ঢাকা ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

যে কোনো পরিস্থিতিতে আগামী জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন – প্রধান উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলো এগিয়ে নিতে যে কোনো পরিস্থিতিতেই আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বুধবার জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। চারদিনের সরকারি সফরে আজই টোকিও পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। জাপানের স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিওতে পৌঁছান ড. ইউনূস। তিনি নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়ায় অংশ নেওয়া এবং জাপানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করার জন্য এ সফরে রয়েছেন।
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং জাপানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো আসো বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। তিনি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য সাধারণ নির্বাচন অত্যাবশ্যক বলে মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে—সংস্কার, ঘাতকদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ঋণ পরিশোধে অগ্রগতি অর্জনসহ অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছে সরকার।
পূর্ববর্তী সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছিল। যুবসমাজেরই উদ্যোগে আমি দায়িত্ব নিয়েছি, কারণ তারা চায় দেশে স্থিতি ফিরুক, সমস্যার সমাধান হোক’- বলেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি আরও বলেন, গত ১০ মাসে আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা জাপান দিয়েছে। এজন্য আমি জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই সফর মূলত একটি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সফর। অধ্যাপক ইউনূস তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যেন তিনি সরাসরি পরিবর্তনগুলো দেখতে পারেন।
আসো এবং তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন জাপানি সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর হলে বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা আরও বাড়বে। বাংলাদেশ আশা করছে আগামী আগস্টের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই চুক্তি সই হবে। চুক্তি সই হলে জাপান হবে বাংলাদেশে প্রথম ইপিএ স্বাক্ষরকারী দেশ। প্রধান উপদেষ্টা জাপানি সংসদ সদস্যদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের কথাও তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন জানাতে জাপানের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বে অন্য কোনো শরণার্থী সংকটের মতো নয়। তারা অন্য কোনো দেশে যেতে চাইছে না, তারা শুধু নিজেদের ঘরে ফিরতে চায়। সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

যে কোনো পরিস্থিতিতে আগামী জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন – প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলো এগিয়ে নিতে যে কোনো পরিস্থিতিতেই আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বুধবার জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। চারদিনের সরকারি সফরে আজই টোকিও পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। জাপানের স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিওতে পৌঁছান ড. ইউনূস। তিনি নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়ায় অংশ নেওয়া এবং জাপানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করার জন্য এ সফরে রয়েছেন।
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং জাপানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো আসো বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। তিনি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য সাধারণ নির্বাচন অত্যাবশ্যক বলে মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে—সংস্কার, ঘাতকদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ঋণ পরিশোধে অগ্রগতি অর্জনসহ অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছে সরকার।
পূর্ববর্তী সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছিল। যুবসমাজেরই উদ্যোগে আমি দায়িত্ব নিয়েছি, কারণ তারা চায় দেশে স্থিতি ফিরুক, সমস্যার সমাধান হোক’- বলেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি আরও বলেন, গত ১০ মাসে আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা জাপান দিয়েছে। এজন্য আমি জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই সফর মূলত একটি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সফর। অধ্যাপক ইউনূস তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যেন তিনি সরাসরি পরিবর্তনগুলো দেখতে পারেন।
আসো এবং তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন জাপানি সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর হলে বাংলাদেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা আরও বাড়বে। বাংলাদেশ আশা করছে আগামী আগস্টের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই চুক্তি সই হবে। চুক্তি সই হলে জাপান হবে বাংলাদেশে প্রথম ইপিএ স্বাক্ষরকারী দেশ। প্রধান উপদেষ্টা জাপানি সংসদ সদস্যদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের কথাও তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন জানাতে জাপানের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বে অন্য কোনো শরণার্থী সংকটের মতো নয়। তারা অন্য কোনো দেশে যেতে চাইছে না, তারা শুধু নিজেদের ঘরে ফিরতে চায়। সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।