ঢাকা ০৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

তহসিল অফিসে ঘুষ বানিজ্য, বাতিল খতিয়ানেও দাখিলা

মোটা টাকার বিনিময়ে বাতিল খতিয়ানের দাখিলা দিচ্ছেন তহসিলদার

এস এম হুমায়ুন কবির, কক্সবাজার
  • আপডেট সময় : ৪২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কক্সবাজারের রামুর ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার সলিম উল্লাহ জমির বাতিল খতিয়ানেও দাখিলা দিচ্ছেন, এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তহসিলদার বাতিল ঘোষিত খতিয়ানের জমির দাখিলা প্রদান করছেন, যা আইনত সম্পূর্ণ বেআইনি।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে সরকারি আদেশের মাধ্যমে কক্সবাজারে কিছু বন্দোবস্তী খতিয়ান
বাতিল ঘোষণা করা হলেও তহসিলদার সলিম দালালচক্রের সহায়তায় নির্দিষ্ট কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে অবৈধভাবে দাখিলা প্রদান করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি খতিয়ান দাখিলায় নেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের ঘুষ।
প্রতিবেদকের হাতে আসা কাগজপত্রে চলমান প্রশাসনিক দুর্নীতির একটি বাস্তব ও উদ্বেগজনক চিত্র প্রতিয়মান হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৫ই মার্চ দক্ষিণ মিঠাছড়ি মৌজার ৮৩৫ নং খতিয়ানের দাখিলা কাটা হয়েছে। একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাজারকুল মৌজার ১৮৮২ নং খতিয়ানেরও দাখিলা কাটা হয়েছে। অথচ এসব বন্দোবস্তী খতিয়ান স্থগিত করা হয়েছিল কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের এক আদেশে।
সচেতন মহলের অভিমত, ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত তহসিলদাররা জনগণের সেবক হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় সেবা না দিয়ে অর্থলোভে বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়েন। তাদের কেউ কেউ নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ঘুষ ও অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে এমন কাগজপত্র বা দাখিলা প্রদান করেন, যা আইনত অবৈধ ও অন্যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, বাতিল খতিয়ানে দাখিলা দেওয়া আইনগত অপরাধ। তাছাড়া এমন ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন, যাতে ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ হয় এবং নিরীহ জমির মালিকেরা হয়রানি থেকে রক্ষা পান।
এদিকে ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার সলিম উল্লাহকে মুঠোফোনে স্থগিত খতিয়ানের দাখিলা কাটা যায় কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,মুখস্থ কিছু বলা উচিত হবে না। আগামীকাল অফিসে গিয়ে খতিয়ান দেখে আপনাকে জানাবো।
অন্যদিকে অ্যাডভোকেট শিপ্ত বড়ুয়া বলেন,তহসিলদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার সকল খতিয়ান সংরক্ষিত থাকে। সেখানে স্থগিত খতিয়ানের দাখিলা প্রদানের বিষয়টিতে স্পষ্ট প্রতিয়মান যে তহসিলদার অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এমন কাজ করেছেন। যেটি আইনগতভাবে অপরাধ। এসব গুরুতর দূর্নীতির ঘটনায় দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাপূর্বক শাস্তি না হলে এসব অপরাধ থামবে না।
এ বিষয়ে রামু সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বরূপ মুহুরীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

তহসিল অফিসে ঘুষ বানিজ্য, বাতিল খতিয়ানেও দাখিলা

মোটা টাকার বিনিময়ে বাতিল খতিয়ানের দাখিলা দিচ্ছেন তহসিলদার

আপডেট সময় :

কক্সবাজারের রামুর ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার সলিম উল্লাহ জমির বাতিল খতিয়ানেও দাখিলা দিচ্ছেন, এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তহসিলদার বাতিল ঘোষিত খতিয়ানের জমির দাখিলা প্রদান করছেন, যা আইনত সম্পূর্ণ বেআইনি।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে সরকারি আদেশের মাধ্যমে কক্সবাজারে কিছু বন্দোবস্তী খতিয়ান
বাতিল ঘোষণা করা হলেও তহসিলদার সলিম দালালচক্রের সহায়তায় নির্দিষ্ট কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে অবৈধভাবে দাখিলা প্রদান করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি খতিয়ান দাখিলায় নেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের ঘুষ।
প্রতিবেদকের হাতে আসা কাগজপত্রে চলমান প্রশাসনিক দুর্নীতির একটি বাস্তব ও উদ্বেগজনক চিত্র প্রতিয়মান হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৫ই মার্চ দক্ষিণ মিঠাছড়ি মৌজার ৮৩৫ নং খতিয়ানের দাখিলা কাটা হয়েছে। একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাজারকুল মৌজার ১৮৮২ নং খতিয়ানেরও দাখিলা কাটা হয়েছে। অথচ এসব বন্দোবস্তী খতিয়ান স্থগিত করা হয়েছিল কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের এক আদেশে।
সচেতন মহলের অভিমত, ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত তহসিলদাররা জনগণের সেবক হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় সেবা না দিয়ে অর্থলোভে বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়েন। তাদের কেউ কেউ নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ঘুষ ও অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে এমন কাগজপত্র বা দাখিলা প্রদান করেন, যা আইনত অবৈধ ও অন্যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, বাতিল খতিয়ানে দাখিলা দেওয়া আইনগত অপরাধ। তাছাড়া এমন ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত দাবি করেছেন, যাতে ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ হয় এবং নিরীহ জমির মালিকেরা হয়রানি থেকে রক্ষা পান।
এদিকে ধেছুয়াপালং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার সলিম উল্লাহকে মুঠোফোনে স্থগিত খতিয়ানের দাখিলা কাটা যায় কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,মুখস্থ কিছু বলা উচিত হবে না। আগামীকাল অফিসে গিয়ে খতিয়ান দেখে আপনাকে জানাবো।
অন্যদিকে অ্যাডভোকেট শিপ্ত বড়ুয়া বলেন,তহসিলদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার সকল খতিয়ান সংরক্ষিত থাকে। সেখানে স্থগিত খতিয়ানের দাখিলা প্রদানের বিষয়টিতে স্পষ্ট প্রতিয়মান যে তহসিলদার অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এমন কাজ করেছেন। যেটি আইনগতভাবে অপরাধ। এসব গুরুতর দূর্নীতির ঘটনায় দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাপূর্বক শাস্তি না হলে এসব অপরাধ থামবে না।
এ বিষয়ে রামু সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বরূপ মুহুরীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।