ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

হাল্কা রোদ ছপিয়ে বৃষ্টির দাপট

মহিউদ্দিন তুষার
  • আপডেট সময় : ১১:১৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ ৫৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা দুই দিন বৃষ্টির পর রাজধানী ঢাকায় রোদের দেখা মিললেও আবারও দেখা গেলো বৃষ্টির দাপট। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির গতিও বাড়তে থাকে। বৃষ্টির আগে সকাল থেকে আকাশ ছিল হাল্কা রোদেলা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়তে শুরু করে রোদ। এর আধাঘণ্টা পরই মুষল ধারে বৃষ্টি নামে। এর আগে নিম্নচাপের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মোট ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় রাজধানী ঢাকায়। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলেছে, গতকাল দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছিলো সংস্থাটি। এদিকে, হঠাৎ বৃষ্টিতে পথচারীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও আশেপাশের এলাকায় হালকা বাতাসের সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় জন্য পূর্বাভাসের তথ্যে বলা হয়েছে, ঢাকায় আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশ বিরাজ করতে পারে। কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর এসময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। একইসাথে বাড়তে পারে দিনের তাপমাত্রাও।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। গতকাল শুকবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে এবং আজ সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১১ মিনিটে। এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে সাতটি বিভাগে শুরু হতে যাচ্ছে টানা ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ, যা পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুর্যোগের শঙ্কা বেড়েছে। গেল দুই দিনের বিরতিহীন বৃষ্টির ফলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায়, মোহাম্মদপুর, ইসিবি, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েদাবাদ,আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ,গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়ক সহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে কিছু পরিমাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আজও রয়েছে সেই জলাবদ্ধতা।
দৈনিক বাংলা মোড়ে কথা হয় রিকশা চালক মোতালেব হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গেল দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এমনিতেই রাস্তায় যাত্রী কম। সকাল থেকে কিছুটা রোদ হওয়াতে যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ফের দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়াতে আবার মানুষ কমে গেছে। আর যারা আছে তারা সবাই ছাতা মাথায় বের হয়েছে। অলিগলি বিভিন্ন জায়গায় এখন পানি জমে আছে যে কারণে চলাফেরা করাও কঠিন হচ্ছে।
ভোক্তভোগীরা জানান, গতকাল শনিবারসহ গেল তিন দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর সিংহভাগ এলাকার সড়ক ও ফুটপাত তলিয়ে গেছে। এতে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করছে নগরবাসী। কিন্তু নির্বিকার কর্তৃপক্ষ। সমস্যার সমাধানে কার্যকর অর্থে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ বিগত ৫ অর্থবছরে এ খাতে খরচ করেছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। খাল ও নর্দমার উন্নয়নকাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় সরকারের এ মোটা অঙ্কের অর্থ গচ্চা গেছে-এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, যানজট আর জমে থাকা কাদাপানি পেরিয়ে সবাইকে ছুটতে হচ্ছে জীবিকার তাগিদে। বাড়তি ভোগান্তি যোগ করেছে যানবাহনের অস্বাভাবিক ভাড়া। এই পরিস্থিতিতে অনেককে ছাতা মাথায় গন্তব্যে হাঁটতে দেখা গেছে। অনেকে রিকশা-সিএনজি অটোরিকশায় চড়েই ছুটেছেন গন্তব্যে। যারা ছাতা নিয়ে বের হতে পারেননি, তাদের যাত্রী ছাউনি বা কোনো ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। জলাবদ্ধতা-ভোগান্তি বৃষ্টিতে ভিজেই গাড়িতে উঠতে হয় যাত্রীদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাল্কা রোদ ছপিয়ে বৃষ্টির দাপট

আপডেট সময় : ১১:১৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

টানা দুই দিন বৃষ্টির পর রাজধানী ঢাকায় রোদের দেখা মিললেও আবারও দেখা গেলো বৃষ্টির দাপট। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির গতিও বাড়তে থাকে। বৃষ্টির আগে সকাল থেকে আকাশ ছিল হাল্কা রোদেলা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়তে শুরু করে রোদ। এর আধাঘণ্টা পরই মুষল ধারে বৃষ্টি নামে। এর আগে নিম্নচাপের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মোট ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় রাজধানী ঢাকায়। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলেছে, গতকাল দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছিলো সংস্থাটি। এদিকে, হঠাৎ বৃষ্টিতে পথচারীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও আশেপাশের এলাকায় হালকা বাতাসের সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় জন্য পূর্বাভাসের তথ্যে বলা হয়েছে, ঢাকায় আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশ বিরাজ করতে পারে। কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর এসময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। একইসাথে বাড়তে পারে দিনের তাপমাত্রাও।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। গতকাল শুকবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে এবং আজ সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১১ মিনিটে। এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে সাতটি বিভাগে শুরু হতে যাচ্ছে টানা ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ, যা পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুর্যোগের শঙ্কা বেড়েছে। গেল দুই দিনের বিরতিহীন বৃষ্টির ফলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায়, মোহাম্মদপুর, ইসিবি, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েদাবাদ,আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ,গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়ক সহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে কিছু পরিমাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আজও রয়েছে সেই জলাবদ্ধতা।
দৈনিক বাংলা মোড়ে কথা হয় রিকশা চালক মোতালেব হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গেল দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এমনিতেই রাস্তায় যাত্রী কম। সকাল থেকে কিছুটা রোদ হওয়াতে যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ফের দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়াতে আবার মানুষ কমে গেছে। আর যারা আছে তারা সবাই ছাতা মাথায় বের হয়েছে। অলিগলি বিভিন্ন জায়গায় এখন পানি জমে আছে যে কারণে চলাফেরা করাও কঠিন হচ্ছে।
ভোক্তভোগীরা জানান, গতকাল শনিবারসহ গেল তিন দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর সিংহভাগ এলাকার সড়ক ও ফুটপাত তলিয়ে গেছে। এতে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করছে নগরবাসী। কিন্তু নির্বিকার কর্তৃপক্ষ। সমস্যার সমাধানে কার্যকর অর্থে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ বিগত ৫ অর্থবছরে এ খাতে খরচ করেছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। খাল ও নর্দমার উন্নয়নকাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় সরকারের এ মোটা অঙ্কের অর্থ গচ্চা গেছে-এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, যানজট আর জমে থাকা কাদাপানি পেরিয়ে সবাইকে ছুটতে হচ্ছে জীবিকার তাগিদে। বাড়তি ভোগান্তি যোগ করেছে যানবাহনের অস্বাভাবিক ভাড়া। এই পরিস্থিতিতে অনেককে ছাতা মাথায় গন্তব্যে হাঁটতে দেখা গেছে। অনেকে রিকশা-সিএনজি অটোরিকশায় চড়েই ছুটেছেন গন্তব্যে। যারা ছাতা নিয়ে বের হতে পারেননি, তাদের যাত্রী ছাউনি বা কোনো ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। জলাবদ্ধতা-ভোগান্তি বৃষ্টিতে ভিজেই গাড়িতে উঠতে হয় যাত্রীদের।