গুজব ও শঙ্কায় সারাদেশ
- আপডেট সময় : ২৬ বার পড়া হয়েছে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ জানা যাবে আগামী ১৩ নভেম্বর। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২৩ অক্টোবর এ তারিখ নির্ধারণ করে। এ দিনকে ঘিরে দেখা দিয়েছে নানা শঙ্কা। ঢাকাসহ সারাদেশে বিরাজ করছে উত্তেজনা। অপরদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সঙ্গে ধর্মীয় সহাবস্থানে বিঘ্ন ঘটানোর যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের কেপিআই, পাওয়ায়র প্ল্যান্ট, বন্দর, সরকারের স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোকে নিñিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সঙ্গে ধর্মীয় সহাবস্থানে বিঘ্ন ঘটানোর যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
এদিকেএগিয়ে আসছে নির্বাচনের দিনও। এ অবস্থায় দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ফেলতে অনলাইনে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে নানা গুজব, হুমকি আর ষড়যন্ত্রের বার্তা।
বিভিন্ন পোস্টে বলা হচ্ছে, ১৩ তারিখ রাজধানীতে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিকল্পনা চলছে। লকডাউন কার্যকর, সরকারি স্থাপনায় হামলা আর বাসে আগুন দেওয়ার মতো অপতৎপরতার প্রস্তুতি নিচ্ছে নিষিদ্ধ দলটি- এমন তথ্যও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এসব তথ্যের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঝুঁকি এড়াতে সব তথ্য গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে বিশৃঙ্খলা ঠেকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রাজধানীসহ সারাদেশে চেকপোস্ট, তল্লাশি আর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অভিযান আরও জোরদার হবে গতকাল সোমবার থেকে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
এবিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া শাখার উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি। কেউ নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় থেকে লোক জড়ো করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করতে চাইলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। গোয়েন্দা নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে। আশা করি নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
অপরদিকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদারে সরকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি যাত্রীবাহী বাস ভাংচুর ও বাসে অগ্নি সংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সঙ্গে ধর্মীয় সহাবস্থানে বিঘ্ন ঘটানোর যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল এবং সেন্ট জোসেফ স্কুল প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণসহ একাধিক ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রেস উইং আরও জানায়, ডিএমপি এই সহিংসতায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে সমন্বয় করে শহর জুড়ে অভিযান জোরদার করেছে।
এবিষয়ে বিবৃতিতে সরকার জানিয়েছে, রাজধানীর সব গির্জা এবং সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আন্তঃধর্মীয় ঐক্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার তার দৃঢ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
গতকাল সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকার চারটি জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং ফরহাদ মজহারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনার সীমানার ভেতরে এবং সামনের সড়কে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধানমন্ডি-২৭ নম্বরের প্রধান সড়কে মাইডাস সেন্টারের সামনে এবং ধানমন্ডি-৯ এর ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনেও দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে সম্প্রতি ককটেল হামলার ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে তাকে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।






















