ঢাকা ০৪:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

শাহজালালে প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে শেখ কবিরের সিঙ্গাপুর গমন

হালিম মোহাম্মদ
  • আপডেট সময় : ১০:৪১:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হযরত শাহজালাল (রাঃ) বিমান বন্দরে কর্মরত ফ্যাসিষ্ট সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অবশেষে সিঙ্গাপুর গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন। গত রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে তিনি সিঙ্গাপুরে যান। তার বিরুদ্ধে টাকা পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারী বড় বড় পদ দখল করে রাখার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। বিমান বন্দরের উচ্চপর্যায়ে কর্মরত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোমরদের ম্যানেজ করেই শেখ কবির দেশ ছেড়েছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদ দখলের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে বিমান বন্দরে কর্মরত ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশেই শেখ কবির হোসেন গত রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর গেছেন।
বিমান বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার প্রভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২৩ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষপদে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন। এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মধ্যে রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বিমা কোম্পানি, সেবা খাতের সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসোসিয়েশন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মিটিংয়েও নিয়মিত অংশ নিতে পারেননি তিনি। কিন্তু তার নাম ভাঙিয়ে এবং কখনো ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সরকারি নানা সুবিধা পেয়েছেন বিভিন্ন ব্যক্তি। আবার কোনো কোম্পানি দখল করার পর তাকে সামনে রাখা হয়েছে। এসব কোম্পানির নেপথ্যে মালিকানায় ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং সরকারের সুবিধা নেওয়া একাধিক ব্যবসায়ী। এসব সংস্থার মূল কাজেও একধরনের স্থবিরতা ছিল। কিন্তু বিশেষ সুবিধা নিতে তাকে সামনে রাখা হয়। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি নিজেও সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়াও একই সময়ে একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক আবার অন্য একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন, বিদ্যমান আইনে যা সাংঘর্ষিক। শেখ কবির হোসেন শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই। সে হিসাবে শেখ হাসিনার চাচা। এছাড়াও গোপালগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। এ পরিচয়েই তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
সূত্র আরো জানায়, ২০১১ সাল থেকে বিমা কোম্পানির মালিকদের সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) একটানা সভাপতি ছিলেন শেখ কবির হোসেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ হাসিনার চাচা হিসেবে শেখ কবিরের পরিচিতির কারণে দুই বছর মেয়াদি বিআইএর কমিটির কোনো স্বাভাবিক নির্বাচন হতো না।
সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে পালিয়ে গেলেন শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন। রোববার সকালে সেইফ এক্সিট দেওয়া হলো শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেনকে। তিনি গত ১৬ বছরে শেখ পরিবারের নাম ব্যবহার করে এবং হাসিনার আস্থাভাজন হিসাবে প্রভাব খাটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষপদ দখল করে আকাশ চুম্বি দুর্নীতি করেছেন। তিনি ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতিরও সভাপতি । আমাদের প্রশ্ন এই প্রভাবশালীরা কারা যাদের কে শেখ হাসিনার চাচাও ম্যানেজ করে ফেলে। এর পর যে এরা শেখ হাসিনাকেও ফিরিয়ে আনবেনা সেই নিশ্চয়তা কি আমরা পেতে পারি?? এতো র*ক্ত দিয়ে যে সরকার প্রতিষ্ঠা করলাম আমরা বছর না ঘুরতে, আরেক জুলাই আসার আগেই আমরা কি দেখতে পাচ্ছি। একের পর এক প্রভাবশালীরা পালিয়ে যাচ্ছে কাদের ছত্রছায়ায়? জুলাই গণহত্যার বিচার, জুলাই ঘোষণাপত্র কি পাবো আমরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একটি ক্ষমতাধর চক্রের সহায়তায় তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করতে সক্ষম হন। উল্লেখ্য, বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষ পদে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বীমা কোম্পানি, সেবা খাতের সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে শেখ কবির হোসেন অনেকটা আত্মগোপনে ছিলেন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মিটিংয়েও নিয়মিত অংশ নিতেন না। এর আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন শেখ কবির হোসেনের নাম ব্যবহার করে বা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি সরকারি নানা সুবিধা গ্রহণ করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে, কোম্পানি দখলের পর তাকে সামনে রাখা হয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শাহজালালে প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে শেখ কবিরের সিঙ্গাপুর গমন

আপডেট সময় : ১০:৪১:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫

হযরত শাহজালাল (রাঃ) বিমান বন্দরে কর্মরত ফ্যাসিষ্ট সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে অবশেষে সিঙ্গাপুর গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন। গত রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে তিনি সিঙ্গাপুরে যান। তার বিরুদ্ধে টাকা পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারী বড় বড় পদ দখল করে রাখার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। বিমান বন্দরের উচ্চপর্যায়ে কর্মরত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোমরদের ম্যানেজ করেই শেখ কবির দেশ ছেড়েছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদ দখলের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে বিমান বন্দরে কর্মরত ডিআইজি (ইমিগ্রেশন) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশেই শেখ কবির হোসেন গত রোববার সকালে একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর গেছেন।
বিমান বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার প্রভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২৩ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষপদে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন। এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মধ্যে রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বিমা কোম্পানি, সেবা খাতের সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসোসিয়েশন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মিটিংয়েও নিয়মিত অংশ নিতে পারেননি তিনি। কিন্তু তার নাম ভাঙিয়ে এবং কখনো ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সরকারি নানা সুবিধা পেয়েছেন বিভিন্ন ব্যক্তি। আবার কোনো কোম্পানি দখল করার পর তাকে সামনে রাখা হয়েছে। এসব কোম্পানির নেপথ্যে মালিকানায় ছিলেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং সরকারের সুবিধা নেওয়া একাধিক ব্যবসায়ী। এসব সংস্থার মূল কাজেও একধরনের স্থবিরতা ছিল। কিন্তু বিশেষ সুবিধা নিতে তাকে সামনে রাখা হয়। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি নিজেও সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়াও একই সময়ে একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক আবার অন্য একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন, বিদ্যমান আইনে যা সাংঘর্ষিক। শেখ কবির হোসেন শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই। সে হিসাবে শেখ হাসিনার চাচা। এছাড়াও গোপালগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। এ পরিচয়েই তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
সূত্র আরো জানায়, ২০১১ সাল থেকে বিমা কোম্পানির মালিকদের সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) একটানা সভাপতি ছিলেন শেখ কবির হোসেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ হাসিনার চাচা হিসেবে শেখ কবিরের পরিচিতির কারণে দুই বছর মেয়াদি বিআইএর কমিটির কোনো স্বাভাবিক নির্বাচন হতো না।
সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে পালিয়ে গেলেন শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন। রোববার সকালে সেইফ এক্সিট দেওয়া হলো শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেনকে। তিনি গত ১৬ বছরে শেখ পরিবারের নাম ব্যবহার করে এবং হাসিনার আস্থাভাজন হিসাবে প্রভাব খাটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষপদ দখল করে আকাশ চুম্বি দুর্নীতি করেছেন। তিনি ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতিরও সভাপতি । আমাদের প্রশ্ন এই প্রভাবশালীরা কারা যাদের কে শেখ হাসিনার চাচাও ম্যানেজ করে ফেলে। এর পর যে এরা শেখ হাসিনাকেও ফিরিয়ে আনবেনা সেই নিশ্চয়তা কি আমরা পেতে পারি?? এতো র*ক্ত দিয়ে যে সরকার প্রতিষ্ঠা করলাম আমরা বছর না ঘুরতে, আরেক জুলাই আসার আগেই আমরা কি দেখতে পাচ্ছি। একের পর এক প্রভাবশালীরা পালিয়ে যাচ্ছে কাদের ছত্রছায়ায়? জুলাই গণহত্যার বিচার, জুলাই ঘোষণাপত্র কি পাবো আমরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একটি ক্ষমতাধর চক্রের সহায়তায় তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করতে সক্ষম হন। উল্লেখ্য, বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ২৩টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার শীর্ষ পদে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বীমা কোম্পানি, সেবা খাতের সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে শেখ কবির হোসেন অনেকটা আত্মগোপনে ছিলেন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মিটিংয়েও নিয়মিত অংশ নিতেন না। এর আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন শেখ কবির হোসেনের নাম ব্যবহার করে বা ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি সরকারি নানা সুবিধা গ্রহণ করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে, কোম্পানি দখলের পর তাকে সামনে রাখা হয়েছিল।