বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ, পাসপোর্টযাত্রীদের ভোগান্তি
- আপডেট সময় : ১১:৫০:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৫৯ বার পড়া হয়েছে
যানজট নিরসনের লক্ষ্যে কয়েকদিন আগে যশোরের জেলা প্রশাসকের সাথে স্থানীয় সুধীসমাজ এবং পরিবহন কর্মকর্তাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বেনাপোল চেকপোস্ট এবং বেনাপোল বাজার থেকে যেসব পরিবহন বেনাপোল-যশোর-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ছেড়ে যায় সেগুলো এখন থেকে বেনাপোল বাজার থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে পৌর বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়তে হবে। আর ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা পরিবহন বাসগুলোর যাত্রী ভোরে বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে সেগুলো আবার টার্মিনালে চলে যাবে।
এরপর হঠাৎ করে গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পরিবহন বাসগুলোর যাত্রীদের টার্মিনালে জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়ায় ওই যাত্রীরা হয়রানির শিকার হন। কোনোকিছু না জানিয়ে প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে বাস মালিক সমিতি শনিবার সকাল থেকে আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) পর্যন্ত সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে।
পাসপোর্টযাত্রীদের অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী ভারতের পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সঙ্গেই নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী টার্মিনাল। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে চালু টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে অনেক দূরে অবস্থিত টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের।
পাসপোর্টযাত্রী মেহেদী রায়হান উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে এসে সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পৌর বাস টার্মিনালে রাত ৩টার সময় নামিয়ে দিয়েছে। পরে দুই ঘণ্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকালে একটা ইজিবাইকে করে বর্ডারে এসেছি। আমরা চাই, চেকপোস্টে অবস্থিত বন্দর কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বাসগুলো ছাড়ুক।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর থেকে আমরা তাদের নির্দেশনা মতো চলছিলাম। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলোর পাসপোর্টযাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে খালি বাস পৌর বাস টার্মিনালে চলে যাচ্ছিল।
হঠাৎ করে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বাসগুলোর যাত্রীদের জোরপূর্বক টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং হয়রানির শিকার হয়। পরে তাদের লোকাল বাসে করে চেকপোস্টে পাঠান টার্মিনালে থাকা পৌরসভার লোকজন।
পরিবহনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, লোকাল গাড়ি যদি চেকপোস্টে যেতে পারে তাহলে আমাদের পরিবহন বাসগুলো চেকপোস্টে যাত্রী নামাতে পারবে না কেন? আমাদের পরিবহন বাসগুলো তো কোনও যানজটের সৃষ্টি করে না বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অহেতুক দাঁড়িয়ে থাকে না। তাহলে কেন আমাদের সঙ্গে এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করছে প্রশাসন? প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে পরিবহন মালিক সমিতি শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে কোন গাড়ি ছাড়েনি এবং শনিবার বেনাপোল থেকে সকল ধরনের পরিবহন বাস এবং দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখেছে মালিক সমিতি।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পৌর প্রশাসক ও শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান বলেন, আমরা তো চেকপোস্টের বাস টার্মিনাল বন্ধ করিনি। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী টার্মিনালের গেট বন্ধ রেখেছে।
টার্মিনালের গেট বন্ধ থাকার কারণে শুক্রবার গভীর রাতে গাড়িগুলোর যাত্রী পৌর বাস টার্মিনালে নামিয়ে দিয়েছিল। শনিবার ভোরের দিকেও চেকপোস্টে যাত্রী নিয়ে গাড়ি গেছে। রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস চেকপোস্টে গেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, একটা সমস্যা হলে তার সমাধানও আছে। বাস মালিক প্রতিনিধিরা তো আমার সঙ্গে আলোচনা করতে পারতো? তারা একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য এসব করেছেন। আলোচনা না করেই বাস বন্ধ রেখেছে, এটা সঠিক কাজ করেনি।