ঢাকা ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

দেখা মিলেনি ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন না থাকায় দেশের বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসেই রাজধানীতে পাঠনো হচ্ছে আম

আমের মৌসুম প্রায় শেষ পর্যায়ে। রংপুর ও রাজশাহীর বিখ্যাত রসালো আম যাচ্ছে ঢাকায়। যাচ্চে দেশের বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসে। এ বছর আমের ভরা মৌসুমে আম চাষীদের কাছে দেখা মিলেনি ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের। যার কারণে এবছর মাত্র দেড় টাকায় রাজধানীতে আম পাঠানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন আম চাষীরা। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ আমের সুজনের আগ মুহুর্ত্বে বলেছিল খুব শিগরই ষষ্ঠবারের মতো ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ চালু হচ্ছে। সম্ভাব্য তারিখও দেয়া হয়েছিল। যা গেল ১০ই জুন। কোনো ক্রমেই ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালু করা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভিতরের খবরে জানা গেল, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সরকার পরিবর্তনের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। সম্প্রতি ফের চালু হওয়ার কথা ছিল ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। এই ট্রেনে প্রতিকেজি আমের ভাড়া মাত্র ১ টাকা ৪৩ পয়সায় (প্রতিকেজি) । ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকা আসছে যমুনা সেতুর উপর দিয়ে। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছেড়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে রাত সোয়া ২টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। ট্রেনটি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই শেষে পুনরায় চালানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। নিরাপদে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে আম পরিবহনের লক্ষ্যে গত ১০ই জুন পুনরায় চালু হতে গিয়েও হলো না ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রচন্ড দাবদাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ আগেই বাজারে এসেছে রংপুরের জিআই ট্যাগপ্রাপ্ত ঐতিহ্যবাহী হাঁড়িভাঙ্গা আম। জুনের তীব্র গরমে গাছে আগেভাগেই আম পেকে যাওয়ায় নির্ধারিত সময় ২০ জুনের বদলে ১৩ জুন থেকেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এই জনপ্রিয় জাতের আম। আকারভেদে প্রতিমণ হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত। ভালো ফলনে সন্তুষ্ট আমচাষিরা আশাবাদী এবার লাভজনক মৌসুম কাটবে। কিন্তু ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন না থাকায় দেশের বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসেই রাজধানীতে পাঠনো হচ্ছে আম।
এদিকে হাঁড়িভাঙ্গা আমকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরতে গবেষণা ও রফতানিমুখী উদ্যোগ নিচ্ছে রংপুর জেলা প্রশাসন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ হাটে আমচাষি ও পাইকারদের ব্যস্ত সময়। হাঁড়িভাঙ্গা আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত এ বাজারে দিনভর চলে আমের লেনদেন।
এদিকে রাজশাহীর পদাগঞ্জ এলাকার আম ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমের আকার কিছুটা ছোট হলেও ফলন আশানুরূপ। গরমের কারণে দশ দিন আগেই আম পাড়া শুরু হয়েছে। বর্তমানে আকার ভেদে প্রতিমণ আম এক হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাপমাত্রা কমলে আমের বাজার আরও চাঙা হবে।
স্থানীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় আম কিনতে আসা আরিফুল হক বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আমের স্বাদই আলাদা। আমি আত্মীয়-স্বজনদের কুরিয়ারে পাঠানোর জন্য কিনেছি। দাম স্বাভাবিক, তবে আরও একটু কম হলে ভালো হতো। পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে, তাই বেশি করে কিনে খাওয়ার চেষ্টা করি।
অনলাইনে আম বিক্রেতা তরুণ উদ্যোক্তা জারিফ মাহমুদ বলেন, কয়েক বছর ধরে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাঁড়িভাঙ্গা আম সরবরাহ করছি। এবার মৌসুমের শুরুতেই পাঁচ মণ আমের অর্ডার পেয়েছি। আকারভেদে এক হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার টাকা দরে অর্ডার নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় পাঠাতে ক্যারেট, প্যাকিং ও কুরিয়ার খরচ পড়ছে এক হাজার টাকা, ঢাকার বাইরে এক হাজার ২০০ টাকা।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আম নিয়ে গবেষণা চলছে এবং রফতানির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আমকে আরও সুস্বাদু ও গুণগতমানসম্পন্ন করে তুলতে কাজ করছি। শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও এই আমকে জনপ্রিয় করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আম বাজারজাত করতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য জেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে হাঁড়িভাঙ্গা আম থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বাজার তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে ব্যবসায়িরা জানান, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের উৎপাদিত আমের একটি বড় অংশ চলে যায় ঢাকায়। বেশির ভাগ আমই যায় কুরিয়ার সার্ভিসে। এ ছাড়া আম পরিবহনের জন্য ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে থাকেন ট্রাক। কুরিয়ারে আম পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই তা নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এ সকল বিষয়গুলো মাথায় রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়ে আসে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’। গত বছর এ সেবা চালু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও এই ট্রেন সেবা চালু ছিল। সাধারণ মানুষ ও অনলাইনে আম ব্যবসায় যুক্তদের অনেকেই কুরিয়ারের আম পাঠাতে শুরু করেন।
রাজশাহী অ্যাগ্রো ফুডস প্রডিউসার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনটি চালু রাখার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম। বিশেষ করে মানুষের মাঝে এই ট্রেন সম্পর্কে তথ্য প্রচার করার বিষয়ে। কিন্তু তারা এসব কিছু করেনি। এ নিয়ে প্রচার থাকলে মানুষ জানত ও ট্রেনের প্রতি অনেকেই আগ্রহী হতো। শুধু আমের বিষয় না, এখানকার সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ঢাকায় পাঠানোর জন্য এই ট্রেনটি সারা বছরই চালু রাখা যেতে পারে।
আম পরিবহনকারী অন্য ব্যবসায়ীরা বলেন, সার্ভিসটি কুরিয়ারের চেয়ে ভালো ও সাশ্রয়ী। কুরিয়ারে কখন আম পৌঁছবে তা নিশ্চিত নয়। এছাড়া আম যত্নে যায় না। তবে তারা ফোন করে খবর দেয়। এছাড়া ট্রেনের আরেকটি সমস্যা শুধু শুরুর ও শেষের দুই স্টেশন পর্যন্ত আম আনা ও নেওয়ার বাড়তি বিষয়টি। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, অনলাইন আম ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি পর্যায়ে সার্ভিসটি ভালো। ক্রমান্বয়ে এটি জনপ্রিয় হবে। তবে এটি আরও পূর্বে চালু হলে ভালো হতো।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দেখা মিলেনি ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের

আপডেট সময় : ১০:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন না থাকায় দেশের বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসেই রাজধানীতে পাঠনো হচ্ছে আম

আমের মৌসুম প্রায় শেষ পর্যায়ে। রংপুর ও রাজশাহীর বিখ্যাত রসালো আম যাচ্ছে ঢাকায়। যাচ্চে দেশের বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসে। এ বছর আমের ভরা মৌসুমে আম চাষীদের কাছে দেখা মিলেনি ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের। যার কারণে এবছর মাত্র দেড় টাকায় রাজধানীতে আম পাঠানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন আম চাষীরা। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ আমের সুজনের আগ মুহুর্ত্বে বলেছিল খুব শিগরই ষষ্ঠবারের মতো ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ চালু হচ্ছে। সম্ভাব্য তারিখও দেয়া হয়েছিল। যা গেল ১০ই জুন। কোনো ক্রমেই ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালু করা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভিতরের খবরে জানা গেল, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সরকার পরিবর্তনের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। সম্প্রতি ফের চালু হওয়ার কথা ছিল ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। এই ট্রেনে প্রতিকেজি আমের ভাড়া মাত্র ১ টাকা ৪৩ পয়সায় (প্রতিকেজি) । ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকা আসছে যমুনা সেতুর উপর দিয়ে। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছেড়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে রাত সোয়া ২টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। ট্রেনটি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই শেষে পুনরায় চালানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। নিরাপদে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে আম পরিবহনের লক্ষ্যে গত ১০ই জুন পুনরায় চালু হতে গিয়েও হলো না ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রচন্ড দাবদাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ আগেই বাজারে এসেছে রংপুরের জিআই ট্যাগপ্রাপ্ত ঐতিহ্যবাহী হাঁড়িভাঙ্গা আম। জুনের তীব্র গরমে গাছে আগেভাগেই আম পেকে যাওয়ায় নির্ধারিত সময় ২০ জুনের বদলে ১৩ জুন থেকেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এই জনপ্রিয় জাতের আম। আকারভেদে প্রতিমণ হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত। ভালো ফলনে সন্তুষ্ট আমচাষিরা আশাবাদী এবার লাভজনক মৌসুম কাটবে। কিন্তু ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন না থাকায় দেশের বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসেই রাজধানীতে পাঠনো হচ্ছে আম।
এদিকে হাঁড়িভাঙ্গা আমকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরতে গবেষণা ও রফতানিমুখী উদ্যোগ নিচ্ছে রংপুর জেলা প্রশাসন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ হাটে আমচাষি ও পাইকারদের ব্যস্ত সময়। হাঁড়িভাঙ্গা আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত এ বাজারে দিনভর চলে আমের লেনদেন।
এদিকে রাজশাহীর পদাগঞ্জ এলাকার আম ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমের আকার কিছুটা ছোট হলেও ফলন আশানুরূপ। গরমের কারণে দশ দিন আগেই আম পাড়া শুরু হয়েছে। বর্তমানে আকার ভেদে প্রতিমণ আম এক হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তাপমাত্রা কমলে আমের বাজার আরও চাঙা হবে।
স্থানীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় আম কিনতে আসা আরিফুল হক বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আমের স্বাদই আলাদা। আমি আত্মীয়-স্বজনদের কুরিয়ারে পাঠানোর জন্য কিনেছি। দাম স্বাভাবিক, তবে আরও একটু কম হলে ভালো হতো। পরিবারের সবাই খুব পছন্দ করে, তাই বেশি করে কিনে খাওয়ার চেষ্টা করি।
অনলাইনে আম বিক্রেতা তরুণ উদ্যোক্তা জারিফ মাহমুদ বলেন, কয়েক বছর ধরে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাঁড়িভাঙ্গা আম সরবরাহ করছি। এবার মৌসুমের শুরুতেই পাঁচ মণ আমের অর্ডার পেয়েছি। আকারভেদে এক হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার টাকা দরে অর্ডার নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় পাঠাতে ক্যারেট, প্যাকিং ও কুরিয়ার খরচ পড়ছে এক হাজার টাকা, ঢাকার বাইরে এক হাজার ২০০ টাকা।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আম নিয়ে গবেষণা চলছে এবং রফতানির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আমকে আরও সুস্বাদু ও গুণগতমানসম্পন্ন করে তুলতে কাজ করছি। শুধু দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও এই আমকে জনপ্রিয় করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আম বাজারজাত করতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য জেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে হাঁড়িভাঙ্গা আম থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বাজার তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অপরদিকে ব্যবসায়িরা জানান, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের উৎপাদিত আমের একটি বড় অংশ চলে যায় ঢাকায়। বেশির ভাগ আমই যায় কুরিয়ার সার্ভিসে। এ ছাড়া আম পরিবহনের জন্য ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে থাকেন ট্রাক। কুরিয়ারে আম পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই তা নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এ সকল বিষয়গুলো মাথায় রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়ে আসে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’। গত বছর এ সেবা চালু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও এই ট্রেন সেবা চালু ছিল। সাধারণ মানুষ ও অনলাইনে আম ব্যবসায় যুক্তদের অনেকেই কুরিয়ারের আম পাঠাতে শুরু করেন।
রাজশাহী অ্যাগ্রো ফুডস প্রডিউসার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনটি চালু রাখার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম। বিশেষ করে মানুষের মাঝে এই ট্রেন সম্পর্কে তথ্য প্রচার করার বিষয়ে। কিন্তু তারা এসব কিছু করেনি। এ নিয়ে প্রচার থাকলে মানুষ জানত ও ট্রেনের প্রতি অনেকেই আগ্রহী হতো। শুধু আমের বিষয় না, এখানকার সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ঢাকায় পাঠানোর জন্য এই ট্রেনটি সারা বছরই চালু রাখা যেতে পারে।
আম পরিবহনকারী অন্য ব্যবসায়ীরা বলেন, সার্ভিসটি কুরিয়ারের চেয়ে ভালো ও সাশ্রয়ী। কুরিয়ারে কখন আম পৌঁছবে তা নিশ্চিত নয়। এছাড়া আম যত্নে যায় না। তবে তারা ফোন করে খবর দেয়। এছাড়া ট্রেনের আরেকটি সমস্যা শুধু শুরুর ও শেষের দুই স্টেশন পর্যন্ত আম আনা ও নেওয়ার বাড়তি বিষয়টি। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, অনলাইন আম ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি পর্যায়ে সার্ভিসটি ভালো। ক্রমান্বয়ে এটি জনপ্রিয় হবে। তবে এটি আরও পূর্বে চালু হলে ভালো হতো।