ঢাকা ০৭:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

সড়কে বিশৃঙ্খলা : শতভাগ অনুমোদনহীন বাসটিই কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:৫২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ৪৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

যে নিয়ম কানুন মেনে কোন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে হয়, তার কিছুই ছিলো ফরিদপুরের দুঘঠনা কবলিত বাসটির। এটি রুট পারমিট দূরের কথা ঐ রুটে চলাচলের কোন অনুমোট ছাড়াই যাত্রী নিয়ে মাগুরা যাচ্ছিল।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন কিছুই ছিলো না। এমনকি যে সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রুটে চলাচলের অনুমোদনও ছিল না বাসটির।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইউনিক পরিবহনের বাসটি চট্টগ্রাম-বগুড়া রুটে চালানোর অনুমোদন (রুট পারমিট) ছিলো।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে বাসটির কোন কাগজপত্রই হালনাগাদ করা হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ করা হলেও তার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে।

 


জানা গেছে, ইউনিক পরিবহনের যে বাস পিকআপটিকে চাপা দিয়েছে, সেটি রাস্তায় চলাচল করছিলো ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন ছাড়াই। এমনকি যে সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রুটে চলাচলের অনুমোদনও ছিল না বাসটির।

অপর দিকে যে পিকআপটি যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসছিলো, সেটি পণ্য পরিবহনের বিধি লঙ্ঘন করে যাত্রী পরিবহন করছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হতাহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী।

এদিন সকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরা ইউনিক পরিবহনের একটি বাস মাগুরা যাচ্ছিলো। পথে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিপনগর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপটিকে চাপা দেয় বাস। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া পিকআপের ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের ৫ লাখ, আহতদের ৩ লাখ এবং মরদেহ দাফনের জন্য আরও ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘটে যাওয়া এ প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দে। সংগঠনের তরফে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ট্রাক-পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তা সত্ত্বেও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় আসছিল। নিহত সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। সুতরাং পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দায় এড়াতে পারে না।

নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা নিহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ ও চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা, শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সড়কে বিশৃঙ্খলা : শতভাগ অনুমোদনহীন বাসটিই কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

আপডেট সময় : ০৯:৫২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

 

যে নিয়ম কানুন মেনে কোন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে হয়, তার কিছুই ছিলো ফরিদপুরের দুঘঠনা কবলিত বাসটির। এটি রুট পারমিট দূরের কথা ঐ রুটে চলাচলের কোন অনুমোট ছাড়াই যাত্রী নিয়ে মাগুরা যাচ্ছিল।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন কিছুই ছিলো না। এমনকি যে সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রুটে চলাচলের অনুমোদনও ছিল না বাসটির।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইউনিক পরিবহনের বাসটি চট্টগ্রাম-বগুড়া রুটে চালানোর অনুমোদন (রুট পারমিট) ছিলো।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে বাসটির কোন কাগজপত্রই হালনাগাদ করা হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ করা হলেও তার মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে।

 


জানা গেছে, ইউনিক পরিবহনের যে বাস পিকআপটিকে চাপা দিয়েছে, সেটি রাস্তায় চলাচল করছিলো ফিটনেস ছাড়পত্র ও ট্যাক্স টোকেন ছাড়াই। এমনকি যে সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রুটে চলাচলের অনুমোদনও ছিল না বাসটির।

অপর দিকে যে পিকআপটি যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসছিলো, সেটি পণ্য পরিবহনের বিধি লঙ্ঘন করে যাত্রী পরিবহন করছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হতাহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী।

এদিন সকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরা ইউনিক পরিবহনের একটি বাস মাগুরা যাচ্ছিলো। পথে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিপনগর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপটিকে চাপা দেয় বাস। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া পিকআপের ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের ৫ লাখ, আহতদের ৩ লাখ এবং মরদেহ দাফনের জন্য আরও ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘটে যাওয়া এ প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিষ কুমার দে। সংগঠনের তরফে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ট্রাক-পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তা সত্ত্বেও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় আসছিল। নিহত সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। সুতরাং পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দায় এড়াতে পারে না।

নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা নিহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ ও চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা, শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।