জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ, আগাম ঈদের আমেজ জেলেপল্লীতে
- আপডেট সময় : ৪২৬ বার পড়া হয়েছে
একের পর এক ইলিশ বোঝাই ট্রলার এসে ভীড়ছে পটুয়াখালীর আলীপুর বন্দর ও মহিপুরে। জেলেপল্লীতে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ছে। এ যেন ঈদের আগাম হুল্লোর জেলেপল্লী ঘিরে। আর ফিরবে বা না-ই কেন? সাগরে মাত্র দু’দিন জাল বেয়ে মিলেছে ১৫০ মন ইলিশ! সেই ইলিশ বোঝাই ট্রলার নিয়ে পটুয়াখালী আলীপুর বন্দরে ভিড়ে ট্রলার।
ট্রলারে বরফের স্বল্পতায় ২৫ মনে মতো ইলিশ নষ্ট হয়ে যায়। বাকী ১২৫ মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪০ লাখ টাকায়। কুয়াকাটার মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম খান এসব ইলিশ কিনে নেন। ২৫ মণ ইলিশ নষ্ট না হলে আরও ১০ লাখ টাকা পেতেন মৎস্যজীবীরা।
এতো ইলিশ পাওয়ার পেছনের গল্পটা কি? মৎস্যজীবীরা জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ও ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে পালন করায় আজ বাংলাদেশের জাতীয় মাছের এতো উৎপাদন। যার সুফল সুফলভোগী হচ্ছেন সাধারণ জেলেরা।
বাজারে ইলিশের আমদানি বেশি হলে দামও সাধারণ ভোক্তদের নাগালে চলে আসবে। জাটকা ও মা রক্ষায় সাধারণ মানুষের সচেতনতা যত বাড়বে, ইলিশের উৎপাদনও ততটাই বাড়বে মনে করেন ইলিশ সম্পদ উন্ন ও ব্যবস্থা প্রকল্প সংশিষ্টরা।
মৎস্য বিভাগের মতে গত এক সপ্তাহে দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরে অন্ততপক্ষে ২ হাজার মণ ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে। এ কারণে উপকূলীয় জেলেপল্লীর অধিকাংশ পরিবারে খুশির হাওয়া বইছে।

শনিবার (৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকার হাজী আহমেদ কবিরের এফবি আল্লাহর দয়া-১ নামের একটি মাছ ধরা ট্রলার ১৫০ মণ ইলিশ নিয়ে মৎস্য বন্দর আলীপুর ঘাটে ফিরে ভীড়ে।
ট্রলারের মাঝি সূর্য জানিয়েছেন, তারা দু’দিন সমুদ্রে মাছ ধরে ১৫০ মণ ইলিশ আহরণ করেন। ট্রলারে যে পরিমাণ বরফ ছিলো তাতে ১৭ হাজার পিস ইলিশ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। তাতে ১২৫ মণ ইলিশ পাওয়া গেছে। বাকি ২৫ মণ ইলিশ মাছ জালসহ ঘাটে নিয়ে এসেছেন। ঘাটে পৌঁছে মাছগুলো জাল থেকে ছাড়িয়ে নিতে বিলম্ব হওয়ায় পচে গেছে। মাছগুলো তাজা থাকলে আরও ১০ লাখ টাকা বেশি বিক্রি হতো।
সূর্য জানান, ট্রলারের জাল নিরাপদ রাখতে অন্য একটি ট্রলারকে জাল থেকে মাছ ছাড়িয়ে নিতে বলেন, তাতে তারা অন্তত ৭ হাজার মাছ ছাড়িয়ে নিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে আলীপুরে আরও দুটি মাছ ধরা ট্রলার ১৪০ মণ ইলিশ নিয়ে ঘাটে ভীড়ে। দুই ট্রলারের ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে ৪১ লাখ টাকা।
সাগরে মিলছে প্রচুর ইলিশ। একারণে আলীপুর-মহিপুর ও উপকূলের মৎস্য অবরণ কেন্দ্রেও এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সপ্তাহজুড়েই সমুদ্রে ইলিশসহ প্রচুর পরিমানে অন্যান্য ধরনের মাছ ধরা পড়ছে। তাতে করে কলাপাড়া উপজেলার অন্তত ৩০ হাজার জেলে পরিবারের ঘরে এখন ঈদের আমেজ।
ঈদের আগ মুহূর্তে প্রচুর পরিমানে ইলিশ ও অন্যান্য মাছ ধরা পড়ায় এবারে দক্ষিণ জনপদের পটুয়াখালী উপকূলের জেলে পল্লীর ঈদ নিয়ে দুশ্চিন্তা কেচে গেছে।























