ঢাকা ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি, অতীতের অজানা কিছু গল্প’

খায়রুল আলম সুমন
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৭১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শুরু হল ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি। বাঙ্গালী জাতির অধিকার রক্ষার জন্য সব সময়ই হাতিয়ারটাই ছিলো ভাষা। ভাষার জন্য কখনও স্লোগান, পোস্টার, বুকে লিখা, আবার গ্রাফিতি হয়েছে প্রতিবাদের অস্ত্র হিসেবে দাবী তুলে ধরার হাতিয়ার। ১৯৫২ থেকে ২০২৪ যখনই অধিকার রক্ষার লড়াই হয়েছে তখনই অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠে বাঙ্গালী জাতির ভাষা। ট্রিগার চাপা বুলেট প্রাণ নিতে পারলেও প্রতিবাদের ভাষার কাছে তা বরাবরই হয়েছে দোসরদের পরাজয়। ১৯৫২ সালে পরাধীনতার শৃঙ্খলে থাকা জাতি শুধুমাত্র ভাষার অধিকার রক্ষায় গর্জে ওঠে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে নিরস্ত্র বাঙ্গালী জাতি রাজ পথে নামে। সম্বল বলতে দৃপ্ত স্লোগান আর ব্যানার-প্লাকার্ডে প্রতিবাদী ভাষা। রাষ্ট্র ভাষা, বাংলা চাই শব্দে মুখরিত ছিল।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী’তে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ নাম না জানা অনেকে পাকিস্তানী পুলিশ বাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছেন। পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি, যেখানে ভাষার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন অনেকই। যার ফলোশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী ২১ ফেব্রুয়ারী পালন করা হয়। যার নাম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বাঙ্গালীর আত্মজাগরণ কিংবা শোষকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সব জায়গায়ই প্রতিবাদী হয়েছে ভাষা। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনেও সেদিনের পোস্টার আর স্লোগানগুলোই হয়েছিল প্রেরণার মূল উৎস।
১৯৭১ সালে বাংলার স্বাধিনতার আন্দোলনের মুহূর্তেও প্রতিবাদের উপকরণই ছিল ভাষা। লাল-সবুজের বাংলার মাটিকে নিজেদের করে নিতে মহান মুক্তিযুদ্ধে বুলেটের জবাব বুলেট দিয়েই দিয়েছে এই বাংলার মানুষ। পূর্বে অকুতোভয় বাঙ্গারী স্লোগান আর প্ল্যাকার্ড হাতে অবলীলায় দাঁড়িয়েছে বন্দুকের সামনে। সেখানেও পরাজিত বুলেট, জয়ী বাঙ্গালী বুক পকেটের সাহস- যার উপকরণ ভাষা- তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা, তুমি কে? আমি কে? বাঙ্গালী, বাঙ্গালী কিংবা বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধর বাংলাদেশকে স্বাধীন কর’। ১৯৭১ সনে ছিল এটিই একামাত্র স্লোগান।

১৯৯০ সনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সাহসী নূর হোসেনের কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। বুকে-পিঠে দৃপ্ত স্লোগানে অকুতোভয় নূর হোসেন তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলো ভাষার মাধ্যমেই। বুলেট হয়ত বিদ্ধ করেছে নূর হোসেনকে, কিন্তু তাতে কী, জয়ী তো হতে পারেনি। জয় হয়েছে ভাষারই –প্রতিবাদী ভাষার। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাইয়ের উপাখ্যান সবারই জানা আছে। বৈষম্যবিরুধী ছাত্র ও আপমর জনতার সম্মেলিত প্রচেষ্টায় গণঅভ্যুত্থানে এবং দেশের তরুন ছাত্রদের শহীদের বিনিময়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় সৈরাচারী।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি, অতীতের অজানা কিছু গল্প’

আপডেট সময় : ০২:০৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুরু হল ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি। বাঙ্গালী জাতির অধিকার রক্ষার জন্য সব সময়ই হাতিয়ারটাই ছিলো ভাষা। ভাষার জন্য কখনও স্লোগান, পোস্টার, বুকে লিখা, আবার গ্রাফিতি হয়েছে প্রতিবাদের অস্ত্র হিসেবে দাবী তুলে ধরার হাতিয়ার। ১৯৫২ থেকে ২০২৪ যখনই অধিকার রক্ষার লড়াই হয়েছে তখনই অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠে বাঙ্গালী জাতির ভাষা। ট্রিগার চাপা বুলেট প্রাণ নিতে পারলেও প্রতিবাদের ভাষার কাছে তা বরাবরই হয়েছে দোসরদের পরাজয়। ১৯৫২ সালে পরাধীনতার শৃঙ্খলে থাকা জাতি শুধুমাত্র ভাষার অধিকার রক্ষায় গর্জে ওঠে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে নিরস্ত্র বাঙ্গালী জাতি রাজ পথে নামে। সম্বল বলতে দৃপ্ত স্লোগান আর ব্যানার-প্লাকার্ডে প্রতিবাদী ভাষা। রাষ্ট্র ভাষা, বাংলা চাই শব্দে মুখরিত ছিল।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী’তে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ নাম না জানা অনেকে পাকিস্তানী পুলিশ বাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছেন। পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি, যেখানে ভাষার জন্য আত্মত্যাগ করেছেন অনেকই। যার ফলোশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী ২১ ফেব্রুয়ারী পালন করা হয়। যার নাম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বাঙ্গালীর আত্মজাগরণ কিংবা শোষকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সব জায়গায়ই প্রতিবাদী হয়েছে ভাষা। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনেও সেদিনের পোস্টার আর স্লোগানগুলোই হয়েছিল প্রেরণার মূল উৎস।
১৯৭১ সালে বাংলার স্বাধিনতার আন্দোলনের মুহূর্তেও প্রতিবাদের উপকরণই ছিল ভাষা। লাল-সবুজের বাংলার মাটিকে নিজেদের করে নিতে মহান মুক্তিযুদ্ধে বুলেটের জবাব বুলেট দিয়েই দিয়েছে এই বাংলার মানুষ। পূর্বে অকুতোভয় বাঙ্গারী স্লোগান আর প্ল্যাকার্ড হাতে অবলীলায় দাঁড়িয়েছে বন্দুকের সামনে। সেখানেও পরাজিত বুলেট, জয়ী বাঙ্গালী বুক পকেটের সাহস- যার উপকরণ ভাষা- তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা, তুমি কে? আমি কে? বাঙ্গালী, বাঙ্গালী কিংবা বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধর বাংলাদেশকে স্বাধীন কর’। ১৯৭১ সনে ছিল এটিই একামাত্র স্লোগান।

১৯৯০ সনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সাহসী নূর হোসেনের কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। বুকে-পিঠে দৃপ্ত স্লোগানে অকুতোভয় নূর হোসেন তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলো ভাষার মাধ্যমেই। বুলেট হয়ত বিদ্ধ করেছে নূর হোসেনকে, কিন্তু তাতে কী, জয়ী তো হতে পারেনি। জয় হয়েছে ভাষারই –প্রতিবাদী ভাষার। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাইয়ের উপাখ্যান সবারই জানা আছে। বৈষম্যবিরুধী ছাত্র ও আপমর জনতার সম্মেলিত প্রচেষ্টায় গণঅভ্যুত্থানে এবং দেশের তরুন ছাত্রদের শহীদের বিনিময়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় সৈরাচারী।