ঢাকা ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার কাছে বাকাসসের স্মারকলিপি পেশ

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১০:৩৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ ৯৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চলতি বছরের ২৫ মে জারিকরা সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশের (নং ২৬, ২০২৫) বেশকিছু বিধান সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে। এই অধ্যাদেশটি সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর একটি সংশোধনী হলেও, এর ধারাগুলো কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার ও কর্মপরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমন বক্তব্য পেশ করে অধ্যাদেশের বেশকিছু ধারা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত স্মারকলিপি পেশ করেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস)।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি হাজী মো: মুসা খান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আশ্রাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিভাগীয় তদন্ত ও যথাযথ শুনানির সুযোগ ব্যতিরেকে সরাসরি শাস্তি প্রদানের যে বিধান রাখা হয়েছে, তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এটি কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার গর্ব করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
বাকাসসের স্মারকলিপিতে বলা হয়, অধ্যাদেশে উল্লেখিত “অবাধ্যতা বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ” এবং “অন্য কর্মচারীকে কাজ থেকে বিরত থাকতে প্ররোচনা” এর মতো অপরাধগুলোর সংজ্ঞা অস্পষ্ট ও ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে। এর ফলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে যেকোনো কর্মচারীকে হযরানি করার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, নির্ধারিত ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব এবং পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে দণ্ড আরোপের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান – এই প্রক্রিয়াটি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত স্বল্প সময়। এর ফলে তাদের পক্ষে অভিযোগের সঠিক জবাব দেয়া এবং নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করা কঠিন হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, উল্লেখিত অপরাধের জন্য পদাবনতি, নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেয়া, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্তের মতো কঠোর শাস্তির বিধান অযৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হয়। ক্ষেত্রবিশেষে এটি কর্মচারীদের জন্য চরম অবিচার বয়ে আনবে।
স্মারকলিপিতে প্রধান উপদেষ্টার দৃস্টি আকর্শন করে বাকাসস নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো আইনেই কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার ও কর্মজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এই অধ্যাদেশটি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করবে, যা তাদের কর্মস্পৃহা ও দক্ষতার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এতে সরকারি সেবা প্রদান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আপনার কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, সরকারি কর্মচারীদের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” এর উল্লিখিত ধারাসমূহ সংশোধনপূর্বক সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায্য আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আমরা আপনার সহানুভূতিশীল পদক্ষেপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

প্রধান উপদেষ্টার কাছে বাকাসসের স্মারকলিপি পেশ

আপডেট সময় : ১০:৩৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

চলতি বছরের ২৫ মে জারিকরা সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশের (নং ২৬, ২০২৫) বেশকিছু বিধান সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে। এই অধ্যাদেশটি সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর একটি সংশোধনী হলেও, এর ধারাগুলো কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার ও কর্মপরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমন বক্তব্য পেশ করে অধ্যাদেশের বেশকিছু ধারা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত স্মারকলিপি পেশ করেছে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাসস)।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি হাজী মো: মুসা খান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আশ্রাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিভাগীয় তদন্ত ও যথাযথ শুনানির সুযোগ ব্যতিরেকে সরাসরি শাস্তি প্রদানের যে বিধান রাখা হয়েছে, তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এটি কর্মচারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার গর্ব করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
বাকাসসের স্মারকলিপিতে বলা হয়, অধ্যাদেশে উল্লেখিত “অবাধ্যতা বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ” এবং “অন্য কর্মচারীকে কাজ থেকে বিরত থাকতে প্ররোচনা” এর মতো অপরাধগুলোর সংজ্ঞা অস্পষ্ট ও ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে। এর ফলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে যেকোনো কর্মচারীকে হযরানি করার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, নির্ধারিত ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব এবং পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে দণ্ড আরোপের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান – এই প্রক্রিয়াটি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত স্বল্প সময়। এর ফলে তাদের পক্ষে অভিযোগের সঠিক জবাব দেয়া এবং নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করা কঠিন হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, উল্লেখিত অপরাধের জন্য পদাবনতি, নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেয়া, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্তের মতো কঠোর শাস্তির বিধান অযৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হয়। ক্ষেত্রবিশেষে এটি কর্মচারীদের জন্য চরম অবিচার বয়ে আনবে।
স্মারকলিপিতে প্রধান উপদেষ্টার দৃস্টি আকর্শন করে বাকাসস নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো আইনেই কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার ও কর্মজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এই অধ্যাদেশটি সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করবে, যা তাদের কর্মস্পৃহা ও দক্ষতার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এতে সরকারি সেবা প্রদান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আপনার কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, সরকারি কর্মচারীদের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” এর উল্লিখিত ধারাসমূহ সংশোধনপূর্বক সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায্য আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আমরা আপনার সহানুভূতিশীল পদক্ষেপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।