ঢাকা ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

বার বার আগুনে পুড়ছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন, দায় কার

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪ ২৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

এশিয়ার ফুঁসফুঁস বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন অক্সিজেন ও কার্বনের এক সুবিশাল ভান্ডার। বায়ু মন্ডলে এ বন প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমানে অক্সিজেন প্রদান করে চলেছে। প্রাণীর জীবন ধারক অক্সিজেন ও কার্বনডাই অক্সাইডের আদান-প্রদানের মাধ্যমে সুন্দরবন স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছে। অথচ আমাদের নীতিনির্ধারকদের কাছে সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন।

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বার বার কেন সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের রেকন? সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা কি প্রাকৃতিক, না কি মানবসৃষ্ট? অগ্নিকান্ডে সুন্দরবনের কেমন ক্ষতি কতটুকু? সুন্দরবনের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কি বনবিভাগ দায় এড়াতে পারে? সর্বোপরি সুন্দরবনের গর্বিত অভিভাবক হিসেবে অগ্নিকান্ডের কবল থেকে সুন্দরবন রক্ষায় আমদের করণীয় কি?

এমন প্রশ্ন ওঠে এসেছে সংবাদ সম্মেলনে। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার যৌথভাবে মোংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রশ্ন উত্তাপন করেন আয়োজকরা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার সমন্বয়কারী-সুন্দরবন রক্ষায় আমরা মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, আমরা মনে করি সুন্দরবনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা মানবসৃষ্ট এবং পরিকল্পিত। বার বার সুন্দরবনে অগ্নিকান্ডের ফলে সামগ্রিক ভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। বড়গাছসহ লতাগুল্ম মারা যায়। প্রাণীকূলের আবাসসস্থ ও প্রজননসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বনের শৃংখলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রভাব পড়ে প্রাণীকূলের খাদ্যচক্রে। অগ্নিকান্ডে বন্যপ্রাণীরা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অগ্নিকান্ডের এই ঘটনায় বনবিভাগ কোন ভাবেই দায় এড়াতে পারেনা।

তিনি বলেন, সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চল হলেও আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি অঞ্চলে চোরা শিকারীসহ মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। গণমাধ্যমে এসেছে গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৫/২৬ বার আগুন লেগেছে; সরকারি হিসেবে প্রায় শতাধিক একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বনকর্মর্তাদের যোগসাজশে বারে বারে সুন্দরবনে আগুন লাগানো হচ্ছে। সুতরাং এর দায়ভার বনবিভাগকেই নিতে হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠি-পরিবেশকর্মী-সংবাদকর্মী- গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা, সুন্দরবনে অপরিকল্পিত খাল খনন এবং অতীতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার কারনেই সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া এলাকায় চার বছর পরে আবারো অগ্নিকান্ড সংগঠিত হলো।

মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, নীতিনির্ধারকদের কাছে সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন থাকলেও একজন বনজীবির কাছে সুন্দরবনের আর্থিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। সুন্দরবন সংলগ্ন প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ বনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুান্ত্রিক সেবা প্রদান করে।

এক গবেষণা প্রতিবেদনে সুন্দরবনের ২৪টি প্রতিবেশসেবার কথা উঠে এসেছে। প্রতি হেক্টর সুন্দরবনের প্রতিবেশসেবার আর্থিকমূল্য ৪৫৬ থেকে ১ হাজার ১৯২ মার্কিন ডলার। এ হিসেবে বছরে আমাদের সুন্দরবন ২৭ কোটি ৭১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ প্রতিবেশসেবা প্রদান করে চলেছে। দুঃখজনক হলেও বিগত সময়ে আগুন লাগার ঘটনায় কেবলমাত্র বনবিভাগের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৫বার জেলে-বনজীবি-মৌয়াল, ৪বার দাবদাহ, ৪বার মাছ আহরণ এবং ৪বার আক্রোশমূলক ঘটনাকে দায়ী করেছেন। যদিও এই তদন্ত রিপোর্টরে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে; তারপরে বলতে চাই আগুন লাগার জন্য যাদের দায়ী করা হলো তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হলো না। অপরাধীদের কেন গ্রেফতার করা হলো না। অদক্ষ মৌয়ালদের কারনে যদি আগুন লেগে থাকে তাহলে মৌয়ালদের দক্ষ করার দায়িত্ব কার। আমাদের প্রশ্ন মৌয়ালদের কারনে কেন সুন্দরবনের অন্য অঞ্চলে আগুন লাগে না। কেন মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলার আমুরবুনিয়া, ধানসাগর, নাংলী, রাজাপুর এলাকার একই জায়গায় বারে বারে আগুন লাগছে?

এই পরিবেশ কর্মী আরও বলেন, আগুন জ্বললেও বনবিভাগের উদাসীনতায় প্রথম দিকে আগুন নেভাতে বিলম্বে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে মনে করি। আগুনে প্রায় ৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। বাংলাদেশের ফুঁসফুঁস সুন্দরবন রক্ষায় বনবিভাগ, স্থানীয় জনগণ, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুন্দরবনের মধ্যে মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। আমরা মনে করি আমুরবুনিয়ার আগুন লাগার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অগ্নিকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবেনা। বিগত সময়ের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কারন অনুসন্ধান করতে যেয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠিদের সাথে আলাপকালে বনবিভাগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তাই এশিয়ার ফুঁসফুঁস সুন্দরবনের মানবসৃষ্ট অগ্নিকান্ডের রহস্য উন্মোচন এবং এই ধরনের জঘন্য কর্মকান্ডে বন্ধে বনবিভাগ ও অনান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, পরিবেশকর্মী, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবনে অগ্নিকান্ড বন্ধে ১০ দফা সুপারিশে উপস্থাপন করে বলা হয়, অগ্নিকান্ডের কারণ জানতে ও অগ্নিকান্ড বন্ধে বনবিভাগ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী, নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, সংবাদকর্মী, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সংগঠনের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

অগ্নিকান্ডে বিগত দিনের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সুন্দরবনের লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ওয়াচটাওয়ার নির্মান করতে হবে। বনের মধ্যে অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন রক্ষায় স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সচেতন করতে হবে এবং সুন্দরবনের মধ্যে অপরিকল্পিত খাল খনন বন্ধ করা ইত্যাদি।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বার বার আগুনে পুড়ছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন, দায় কার

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

 

এশিয়ার ফুঁসফুঁস বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন অক্সিজেন ও কার্বনের এক সুবিশাল ভান্ডার। বায়ু মন্ডলে এ বন প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমানে অক্সিজেন প্রদান করে চলেছে। প্রাণীর জীবন ধারক অক্সিজেন ও কার্বনডাই অক্সাইডের আদান-প্রদানের মাধ্যমে সুন্দরবন স্থানীয় জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছে। অথচ আমাদের নীতিনির্ধারকদের কাছে সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন।

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বার বার কেন সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের রেকন? সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা কি প্রাকৃতিক, না কি মানবসৃষ্ট? অগ্নিকান্ডে সুন্দরবনের কেমন ক্ষতি কতটুকু? সুন্দরবনের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কি বনবিভাগ দায় এড়াতে পারে? সর্বোপরি সুন্দরবনের গর্বিত অভিভাবক হিসেবে অগ্নিকান্ডের কবল থেকে সুন্দরবন রক্ষায় আমদের করণীয় কি?

এমন প্রশ্ন ওঠে এসেছে সংবাদ সম্মেলনে। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার যৌথভাবে মোংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রশ্ন উত্তাপন করেন আয়োজকরা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার সমন্বয়কারী-সুন্দরবন রক্ষায় আমরা মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, আমরা মনে করি সুন্দরবনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা মানবসৃষ্ট এবং পরিকল্পিত। বার বার সুন্দরবনে অগ্নিকান্ডের ফলে সামগ্রিক ভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। বড়গাছসহ লতাগুল্ম মারা যায়। প্রাণীকূলের আবাসসস্থ ও প্রজননসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বনের শৃংখলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রভাব পড়ে প্রাণীকূলের খাদ্যচক্রে। অগ্নিকান্ডে বন্যপ্রাণীরা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অগ্নিকান্ডের এই ঘটনায় বনবিভাগ কোন ভাবেই দায় এড়াতে পারেনা।

তিনি বলেন, সুন্দরবন সংরক্ষিত বনাঞ্চল হলেও আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি অঞ্চলে চোরা শিকারীসহ মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। গণমাধ্যমে এসেছে গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৫/২৬ বার আগুন লেগেছে; সরকারি হিসেবে প্রায় শতাধিক একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বনকর্মর্তাদের যোগসাজশে বারে বারে সুন্দরবনে আগুন লাগানো হচ্ছে। সুতরাং এর দায়ভার বনবিভাগকেই নিতে হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠি-পরিবেশকর্মী-সংবাদকর্মী- গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা, সুন্দরবনে অপরিকল্পিত খাল খনন এবং অতীতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার কারনেই সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া এলাকায় চার বছর পরে আবারো অগ্নিকান্ড সংগঠিত হলো।

মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, নীতিনির্ধারকদের কাছে সুন্দরবন আজও গুরুত্বহীন থাকলেও একজন বনজীবির কাছে সুন্দরবনের আর্থিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। সুন্দরবন সংলগ্ন প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ বনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবন গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুান্ত্রিক সেবা প্রদান করে।

এক গবেষণা প্রতিবেদনে সুন্দরবনের ২৪টি প্রতিবেশসেবার কথা উঠে এসেছে। প্রতি হেক্টর সুন্দরবনের প্রতিবেশসেবার আর্থিকমূল্য ৪৫৬ থেকে ১ হাজার ১৯২ মার্কিন ডলার। এ হিসেবে বছরে আমাদের সুন্দরবন ২৭ কোটি ৭১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ প্রতিবেশসেবা প্রদান করে চলেছে। দুঃখজনক হলেও বিগত সময়ে আগুন লাগার ঘটনায় কেবলমাত্র বনবিভাগের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৫বার জেলে-বনজীবি-মৌয়াল, ৪বার দাবদাহ, ৪বার মাছ আহরণ এবং ৪বার আক্রোশমূলক ঘটনাকে দায়ী করেছেন। যদিও এই তদন্ত রিপোর্টরে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে; তারপরে বলতে চাই আগুন লাগার জন্য যাদের দায়ী করা হলো তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হলো না। অপরাধীদের কেন গ্রেফতার করা হলো না। অদক্ষ মৌয়ালদের কারনে যদি আগুন লেগে থাকে তাহলে মৌয়ালদের দক্ষ করার দায়িত্ব কার। আমাদের প্রশ্ন মৌয়ালদের কারনে কেন সুন্দরবনের অন্য অঞ্চলে আগুন লাগে না। কেন মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলার আমুরবুনিয়া, ধানসাগর, নাংলী, রাজাপুর এলাকার একই জায়গায় বারে বারে আগুন লাগছে?

এই পরিবেশ কর্মী আরও বলেন, আগুন জ্বললেও বনবিভাগের উদাসীনতায় প্রথম দিকে আগুন নেভাতে বিলম্বে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে মনে করি। আগুনে প্রায় ৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। বাংলাদেশের ফুঁসফুঁস সুন্দরবন রক্ষায় বনবিভাগ, স্থানীয় জনগণ, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুন্দরবনের মধ্যে মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। আমরা মনে করি আমুরবুনিয়ার আগুন লাগার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অগ্নিকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবেনা। বিগত সময়ের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কারন অনুসন্ধান করতে যেয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠিদের সাথে আলাপকালে বনবিভাগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তাই এশিয়ার ফুঁসফুঁস সুন্দরবনের মানবসৃষ্ট অগ্নিকান্ডের রহস্য উন্মোচন এবং এই ধরনের জঘন্য কর্মকান্ডে বন্ধে বনবিভাগ ও অনান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, পরিবেশকর্মী, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবনে অগ্নিকান্ড বন্ধে ১০ দফা সুপারিশে উপস্থাপন করে বলা হয়, অগ্নিকান্ডের কারণ জানতে ও অগ্নিকান্ড বন্ধে বনবিভাগ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী, নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, সংবাদকর্মী, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সংগঠনের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

অগ্নিকান্ডে বিগত দিনের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সুন্দরবনের লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ওয়াচটাওয়ার নির্মান করতে হবে। বনের মধ্যে অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন রক্ষায় স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সচেতন করতে হবে এবং সুন্দরবনের মধ্যে অপরিকল্পিত খাল খনন বন্ধ করা ইত্যাদি।