ঢাকা ০৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের রক্ষায় জরুরী পদক্ষেপের পরামর্শ জাতিসংঘের

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

মালয়েশিয়ায় বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করছেন অভিবাসী শ্রমিকরা (ছবি-সংগৃহীত)

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি, উভয় দেশের সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত

এ ধরনের কার্যক্রম অগ্রহণযোগ্য এবং শেষ হওয়া দরকার

মালয়েশিয়ায় ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কর্মী নিয়োগের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা

 

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে উত্তরণের পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

মালয়েশিয়ায় ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কর্মী নিয়োগের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। বাংলাদেশি শ্রমিকরা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়ায় গিয়ে বেকার অবস্থায় মাসের পর মাস কাটিয়ে দিয়েও কোন কাজ পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় তাদের জীবনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

অথচ ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে মালয়েশিয়া গিয়ে তারা এখন চরম মানবিক বিপর্যের মধ্যে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, মালয়েশিয়ায় ও বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তরা এসব প্রক্রিয়ায় সঙ্গে জড়িত।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অতি দ্রুত বাংলাদেশি শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘের বিষয়টি মালয়েশিয়া সরকারকে জরুরী ভিত্তিতে হস্তক্ষেপেরও পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থার বিশেষজ্ঞরা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেন, গত কয়েক মাস ধরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা অসম্মানজনক অবস্থায় বসবাস করছেন। দেশটির সরকারের প্রতি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তাদের শোষণসহ অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বেশির ভাগ অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেখেন, তাদের যে কাজের কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছে, সেই কর্মসংস্থান নেই। এ অবস্থায় তাদের সেখানে থাকতে বাধ্য করা হয়। এর ফলে গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশি কর্মীরা।

বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের ভুয়া প্রতিষ্ঠানে প্রতারণামূলক নিয়োগের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। আর অভিবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে পরিচালিত একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী এই কর্মের সঙ্গে যুক্ত এবং উভয় দেশের সংশ্লিষ্টরা কিছু ব্যক্তিরা বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তারা তথ্য পেয়েছেন, উভয় সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের কার্যক্রম অগ্রহণযোগ্য এবং শেষ হওয়া দরকার। এই শোষণমূলক নিয়োগের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা উভয় দেশকে বিষয়টি তদন্ত করে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে শ্রম অভিবাসনকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে।

দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের এই অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা শুক্রবার জেনেভা থেকে সংস্থাটির পাঠানো বিবৃতিতে সবিস্তারে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুরবস্থা চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, কর্মসংস্থানের আশায় সরকারি নিয়ম মেনে দেশটিতে গিয়ে বাংলাদেশি কর্মীরা এখন চরম দুরবস্থায় রয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে এর আগে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের রক্ষায় জরুরী পদক্ষেপের পরামর্শ জাতিসংঘের

আপডেট সময় : ০৮:১৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি, উভয় দেশের সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত

এ ধরনের কার্যক্রম অগ্রহণযোগ্য এবং শেষ হওয়া দরকার

মালয়েশিয়ায় ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কর্মী নিয়োগের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা

 

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে উত্তরণের পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

মালয়েশিয়ায় ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কর্মী নিয়োগের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। বাংলাদেশি শ্রমিকরা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়ায় গিয়ে বেকার অবস্থায় মাসের পর মাস কাটিয়ে দিয়েও কোন কাজ পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় তাদের জীবনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

অথচ ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে মালয়েশিয়া গিয়ে তারা এখন চরম মানবিক বিপর্যের মধ্যে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, মালয়েশিয়ায় ও বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তরা এসব প্রক্রিয়ায় সঙ্গে জড়িত।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অতি দ্রুত বাংলাদেশি শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘের বিষয়টি মালয়েশিয়া সরকারকে জরুরী ভিত্তিতে হস্তক্ষেপেরও পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থার বিশেষজ্ঞরা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেন, গত কয়েক মাস ধরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা অসম্মানজনক অবস্থায় বসবাস করছেন। দেশটির সরকারের প্রতি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তাদের শোষণসহ অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বেশির ভাগ অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেখেন, তাদের যে কাজের কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছে, সেই কর্মসংস্থান নেই। এ অবস্থায় তাদের সেখানে থাকতে বাধ্য করা হয়। এর ফলে গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশি কর্মীরা।

বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের ভুয়া প্রতিষ্ঠানে প্রতারণামূলক নিয়োগের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। আর অভিবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে পরিচালিত একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী এই কর্মের সঙ্গে যুক্ত এবং উভয় দেশের সংশ্লিষ্টরা কিছু ব্যক্তিরা বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তারা তথ্য পেয়েছেন, উভয় সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের কার্যক্রম অগ্রহণযোগ্য এবং শেষ হওয়া দরকার। এই শোষণমূলক নিয়োগের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা উভয় দেশকে বিষয়টি তদন্ত করে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে শ্রম অভিবাসনকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে।

দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের এই অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা শুক্রবার জেনেভা থেকে সংস্থাটির পাঠানো বিবৃতিতে সবিস্তারে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুরবস্থা চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, কর্মসংস্থানের আশায় সরকারি নিয়ম মেনে দেশটিতে গিয়ে বাংলাদেশি কর্মীরা এখন চরম দুরবস্থায় রয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে এর আগে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।