জয়পুরহাটে নবান্ন মেলায় বাহারি মাছের পসরা
- আপডেট সময় : ১০:৫৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে
অগ্রহায়ণ মানেই চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী, অসাম্প্রদায়িক ও মাটির সাথে মিশে থাকা অটুট বন্ধনযুক্ত নবান্ন উৎসবের মাস। এক সময় ঢেঁকির সুরেলা শব্দ জানান দিতো নবান্নর এই উৎসবের। আর সেই নবান্ন উৎসবকে ফুটিয়ে তুলতে জয়পুরহাটে পসরা সেজে বসেছে এতিহ্যবাহী নবান্নের মাছের মেলা।
মেলায় সারি সারি দোকানগুলোতে চোখে পড়ে মন-জুড়ানো বাহারি মাছের পসরা। দূরদূরান্ত থেকে মাছ বিক্রির জন্য এসেছেন বিক্রেতারা । দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো মাছগুলোর প্রায় সবই বড় আকারের। ছোট মাছ নেই বললেই চলে। আছে বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ও পাঙাশ মাছ। চাষ করা মাছের পাশাপাশি নদীর বাঘাইড়, গাঙচিতল এবং দু-এক ধরনের সামুদ্রিক মাছও উঠেছে এ মেলায়। আকার ও প্রকারভেদে প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-১৮০০ টাকায় ।
জানা গেছে, নবান্ন উৎসবে প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে এখানে মাছের মেলা বসে। মেলায় অংশ নেন উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, মাদারপুর, হাটশর, হারুঞ্জা, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ আশপাশের ২৫-৩০ গ্রামের মানুষ। উৎসবে প্রতি বাড়িতেই মেয়ে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে করা হয় নিমন্ত্রণ । আর দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন মেলায় মাছ কিনতে।
কথা হয় মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাকের সাথে। তিনি বলেন, ক্ষেতলাল থেকে মাছ কিনতে এসেছি। কয়েক বছর ধরেই এই মাছের মেলা থেকে মাছ কিনি। এখানে অনেক বড় বড় মাছ পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করি। গত বছরের চেয়ে এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে, তবে দামটা একটু বেশি।
মেলায় মোজাম্মেল হোসেন এসেছেন তার নাতীকে নিয়ে, একটি মাছ কিনেছেন ৬ হাজার টাকা দিয়ে। নাতি-নাতনী মেয়ে-জামাইসহ নিকট আত্মীয়দের দাওয়াত করেছেন। সবাইকে নতুন চালের ভাত এবং পছন্দের মাছ খাওয়াবেন বলে জানান মোজাম্মেল ।
মাছ ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী বলেন, এবারের মাছের মেলায় অনেক লোক সমাগম হলেও মাছ বিক্রি সেই তুলনায় কিছুটা কম। তারপরও যেটুকু হয়েছে,সব খরচ বাদে লাভ ভালোই থাকবে।
মৎস্য চাষী আনোয়ার বলেন, মেলা সামনে রেখে এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে রেখেছিলাম। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছি।
তিনি বলেন, মেলায় বহু ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের দেখে ভালো লাগছে। আসলে বাঙালি জীবন থেকে উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা হলেও প্রশান্তির দেখো মেলে।
পাঁচশিরা মাছের মেলার ইজারাদার রেজাউল করিম বলেন, প্রতি বছর এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসব বিরাজ করে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এ মেলায় ৫০-৬০টি স্টলের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা এবার কম করে হলেও কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা করবেন।