ঢাকা ০৯:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

হাসিনা দেশটাকে ভাবতেন বাপের জমিদারি, জনতা চাকর-বাকর: রিজভী

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ ৪৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

পতিত সরকারের প্রধান ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশকে মনে করতেন বাপের জমিদারি। আর জনতাকে ভাবতো চাকর-বাকর। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় নোয়াখালীর চৌমুহনী রেলওয়ে ময়দানে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে বলেই হাসিনার মতো এত নির্মম, নিষ্ঠুর, এত রক্ত নিংড়ানো একটি স্বৈরাচারকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মনে করেছেন তার বাপের জমিদারি। আর এই জমিদারি রক্ষায় তিনি দেশের জনগণকে জনগণ মনে করতেন না। চাকর-বাকর মনে করতেন।

তিনি এমনটি মনে করতেন বলেই যারা প্রতিবাদ করেছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় বক্তব্য রেখেছে। যারা মিছিল করেছে, জনসভা করেছে, স্লোগান দিয়েছে তাদেরকে তিনি শান্তিতে থাকতে দেননি। কাউকে অদৃশ্য করে দিয়েছেন চিরদিনের জন্য। কাউকে বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার করিয়েছেন। এই দানবকে বাংলাদেশর ছাত্ররা বিতাড়িত করেছে। শেখ হাসিনা বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি গেছেন বলেও রিজভী মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের ডেটলাইন দিতে আপনাদের মধ্যে এতো দ্বিধা, এতো সংকোচ কেন? আপনারা ৫ আগস্টের চেতনাকে ধারণ করতে পারছেন না। তাই স্বৈরাচারের আরেক লোককে আপনারা বসিয়ে রেখেছেন। আপনারা বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরদের বসিয়ে রেখেছেন। তারা তো আপনাকে ব্যর্থ করবেই।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আপনি আবার নতুন কিছু উপদেষ্টা করেছেন। নতুন উপদেষ্টা করার অধিকার আপনার আছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশীজন যারা তাদের তো একটা অভিমত নেওয়া দরকার ছিল। যে মেয়েটি বিতর্কিত শেখ মুজিবের বায়োপিকে অভিনয় করেছে। আপনারা তার স্বামীকে উপদেষ্টা বানিয়েছেন।

অন্তর্র্বতী সরকারে বিএনপির সমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার হয়েছেন। আপনাকে বিএনপি সমর্থন করেছে। যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে তারা সমর্থন দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সমর্থন দিয়েছে। মাঝে মাঝে আমাদের কথা বলতে হচ্ছে, কেন?

আলুর কেজি ৭৫-৮০ টাকা কেন হবে? আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন। আপনি সিন্ডিকেটবাজদের কেন গ্রেপ্তার করতে পারছেন না। দুর্বলতা কোথায় এটা একটু জানতে চাই। এটা তো অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে মানুষের কাম্য নয়। কেন এটা বাড়ছে?

নির্বাচন ইস্যুতে রিজভী বলেন, আপনি নির্বাচনের কথা বলেন, কিন্তু নির্বাচনের কোনো ডেটলাইন দেন না। কিন্ত এটা কেন। এটা তো রহস্যজনক। আপনারা মনে করছেন বিএনপির লোক যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছে তারা অশিক্ষিত। আমরা তোমাদের আগে সংস্কার শেখাই, তারপর তোমরা নির্বাচনের কথা বলো। আমরা কি জানি না সংস্কার কি? আপনারা প্রস্তাব দিতে পারেন। সেই প্রস্তাবটা দেবেন নির্বাচিত সরকারে কাছে। এজন্য নির্বাচন দিন।

বেগমগঞ্জ উপজেলা, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু।

বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুর রহীম, অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য শামীমা বরকত লাকী, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোমিত ফয়সাল, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক আবেদ, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন আলম সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আন্দোলন সংগ্রামে নিহত ও আহত নেতাকর্মীদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাসিনা দেশটাকে ভাবতেন বাপের জমিদারি, জনতা চাকর-বাকর: রিজভী

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

 

পতিত সরকারের প্রধান ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশকে মনে করতেন বাপের জমিদারি। আর জনতাকে ভাবতো চাকর-বাকর। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় নোয়াখালীর চৌমুহনী রেলওয়ে ময়দানে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে বলেই হাসিনার মতো এত নির্মম, নিষ্ঠুর, এত রক্ত নিংড়ানো একটি স্বৈরাচারকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মনে করেছেন তার বাপের জমিদারি। আর এই জমিদারি রক্ষায় তিনি দেশের জনগণকে জনগণ মনে করতেন না। চাকর-বাকর মনে করতেন।

তিনি এমনটি মনে করতেন বলেই যারা প্রতিবাদ করেছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় বক্তব্য রেখেছে। যারা মিছিল করেছে, জনসভা করেছে, স্লোগান দিয়েছে তাদেরকে তিনি শান্তিতে থাকতে দেননি। কাউকে অদৃশ্য করে দিয়েছেন চিরদিনের জন্য। কাউকে বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার করিয়েছেন। এই দানবকে বাংলাদেশর ছাত্ররা বিতাড়িত করেছে। শেখ হাসিনা বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি গেছেন বলেও রিজভী মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের ডেটলাইন দিতে আপনাদের মধ্যে এতো দ্বিধা, এতো সংকোচ কেন? আপনারা ৫ আগস্টের চেতনাকে ধারণ করতে পারছেন না। তাই স্বৈরাচারের আরেক লোককে আপনারা বসিয়ে রেখেছেন। আপনারা বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরদের বসিয়ে রেখেছেন। তারা তো আপনাকে ব্যর্থ করবেই।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আপনি আবার নতুন কিছু উপদেষ্টা করেছেন। নতুন উপদেষ্টা করার অধিকার আপনার আছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশীজন যারা তাদের তো একটা অভিমত নেওয়া দরকার ছিল। যে মেয়েটি বিতর্কিত শেখ মুজিবের বায়োপিকে অভিনয় করেছে। আপনারা তার স্বামীকে উপদেষ্টা বানিয়েছেন।

অন্তর্র্বতী সরকারে বিএনপির সমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার হয়েছেন। আপনাকে বিএনপি সমর্থন করেছে। যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে তারা সমর্থন দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সমর্থন দিয়েছে। মাঝে মাঝে আমাদের কথা বলতে হচ্ছে, কেন?

আলুর কেজি ৭৫-৮০ টাকা কেন হবে? আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন। আপনি সিন্ডিকেটবাজদের কেন গ্রেপ্তার করতে পারছেন না। দুর্বলতা কোথায় এটা একটু জানতে চাই। এটা তো অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে মানুষের কাম্য নয়। কেন এটা বাড়ছে?

নির্বাচন ইস্যুতে রিজভী বলেন, আপনি নির্বাচনের কথা বলেন, কিন্তু নির্বাচনের কোনো ডেটলাইন দেন না। কিন্ত এটা কেন। এটা তো রহস্যজনক। আপনারা মনে করছেন বিএনপির লোক যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছে তারা অশিক্ষিত। আমরা তোমাদের আগে সংস্কার শেখাই, তারপর তোমরা নির্বাচনের কথা বলো। আমরা কি জানি না সংস্কার কি? আপনারা প্রস্তাব দিতে পারেন। সেই প্রস্তাবটা দেবেন নির্বাচিত সরকারে কাছে। এজন্য নির্বাচন দিন।

বেগমগঞ্জ উপজেলা, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু।

বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুর রহীম, অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য শামীমা বরকত লাকী, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোমিত ফয়সাল, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক আবেদ, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন আলম সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আন্দোলন সংগ্রামে নিহত ও আহত নেতাকর্মীদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।