মগবাজারে হোটেলে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু
খাবারে ছিলো বিষ

- আপডেট সময় : ১০:৫৯:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে
রাজধানী ঢাকার মগবাজারে একটি হোটেলের রুম থেকে একই পরিবারের ৩ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত রোববার তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা মনির হোসেন, তার স্ত্রী স্বপ্না ও তাদের ছেলে আরাফাত হোসেন নাইম। জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে অসুস্থ ছেলে নাঈম হোসেনের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন সৌদিপ্রবাসী মনির হোসেন ও স্বপ্না আক্তার দম্পতি।
গত শনিবার মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছিলেন তারা। রাতে খাবার খেয়ে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে এক আত্মীয়কে জানান। এরপর দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে খাবারের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশ ও স্বজনরা জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈমের চিকিৎসার জন্য গত শনিবার পরিবারটি ঢাকায় আসে। চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পেয়ে হোটেলে রাত্রি যাপন করেন তারা। তবে গ্রামে থাকলেও ঢাকার পোস্তগোলা এলাকায় মনির হোসেনের একটি পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে। বাড়িটি দেখভাল করেন রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তাকে সঙ্গে নিয়েই মগবাজারের হোটেল সুইট স্লিপে ওঠেন তারা। পাশের একটি খাবারের হোটেল থেকে রাতের খাবার এনে খেয়েছিলেন তারা।
হোটেল সুইট স্লিপের সহকারী ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত শনিবার বিকেলে মনির হোসেন তার প্রতিবন্ধী ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে হোটেলে আসেন। রফিকুল ইসলাম নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে হোটেল ভাড়া করেন। হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেছে, সন্ধ্যার দিকে একটি ব্যাগে করে খাবার নিয়ে আসেন রফিকুল। পরে তিনি চলে যান। রাত আটটার দিকে মনির হোসেন নিচে নামেন। পরে পানি নিয়ে ওপরে উঠে যান মনির।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তারা অসুস্থ হলেও হোটেলের কাউকে কিছু জানাননি। বেলা ১১টার দিকে রফিকুল তার মেয়েকে নিয়ে হোটেলে আসেন। তিনি প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে ধরে পাশের আদ দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে যান। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পরে এসে মনিরকে একই হাসপাতালে নিয়ে যান। কক্ষে রফিকুলের মেয়ের চিৎকার শুনে হোটেলের কর্মচারীরা অচেতন অবস্থায় এই দম্পতির ছেলে নাঈমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আদ দ্বীন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দায়িত্বরত চিকিৎসক সেলিম হোসেন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তারা মারা গেছেন। পরে তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, রাতে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে তিনজন খেয়েছিলেন। সেই খাবার খেয়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা একজন আত্মীয়কে খাবার খাওয়ার পর বমি বমি লাগছে বলে জানিয়েছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটকে ডাকা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, মৃত ব্যক্তিদের ভিসেরা পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। জানা গেছে, মনির হোসেনের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে। মনিরের আরও দুই ছেলে রয়েছে।