শরীয়তপুরে ফিরছেন মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু
- আপডেট সময় : ১০৮ বার পড়া হয়েছে
মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপু রাজনৈতিক পরিমলে বহুল আলোচিত এক নাম। রাজপথের আন্দোলনে নেতৃত্ব থেকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো, উদ্দেশ্যপ্রণোদীত ও মিথ্যা মামলায় আইনি লড়াইয়ে খালাস পাওয়া, বিএনপির দলীয় আদর্শে অবিচল ও দৃঢ় পথচলা তাঁর বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনেরই অংশ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে নিষ্ঠা, সাহস ও তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপু নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন আগেই। দলীয় সিন্ধান্ত ও নির্দেশণায় ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি এখনো এক ক্লান্তিহীন সৈনিক। শরীয়তপুরের এই কীর্তিমান সন্তানকে নিয়ে নিজ জেলায় গণমানুষের আগ্রহের শেষ নেই।

মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপু ছাত্র রাজনীতি থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের দায়িত্ব পালন করতে করতেই তিনি তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি পান। দীর্ঘদিন ধরে তারেক রহমানের পাশে থেকে দলীয় কার্যক্রম, সাংগঠনিক যোগাযোগ এবং নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখেন তিনি। বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নেতৃত্বের বাইরে থেকেও তিনি দলের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হন।
তারেক রহমানের আস্থাভাজন মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপু রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি শরীয়তপুর-৩ (ডাম্ড্ডুা-ভেদরগজ্ঞ-গোসাইরহাট) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। সূত্রমতে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন এমনটা প্রায় নিশ্চিৎ। নির্বাচনী প্রচারণায় তার উপস্থিতি, জনসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম তাকে দ্রুতই স্থানীয় পর্যায়েও জনপ্রিয় করে তুলছে। একই সাথে জনপ্রিয়তা যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চাপ ও আইনি ঝামেলা।
২০১৯ সালে নির্বাচনের আগে মতিঝিল এলাকা থেকে প্রায় আট কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর রিরুদ্ধে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ৪ জানুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে র্যাব-১ তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তার গ্রেপ্তার বিএনপি মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। দলীয় নেতারা একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি বলে আখ্যায়িত করেন। একপর্যায়ে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং জামিনে থাকেন দীর্ঘ সময়। তবে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলতে থাকে। অর্থপাচার মামলা থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা সবকিছুতেই তাকে মোকাবিলা করতে হয় আদালতে। প্রতিটি শুনানিতেই তার আইনজীবীরা দাবি করেন, অপু একজন রাজনীতিক অপরাধী নন।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আদালত তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাজানো মামলায় খালাস দেন। পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে অর্থপাচার মিথ্যা মামলাতেও তিনি খালাস পান। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অভিযোগের পক্ষে যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি তদন্ত সংস্থা। খালাস পাওয়ার পর অপু বলেন, সত্য কখনো চিরকাল চাপা থাকে না। আমি রাজনীতি করি মানুষের সেবা করার জন্য, ক্ষমতা দখলের জন্য নয়। দলের পক্ষ থেকেও তাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এই নেতা এখন দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে নতুন শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শরীয়তপুরে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে গিয়ে তিনি একাধিকবার হামলার শিকার হন তিনি। প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর আক্রমণ চালিয়ে গাড়ি ও সভাস্থলে ভাঙচুর চালায়। অপু অভিযোগ করেন, আন্দোলন-সংগ্রামে ভয় দেখিয়ে থামানো যাবে না। জনগণ পরিবর্তন চায়, আমি তাদের পাশে থাকব। বর্তমানে মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপু আবারও সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। শরীয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে তার ভূমিকা স্পষ্ট। তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে তাকে ঘিরে দলের ভেতরে নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।দলীয় সূত্র বলছে, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এই নেতা ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি শরীয়তপুর?৩ আসনের সংগঠন সুসংহত করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। তার নির্বাচনী এলাকার সমর্থক ও কর্মীদের সঙ্গে বার্তা বিনিময় করছেন, দলীয় লোকজনকে সচেতন ও সক্রিয় রাখার মধ্য দিয়ে কাজ করছেন। তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতা বিবেচনায় এনে, এলাকায় প্রচলিত সমস্যা ও জনমানুষের চাহিদার দিকে ফোকাস বাড়াতে চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে তার নির্বাচনী আসন শরীয়তপুর-৩ এর নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐদিন মতবিনিময় সভা একটি বিশাল মিলনমেলায় পরিণত হয়। বিশেষভাবে চোখে পড়ে জেলার সকল স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি। স্থানীয়দের আগ্রহ ও উদ্দীপনা অনুষ্ঠানের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করেছে। সভায় মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু তার নির্বাচনী পরিকল্পনা ও স্থানীয় উন্নয়নের বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। উপস্থিত হওয়া প্রায় প্রতিটি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোলাকোলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তাঁদের কথা শুনেন এবং এলাকার উন্নয়নের জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপুর রাজনৈতিক জীবন নানা নাটকীয়তায় ভরপুর। ছাত্র রাজনীতি থেকে এপিএস, জেল থেকে খালাস, আবার রাজনীতির মঞ্চে প্রত্যাবর্তন। তার আছে একনিষ্ঠ জনসমর্থনও। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি নিঃসন্দেহে এক ভিন্নধর্মী অধ্যায়ের প্রতিনিধি যার পথচলা এখনো শেষ হয়নি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব এবং শরীয়তপুর-৩ আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এ দেশ থেকে স্বৈরশাসক চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। জনগণ আবারও প্রমাণ করেছে, তারা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের পক্ষে। বিএনপি গণমানুষের দল, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা কোনো প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি, উন্নয়ন ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তিনি আরও যোগ করেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শরীয়তপুর-৩ আসনে আমি জনগণের পাশে থেকে কাজ করছি। তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনছি এবং তারেক রহমানের নির্দেশে দলের পুনর্গঠন কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, আগামীর নির্বাচন হবে জনগণের ভোটের নির্বাচন, বন্দুকের নয়।
মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু বলেন, আগামী নির্বাচনে শরীয়তপুরবাসী প্রমাণ করে দেবে, তৃণমূলে কোনো বিভেদ নেই, সবাই এক। দলের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই, কোনো অনৈক্য নেই। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সেটা প্রমাণে এক হয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে।
দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ফিরছেন তার নির্বাচনী এলাকায়। আজ বৃহস্পতিবার তিনি শরীয়তপুরে পৌঁছাবেন এবং জেলার বিভিন্ন স্তরের দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে নানা মামলা-হামলা ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে স্থানীয় রাজনীতি থেকে সাময়িক বিরতি নিতে বাধ্য হয়েছিলেন অপু। দীর্ঘ এই সময় তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সরাসরি মাঠে সক্রিয় হতে পারেননি। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও জনগণের মাঝে ফিরে আসছেন তিনি। আগামী শুক্রবার থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি শরীয়তপুর-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করবেন। এ সময় তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন, সাধারণ জনগণের খোঁজখবর নেবেন এবং আগামীর রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন।
মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগের দমন-নিপীড়নের কারণে আমাদের অনেক সহকর্মী রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছেন। আমি ফিরছি তাদের পাশে দাঁড়াতে, জনগণের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ সংগ্রাম সফল হবেই। তিনি আরও বলেন, শরীয়তপুর-৩ আসনের জনগণ আমাকে সব সময় যে ভালোবাসা দিয়েছে, তা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি আসছি তাদের মাঝে, তাদের কথা শুনতে এবং উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও ভোটাধিকারের জন্য একসাথে কাজ করতে। দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, অপুর এই সফরকে ঘিরে ইতোমধ্যে জেলাজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা ব্যানার-পোস্টার ও স্বাগত মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতারা তাকে অভ্যর্থনা জানাতে সমন্বয় বৈঠক করছেন।
























