবং গুরুতর আহত। পরিবার দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছে।
অপরদিকে নুর ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নামে ভুয়া অডিও নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এর নামে একটি ভুয়া বা এআই-সৃষ্ট অডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ২৫ সেকেন্ডের ওই অডিও ক্লিপে তাকে ভিপি নুরের বিষয়ে এক অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিতে শোনা যায় বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে এটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর।
গতকাল শনিবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রকৃতপক্ষে এটি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কণ্ঠ নয়। অডিওটি এআই প্রযুক্তি বা অন্য কোনোভাবে বিকৃত কণ্ঠ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। সচেতন নাগরিকরা সহজেই বুঝতে পারবেন যে এটি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কণ্ঠস্বর নয়। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট’ সহ বিভিন্ন ফেইক ফেসবুক আইডি থেকে ছড়ানো ২৫ সেকেন্ডের ভুয়া অডিও রেকর্ডটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ভিপি নুরের বিষয়ে অজ্ঞাতনামা পুলিশ অফিসারকে নির্দেশনা দিতে শোনা যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এ ধরনের অসত্য ও বিভ্রান্তিকর অডিও রেকর্ড জনমনে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে, যা জনশৃঙ্খলা ও আইনের পরিপন্থী। এতে সমাজে গুজবের সৃষ্টি হচ্ছে এবং জনগণ প্রকৃত তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় ভুয়া অডিও তৈরি ও প্রচারের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুয়া কনটেন্ট তৈরি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কৌশলী প্রচারণায় বিএনপির মনোয়ন প্রত্যাশীরা

আপডেট সময় :

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন। তারা বিভিন্ন কৌশলে তাদের প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। রাজধানীর কোথাও কোথাও তাদের ছবি সম্মিলিত পোষ্টার ফেষ্টুন দেখা যাচ্ছে। যদিও বিএনপির হাই কমান্ড থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন ঘোষণা হয়নি। তবে দলের নীতিনির্ধারক মহলের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় থেকে ঢাকার প্রতিটি আসনে কর্মতৎপরতা চালাচ্ছেন।
ঢাকার মোট ২০ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের নির্বাচনী এলাকার পাড়া মহল্লায় প্রচার প্রচারণা শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে এমপি হতে ঢাকা-১ থেকে শুরু করে ঢাকা-২০ পর্যন্ত ২০ আসনে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এর মধ্যে কোনো কোনো আসনে একাধিক প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন। আবার একই পরিবারের সদস্যরা একটি আসনে মনোনয়ন চাইছেন। দু-একটিতে একক প্রার্থী শক্তিশালীও আছেন। বিভিন্ন কৌশলে হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে মনোয়নের আলোচনায় রয়েছেন মেহনাজ মান্নান, আমানউল্লাহ আমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, তানভীর আহমেদ রবিন, ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, মির্জা আব্বাস, হামিদুর রহমান হামিদ ও আফরোজা আব্বাস। হাবিবুন নবী সোহেল, হাবিবুর রশীদ হাবীব, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, আমিনুল হক, এস এ সিদ্দিক সাজু, কামাল জামান মোল্লা, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. হানিফ ও সুলতানা আহমেদ, হাবিবুন নবী সোহেল, হাবিবুর রশীদ হাবীব, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, এস এ সিদ্দিক সাজু, কামাল জামান মোল্লা, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, সুলতানা আহমেদ।
ঢাকা-১ আসনটি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মাঠে রয়েছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আব্দুল মান্নানের মেয়ে ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নান।
ঢাকা-২ আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড, ঢাকা মেট্রোপলিটন কামরাঙ্গীরচর ও হাজারীবাগ থানা, সাভার উপজেলার আমিনবাজার ইউনিয়ন, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন, কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন (হযরতপুর, কলাতিয়া, তারানগর, শাক্তা, রোহিতপুর, বাস্তা, কালিন্দী, এবং আগানগর ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য আমানউল্লাহ আমান, তার ছেলে ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইরফান ইবনে আমান এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল ধানের শীষ পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন।
ঢাকা-৩ আসনটি ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া, কোন্ডা ও শুভাঢ্যা এই ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও তার পুত্রবধূ ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী ধানের শীষ পেতে চান।
ঢাকা-৪ আসনটি ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন শ্যামপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন আলোচনায় আছেন।
ঢাকা-৫ আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৮, ৪৯, ৫০, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ ধানের শীষ পেতে চান।
ঢাকা-৬ আসন ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। যার অন্তর্ভুক্ত থানা হচ্ছে: ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, কোতয়ালির একাংশ ও বংশালের একাংশ। এর পূর্বে গেন্ডারিয়া, পশ্চিমে সিদ্দিকবাজার, উত্তরে ফুলবাড়িয়া ও দক্ষিণে নাজিরাবাজার। সাবেক মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-৭ আসনটি ঢাকা মহানগরের বংশালের একাংশ, কোতোয়ালির একাংশ, চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ ও ধানমন্ডির একাংশ নিয়ে গঠিত। এ আসনের পূর্বে নাজিরাবাজার, পশ্চিমে হাজারীবাগ, উত্তরে পলাশী ও দক্ষিণে কামরাঙ্গীরচর। এ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হামিদুর রহমান হামিদ, সহ যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সাবেক বিএনপি নেতা প্রয়াত নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-৮ আসন মতিঝিল, শাহবাগ, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বলা যায়। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গভবন, সচিবালয়সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই আসনেই অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ০৮, ০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০, ২১ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
ঢাকা-৯ আসনটি ঢাকা মেট্রোপলিটন খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানাধীন নাসিরাবাদ ইউনিয়ন, দক্ষিণগাঁও ইউনিয়ন ও মান্ডা সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬ ও ০৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।
ঢাকা-৮ ও ৯ দুই আসনেই প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, তার স্ত্রী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। এছাড়া এ দুই আসনের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবীবের নামও শোনা যাচ্ছে।
ঢাকা-১০ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ২২ নং ওয়ার্ড তথা কলাবাগান, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাছির উদ্দীন আহমেদ অসীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম রবি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বোন বিন্দু নির্বাচন করতে পারেন বলেও জানা গেছে।
ঢাকা-১১ আসন ঢাকা মেট্রোপলিটন এর বাড্ডা থানা, ভাটারা থানা, রামপুরা থানা, হাতিরঝিল থানার একাংশ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২১, ২২ , ২৩,৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১,ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইউম এবং তার স্ত্রী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায়।
ঢাকা-১২ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সভাপতি নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, কেন্দ্রীয় সহ অর্থবিষয়ক সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করা মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ মনোনয়নপ্রত্যাশী।
ঢাকা-১৩ আসন ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী এবং সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মনোনয়নের প্রত্যাশায় আছেন।
ঢাকা-১৪ আসন ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি েেকরারেশনের ০৭, ০৮, ০৯, ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে দারুস সালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক এস এ সিদ্দিক সাজু, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন ও যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জগলুল পাশা পাপেল মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
ঢাকা-১৫ আসনটি ঢাকা শহরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ০৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মিল্টন ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মামুন হাসান মনোনয়ন পেতে আশাবাদী।
ঢাকা ১৬ আসন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২, ৩, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তার ত্যাগ ও দৃঢ়তার কথা বিবেচনায় এ আসনটিতে তিনিই যে মনোনয়ন পেতে পারেন তা অনেকটাই নিশ্চিত।
ঢাকা-১৭ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ ওয়ার্ড এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। মূলত গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে এই আসনটি। এ আসনে ‘জিয়া পরিবার’ থেকে কেউ প্রার্থী হবেন বলে আলোচনা চাউর হয়েছে। সেইসঙ্গে বিএনপি নেতা কামাল জামাল মোল্লা ও মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম এর নামও আলোচনায় আছে।
ঢাকা-১৮ আসন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড নং ১, ১৭, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, কফিলউদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান মাঠে রয়েছেন।
ঢাকা-১৯ আসন ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া, ধামসোনা, পাথালিয়া, ইয়ারপুর, আশুলিয়া, বিরুলিয়া, বনগাঁও ইউনিয়ন এবং সাভার ইউনিয়ন ও সাভার পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, ব্যবসায়ী হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ এবং কফিলউদ্দিন প্রচারণায় আছেন।
ঢাকা-২০ আসন ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুবদলের তমিজ উদ্দিন ও তরুণ নেতা ইয়াসিন ফেরদৌস মোরাদ প্রচারণা শুরু করছেন।
আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মূল্যায়নের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্যতার প্রয়োজন। তারপর বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল কি না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাদের কতটা অবদান ছিল, দলের পেছনে কতটা সময় দিয়েছেন এ বিষয়গুলো বিবেচনায় যারা ফিট হবেন, তাদের প্রার্থী করা হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্যতার প্রয়োজন। তারপর বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল কি না, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাদের কতটা অবদান ছিল, দলের পেছনে কতটা সময় দিয়েছেন- এ বিষয়গুলো বিবেচনায় যারা ফিট হবেন, তাদের প্রার্থী করা হবে।
গন অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের জ্ঞান ফিরলেও তিনি শঙ্কা মুক্ত নন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত এবং উন্নত চিকিৎসায় নুরের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ এই মেডিকেল বোর্ড গতকাল দুপুরে বৈঠকে বসেন। তারপরই তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ভিন্ন মাত্রায় নুরের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়েছে। এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক হাসপাতালে ভীড় না করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজধানীর কাকরাইলে হামলায় গুরুতর আহত গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের চিকিৎসায় উচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নুরুল হকের চিকিৎসায় শুক্রবার রাতেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আজ তার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে মেডিকেল বোর্ড আলোচনা করেছে। সে আঙ্গিকে রোর্ডেও পরামর্শ মতে নুরের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ। আজ সকালে ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আবু হানিফ বলেন, ‘নুরের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। জাতীয় পার্টি নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নুরের ওপর হামলা করেছে। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে কর্মসূচি না দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে ফোন আসে।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের পক্ষের শক্তি শঙ্কায় রয়েছে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে শুধু জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী নয়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জন সহযোগী অধ্যাপক জাহিদ রায়হান বলেন, নাক, কান, মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন নুর। মাথা ও নাকের হাড় ভেঙ্গেছে, এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। সকালে নুরুল হক নুরকে সিটি স্ক্যান ও এক্স-রে শেষে আবার আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহিদ রায়হান।
অপরদিকে নুরের ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ
বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলাকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। গত শনিবার ঝিনাইদহে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় নুরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, নুরের মাথায় আঘাতের কারণে রক্তক্ষরণ হয়েছে, নাক ও ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে। বর্তমানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। ডা. মোস্তাক জানান, মাথার সিটিস্ক্যান রিপোর্টে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি সামান্য ফোলা দেখা গেছে। চোখ ও মুখ ফুলে গেছে, ডান চোখে রক্ত জমাট বেঁধেছে। তবে শরীরের অন্য কোথাও গুরুতর আঘাত মেলেনি।
নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদ রায়হান বলেন, নুর এখনো শঙ্কামুক্ত নন। মাথার ভেতরে পানি জমাট বাঁধলেও আপাতত অপারেশনের প্রয়োজন নেই বলে ধারণা চিকিৎসকদের। নাক-কান-গলা, চক্ষু, নিউরোসার্জারি ও ক্যাজুয়েলটি বিভাগের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড নুরের চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ করছে। বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, নুর বর্তমানে অক্সিজেন সম্বলিত বেডে ভর্তি আছেন এবং গুরুতর আহত। পরিবার দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছে।
অপরদিকে নুর ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নামে ভুয়া অডিও নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এর নামে একটি ভুয়া বা এআই-সৃষ্ট অডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ২৫ সেকেন্ডের ওই অডিও ক্লিপে তাকে ভিপি নুরের বিষয়ে এক অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিতে শোনা যায় বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে এটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর।
গতকাল শনিবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রকৃতপক্ষে এটি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কণ্ঠ নয়। অডিওটি এআই প্রযুক্তি বা অন্য কোনোভাবে বিকৃত কণ্ঠ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। সচেতন নাগরিকরা সহজেই বুঝতে পারবেন যে এটি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কণ্ঠস্বর নয়। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট’ সহ বিভিন্ন ফেইক ফেসবুক আইডি থেকে ছড়ানো ২৫ সেকেন্ডের ভুয়া অডিও রেকর্ডটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ভিপি নুরের বিষয়ে অজ্ঞাতনামা পুলিশ অফিসারকে নির্দেশনা দিতে শোনা যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এ ধরনের অসত্য ও বিভ্রান্তিকর অডিও রেকর্ড জনমনে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে, যা জনশৃঙ্খলা ও আইনের পরিপন্থী। এতে সমাজে গুজবের সৃষ্টি হচ্ছে এবং জনগণ প্রকৃত তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় ভুয়া অডিও তৈরি ও প্রচারের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুয়া কনটেন্ট তৈরি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।