ঢাকা ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে রঙিন গাজরের বিপ্লব!

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ২১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল-যেখানে একসময় বন্যা,খরা আর দারিদ্র্য ছিলো নিত্যসঙ্গী-সেখানেই এখন দেখা দিচ্ছে এক নতুন সবুজ বিপ্লবের সম্ভাবনা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও তরুণ গবেষক ড. মো. হারুন অর-রশিদ মনে করেন, উন্নত জাতের গাজর চাষ গাইবান্ধার চরবাসীর জীবন ও অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
বাংলাদেশ একাডেমি অফ সাইন্সেস (BAS) এর আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) গবেষণা ব্যবস্থাপনার তত্বাবধানে ৪০টি দেশি-বিদেশী গাজরের জার্মপ্লাজম/জাত নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর-রশিদ।
গাইবান্ধার কামারজানি চরে চালু হয়েছে একটি বিশেষ পাইলট প্রকল্প। এ প্রকল্পের লক্ষ্য-দেশি ও বিদেশি উচ্চফলনশীল গাজরের নতুন জাত উদ্ভাবন ও মাঠ পর্যায়ে এর বিস্তার ঘটানো।
৪০ জাতের গাজর নিয়ে গবেষণা: ফলন তিনগুণ পর্যন্ত বেশি ড. হারুন অর-রশিদের নেতৃত্বে গবেষক দলটি দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ৪০টি জাতের গাজর নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬টি ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি জাত থেকে বাছাই করা হয়েছে সেরা জাতগুলো।
ফলাফল চমকপ্রদ- দেশে প্রচলিত গাজর চাষে প্রতি হেক্টরে যেখানে গড়ে ১০ থেকে ১১ টন ফলন হয়, সেখানে নবউদ্ভাবিত উন্নত জাতগুলো থেকে পাওয়া গেছে ৩০ থেকে ৪০ টন পর্যন্ত ফলন।
এ ছাড়া এ গাজরগুলো দেশের উষ্ণ ও খরাপ্রবণ অঞ্চলেও টিকে থাকে এবং ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই পূর্ণ ফলন দেয়। প্রতিটি গাজরের গড় ওজন ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়-যা বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।
রঙিন গাজরে পুষ্টির জোয়ার
দেশে একোদিন মূলত কমলা রঙের গাজরই পাওয়া যেতো। কিন্তু ড. হারুনের গবেষণায় পাওয়া গেছে লাল, সাদা, হলুদ ও বেগুনি রঙের গাজর, যা শুধু দেখতে আকর্ষণীয় নয়, বরং পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
এ রঙিন গাজরগুলোতে ভিটামিন-এ, অ্যান্থোসায়ানিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ প্রচলিত জাতের চেয়ে তুলনামুলক বেশি। ফলে এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃদ্‌রোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
অন্যদিকে গাজর থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করা যাবে কেক, আইসক্রিম, পানীয় ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে-যা আমদানিনির্ভর ফুড কালারের বিকল্প তৈরি করবে।
কামারজানির চরে পাইলট প্রকল্পের সাফল্য
সম্প্রতি কামারজানি চরের স্থায়ী বাসিন্দা ও কৃষক তছলিম মিয়া (৩৫) তার নিজস্ব ৩০ শতাংশ পতিত জমিতে এবার উচ্চফলনশীল গাজরের ট্রায়াল চাষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকরা স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও হাতে-কলমে শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি কিভাবে গাজর চাষের জন্য একটি জমি প্রস্তুত করা হয় তার নমুনা হিসাবে মাটি প্রস্তুত, বীজ বপন, সার প্রয়োগ, রোগ দমন ও ফসল তোলা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপেই কৃষকদের শেখানো ছিল মুলত গবেষক টিমের প্রধান কাজ।
চাষাবাদের এ সফল সূচনাকে কেন্দ্র করে কৃষকদের জন্য এক সমাবেশ ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর-রশিদ।
তিনি বলেন, চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষে যেখানে খরচ ও ঝুঁকি বেশি, সেখানে গাজর চাষে চারগুণ পর্যন্ত মুনাফা সম্ভব। এ অঞ্চলের বালুমিশ্রিত ও পলিযুক্ত মাটি গাজরের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
কৃষক, কর্মকর্তা ও গবেষকদের আশাবাদ
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল আলম। তিনি বলেন, চরে ভুট্টার আবাদ কমিয়ে গাজর ও অন্যান্য পুষ্টিকর ফসল চাষ করলে কৃষক স্বল্প খরচে উচ্চ মুনাফা পেতে পারে। চরবাসীর পুষ্টি চাহিদাও মিটবে।
অতিরিক্ত উপপরিচালক (ক্রপ) ও বাকৃবির পিএইচডি ফেলো মো. আবদুল আওয়াল জানান, গাজর চাষে রোগবালাই কম দেখা যায় এবং কীটনাশক ও সার প্রয়োগও তুলনামূলকভাবে কম লাগে। পিঁপড়া ও ছোট পোকামাকড় প্রতিরোধে সামান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলেই যথেষ্ট।
বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা
বাংলাদেশে এখনও গাজরের ৯৯ শতাংশ বীজ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, যার প্রতি কেজির দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। অধিকাংশই হাইব্রিড জাত হওয়ায় পুনরায় বীজ উৎপাদন করা যায় না।
কিন্তু ড. হারুন অর-রশিদের গবেষণা দল ইতোমধ্যে উদ্ভাবিত জাতগুলো থেকে দেশীয়ভাবে বীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের গবেষনাকৃত বীজ হতে গাজরগুলো দেশীয় আবহাওয়ায় ফলন দিচ্ছে, তাই খুব শিগগিরই স্থানীয়ভাবে বীজ উৎপাদন সম্ভব হবে। এতে সরকারের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং কৃষক স্বল্পমূল্যে বীজ পাবে।
কৃষি অর্থনীতিতে নতুন অধ্যায়
এ গবেষণা কেবল চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য নয়, বাংলাদেশের সামগ্রিক কৃষি অর্থনীতির জন্যও এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। যেসব অঞ্চলে আগে ধান বা আলু চাষই ছিলো প্রধান, সেখানে এখন ‘উচ্চফলনশীল গাজর’ চাষের মাধ্যমে বহুমুখী কৃষি বিকাশ ঘটতে পারে।
গবেষক, কৃষি কর্মকর্তা ও স্থানীয় কৃষকদের আশা
গাইবান্ধার চরে এ গাজর চাষ সফল হলে, তা দেশের অন্যান্য চরাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়বে, কৃষকের আয় বাড়াবে, পুষ্টি ঘাটতি কমাবে এবং খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।
গাইবান্ধার কামারজানির চরে এখন গড়ে উঠছে এক ‘রঙিন কৃষি বিপ্লব’- যেখানে বালুময় মাটিতে শিকড় গাড়ছে আশা, পরিশ্রম আর প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। অধ্যাপক হারুন অর-রশিদের মতো তরুণ গবেষকদের হাত ধরে চরাঞ্চলের কৃষকরা এখন দেখছেন স্বপ্ন-যেখানে চরের কৃষিতে যুক্ত, গাজর চাষে জীবন বদলে দিতে পারে একজন কৃষকের। নতুন ফসলের দুয়ার উন্মোচনের মাধ্যমে গাইবান্ধার কামারজানির চরে কোন একদিন গাজর চাষ হতে পারে অপার সম্ভাবনার।
একটা ভবিষ্যৎ, যেখানে গাজরের রঙে বদলে যাবে জীবনের রঙ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে রঙিন গাজরের বিপ্লব!

আপডেট সময় :

গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল-যেখানে একসময় বন্যা,খরা আর দারিদ্র্য ছিলো নিত্যসঙ্গী-সেখানেই এখন দেখা দিচ্ছে এক নতুন সবুজ বিপ্লবের সম্ভাবনা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও তরুণ গবেষক ড. মো. হারুন অর-রশিদ মনে করেন, উন্নত জাতের গাজর চাষ গাইবান্ধার চরবাসীর জীবন ও অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
বাংলাদেশ একাডেমি অফ সাইন্সেস (BAS) এর আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) গবেষণা ব্যবস্থাপনার তত্বাবধানে ৪০টি দেশি-বিদেশী গাজরের জার্মপ্লাজম/জাত নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর-রশিদ।
গাইবান্ধার কামারজানি চরে চালু হয়েছে একটি বিশেষ পাইলট প্রকল্প। এ প্রকল্পের লক্ষ্য-দেশি ও বিদেশি উচ্চফলনশীল গাজরের নতুন জাত উদ্ভাবন ও মাঠ পর্যায়ে এর বিস্তার ঘটানো।
৪০ জাতের গাজর নিয়ে গবেষণা: ফলন তিনগুণ পর্যন্ত বেশি ড. হারুন অর-রশিদের নেতৃত্বে গবেষক দলটি দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ৪০টি জাতের গাজর নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬টি ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি জাত থেকে বাছাই করা হয়েছে সেরা জাতগুলো।
ফলাফল চমকপ্রদ- দেশে প্রচলিত গাজর চাষে প্রতি হেক্টরে যেখানে গড়ে ১০ থেকে ১১ টন ফলন হয়, সেখানে নবউদ্ভাবিত উন্নত জাতগুলো থেকে পাওয়া গেছে ৩০ থেকে ৪০ টন পর্যন্ত ফলন।
এ ছাড়া এ গাজরগুলো দেশের উষ্ণ ও খরাপ্রবণ অঞ্চলেও টিকে থাকে এবং ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই পূর্ণ ফলন দেয়। প্রতিটি গাজরের গড় ওজন ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়-যা বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।
রঙিন গাজরে পুষ্টির জোয়ার
দেশে একোদিন মূলত কমলা রঙের গাজরই পাওয়া যেতো। কিন্তু ড. হারুনের গবেষণায় পাওয়া গেছে লাল, সাদা, হলুদ ও বেগুনি রঙের গাজর, যা শুধু দেখতে আকর্ষণীয় নয়, বরং পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
এ রঙিন গাজরগুলোতে ভিটামিন-এ, অ্যান্থোসায়ানিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ প্রচলিত জাতের চেয়ে তুলনামুলক বেশি। ফলে এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃদ্‌রোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
অন্যদিকে গাজর থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করা যাবে কেক, আইসক্রিম, পানীয় ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে-যা আমদানিনির্ভর ফুড কালারের বিকল্প তৈরি করবে।
কামারজানির চরে পাইলট প্রকল্পের সাফল্য
সম্প্রতি কামারজানি চরের স্থায়ী বাসিন্দা ও কৃষক তছলিম মিয়া (৩৫) তার নিজস্ব ৩০ শতাংশ পতিত জমিতে এবার উচ্চফলনশীল গাজরের ট্রায়াল চাষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকরা স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও হাতে-কলমে শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি কিভাবে গাজর চাষের জন্য একটি জমি প্রস্তুত করা হয় তার নমুনা হিসাবে মাটি প্রস্তুত, বীজ বপন, সার প্রয়োগ, রোগ দমন ও ফসল তোলা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপেই কৃষকদের শেখানো ছিল মুলত গবেষক টিমের প্রধান কাজ।
চাষাবাদের এ সফল সূচনাকে কেন্দ্র করে কৃষকদের জন্য এক সমাবেশ ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর-রশিদ।
তিনি বলেন, চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষে যেখানে খরচ ও ঝুঁকি বেশি, সেখানে গাজর চাষে চারগুণ পর্যন্ত মুনাফা সম্ভব। এ অঞ্চলের বালুমিশ্রিত ও পলিযুক্ত মাটি গাজরের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
কৃষক, কর্মকর্তা ও গবেষকদের আশাবাদ
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল আলম। তিনি বলেন, চরে ভুট্টার আবাদ কমিয়ে গাজর ও অন্যান্য পুষ্টিকর ফসল চাষ করলে কৃষক স্বল্প খরচে উচ্চ মুনাফা পেতে পারে। চরবাসীর পুষ্টি চাহিদাও মিটবে।
অতিরিক্ত উপপরিচালক (ক্রপ) ও বাকৃবির পিএইচডি ফেলো মো. আবদুল আওয়াল জানান, গাজর চাষে রোগবালাই কম দেখা যায় এবং কীটনাশক ও সার প্রয়োগও তুলনামূলকভাবে কম লাগে। পিঁপড়া ও ছোট পোকামাকড় প্রতিরোধে সামান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলেই যথেষ্ট।
বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা
বাংলাদেশে এখনও গাজরের ৯৯ শতাংশ বীজ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, যার প্রতি কেজির দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। অধিকাংশই হাইব্রিড জাত হওয়ায় পুনরায় বীজ উৎপাদন করা যায় না।
কিন্তু ড. হারুন অর-রশিদের গবেষণা দল ইতোমধ্যে উদ্ভাবিত জাতগুলো থেকে দেশীয়ভাবে বীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের গবেষনাকৃত বীজ হতে গাজরগুলো দেশীয় আবহাওয়ায় ফলন দিচ্ছে, তাই খুব শিগগিরই স্থানীয়ভাবে বীজ উৎপাদন সম্ভব হবে। এতে সরকারের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং কৃষক স্বল্পমূল্যে বীজ পাবে।
কৃষি অর্থনীতিতে নতুন অধ্যায়
এ গবেষণা কেবল চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য নয়, বাংলাদেশের সামগ্রিক কৃষি অর্থনীতির জন্যও এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। যেসব অঞ্চলে আগে ধান বা আলু চাষই ছিলো প্রধান, সেখানে এখন ‘উচ্চফলনশীল গাজর’ চাষের মাধ্যমে বহুমুখী কৃষি বিকাশ ঘটতে পারে।
গবেষক, কৃষি কর্মকর্তা ও স্থানীয় কৃষকদের আশা
গাইবান্ধার চরে এ গাজর চাষ সফল হলে, তা দেশের অন্যান্য চরাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়বে, কৃষকের আয় বাড়াবে, পুষ্টি ঘাটতি কমাবে এবং খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।
গাইবান্ধার কামারজানির চরে এখন গড়ে উঠছে এক ‘রঙিন কৃষি বিপ্লব’- যেখানে বালুময় মাটিতে শিকড় গাড়ছে আশা, পরিশ্রম আর প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। অধ্যাপক হারুন অর-রশিদের মতো তরুণ গবেষকদের হাত ধরে চরাঞ্চলের কৃষকরা এখন দেখছেন স্বপ্ন-যেখানে চরের কৃষিতে যুক্ত, গাজর চাষে জীবন বদলে দিতে পারে একজন কৃষকের। নতুন ফসলের দুয়ার উন্মোচনের মাধ্যমে গাইবান্ধার কামারজানির চরে কোন একদিন গাজর চাষ হতে পারে অপার সম্ভাবনার।
একটা ভবিষ্যৎ, যেখানে গাজরের রঙে বদলে যাবে জীবনের রঙ।