ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

ময়মনসিংহে ক্লিনিকে চাঁদাবাজি ও হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জহির রায়হান, ময়মনসিংহ
  • আপডেট সময় : ০৫:০৫:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসায়ী ও সেবাদানকারীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর চরপাড়া মোড়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেয় নগরীর শতাধিক বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও সংশিস্নষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠন।
‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছি’ মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি একাধিক সন্ত্রাসীচক্র বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না দিলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কর্মচারীদের মারধর করা হচ্ছে এবং রোগীদের সামনে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামসুদ্দোহা মাসুম বলেন, “আমরা দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। অথচ এখন নিজের জীবন ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। এটা কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিদিন ক্লিনিকে রোগী আসে, জরুরি চিকিৎসা চলে। এমন পরিস্থিতিতে যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে চিকিৎসা চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। প্রশাসনের কাছে আমাদের স্পষ্ট দাবি—এই হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।”
আরেক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “শুধু ক্লিনিক নয়, পুরো শহরে এখন একটি আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আজ নিরাপত্তাহীন। যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে।”
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক পাপ্পু বলেন, “এটি শুধু একটি ক্লিনিকের বিষয় নয়, এটি ময়মনসিংহের সম্মান ও ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতার প্রশ্ন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন।”
হামলার শিকার ভুক্তভোগী শাপলা নার্সিংহোম এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিক হারুন অর রশিদ বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠানে কয়েকদিন আগে কয়েকজন এসে চাঁদা দাবি করে। আমি না দিলে তারা আমার ওপর হামলা চালায়, প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, স্টাফদের গালিগালাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা দিনরাত ভয়ে থাকি।”
ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক মালিকদের আশ্বস্ত করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, কেউ চাঁদা দাবি করলে, আমাদের কাছে অভিযোগ দেন, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, সিরাম হাসপাতালের পরিচালক শরিফ আহমেদ সুমন, সন্ধানী ক্লিনিকের পরিচালক মো: ইলিয়াস রব্বানী রিয়াজ, রাজধানী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আরিফুল ইসলামসহ প্রমূখ। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চরপাড়া মোড় থেকে শুরু হয়ে বাঘমারা, ব্রাহ্মপলস্নী, চরপাড়া হয়ে মেডিকেল কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা স্লোগানে স্লোগানে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ময়মনসিংহে ক্লিনিকে চাঁদাবাজি ও হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৫:০৫:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসায়ী ও সেবাদানকারীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর চরপাড়া মোড়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেয় নগরীর শতাধিক বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও সংশিস্নষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠন।
‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছি’ মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি একাধিক সন্ত্রাসীচক্র বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না দিলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কর্মচারীদের মারধর করা হচ্ছে এবং রোগীদের সামনে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামসুদ্দোহা মাসুম বলেন, “আমরা দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। অথচ এখন নিজের জীবন ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। এটা কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিদিন ক্লিনিকে রোগী আসে, জরুরি চিকিৎসা চলে। এমন পরিস্থিতিতে যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে চিকিৎসা চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। প্রশাসনের কাছে আমাদের স্পষ্ট দাবি—এই হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।”
আরেক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “শুধু ক্লিনিক নয়, পুরো শহরে এখন একটি আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আজ নিরাপত্তাহীন। যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে।”
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক পাপ্পু বলেন, “এটি শুধু একটি ক্লিনিকের বিষয় নয়, এটি ময়মনসিংহের সম্মান ও ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতার প্রশ্ন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন।”
হামলার শিকার ভুক্তভোগী শাপলা নার্সিংহোম এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিক হারুন অর রশিদ বলেন, “আমার প্রতিষ্ঠানে কয়েকদিন আগে কয়েকজন এসে চাঁদা দাবি করে। আমি না দিলে তারা আমার ওপর হামলা চালায়, প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, স্টাফদের গালিগালাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা দিনরাত ভয়ে থাকি।”
ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক মালিকদের আশ্বস্ত করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, কেউ চাঁদা দাবি করলে, আমাদের কাছে অভিযোগ দেন, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, সিরাম হাসপাতালের পরিচালক শরিফ আহমেদ সুমন, সন্ধানী ক্লিনিকের পরিচালক মো: ইলিয়াস রব্বানী রিয়াজ, রাজধানী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আরিফুল ইসলামসহ প্রমূখ। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চরপাড়া মোড় থেকে শুরু হয়ে বাঘমারা, ব্রাহ্মপলস্নী, চরপাড়া হয়ে মেডিকেল কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা স্লোগানে স্লোগানে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।