জলমগ্ন শহরে নির্ঘুম রাত কাটচ্ছে সুনামগঞ্জবাসীর
- আপডেট সময় : ১০:২৬:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪ ২২৭ বার পড়া হয়েছে
সিলেটে জুন মাসে গড়ে ৮৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কিন্তু এবারে মাসের প্রথম ১৭ দিনেই বৃষ্টিপাত হয়েছে ১,৫৪৬ মিলিমিটার। যা গড় অপেক্ষা ৮৪ শতাংশ বেশি। বাকিদিনগুলোতে তা আরও বড়বে। ২০২২ সালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিপাত অঞ্চলের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের ১২২ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছিল
জলমগ্ন শহর। নির্ঘুম রাত কাটচ্ছে সুনামগঞ্জবাসীর। সুনামগঞ্জের উজানে মেঘালয়। সেখানের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত। সেই পানি নেমে এসে ভাটির সুনামগঞ্জ ও সিলেট প্লাবিত।
২০২২ সালের ১৭ জুন ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বেশিরভাগ এলাকা। গভীর রাতে চোখের পলকেই তলিয়ে যায় পুরো শহর। একতলা বাড়ির বাসিন্দারা প্রাণ রক্ষায় উঁচু ঘরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাতের অন্ধকারে ভেসে যায় বহু গবাদিপশু। ভারী বর্ষণ হলেই সেই দুঃস্মৃতি তাড়া করে সুনামগঞ্জের মানুষকে।
উজানের ঢলের সঙ্গে স্থানীয় বৃষ্টিপাতের পানি যুক্ত হয়ে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অবণতি ঘটেছে। লাখো মানুষ বানভাসি। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির।
আজ বুধবার (১৯ জুন) ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এমনটা ঘটলে সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবণতি ঘটবে।
আগামী পাঁচদিন ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পুর্বাভাস রয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের। সেই সঙ্গে ২৩ জুন পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সকল নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। তাতে সুনামগঞ্জ ও সিলেটে দীর্ঘ স্থায়ী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেটে জুন মাসে গড়ে ৮৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কিন্তু এবারে মাসের প্রথম ১৭ দিনেই বৃষ্টিপাত হয়েছে ১,৫৪৬ মিলিমিটার। যা গড় অপেক্ষা ৮৪ শতাংশ বেশি। বাকিদিনগুলোতে তা আরও বড়বে। ২০২২ সালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিপাত অঞ্চলের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের ১২২ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছিল। এমন তথ্য জানালেন আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।
২০২২ সালে মারাত্মক বন্যার কথা উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদ বলেন, বানভাসি মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। তাদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নেবে। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালের মতোই বড় আকারের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এবার হাওরাঞ্চলের মানুষের ঈদের আনন্দ ভেসে গেছে। সোমবার (১৭ জুন) ঈদের দিন ভোরেই সুরমা নদীর পানি উপচে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার মধ্যেই মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করতে পারলেও অনেকেই যথাসময়ে পশু কোরবানি করতে পারেননি।
বুধবার (১৯ জুন) ভোরেই ফের শুরু হচ্ছে ভারী বৃষ্টিপাত। সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায়ও বৃষ্টিপাত হবে। এতে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।