একজন মানবিক ও দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা মধুপুর থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান
- আপডেট সময় : ০৬:১৮:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪ ৩১৮ বার পড়া হয়েছে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেট সম্পর্কে সচেতনতামূল ক্লাশ নিচ্ছেন, মধূপুর থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান
মো. রুবেল মিয়া
স্কুলের শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতামূলক ক্লাশ নিচ্ছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। মাঝেমধ্যেই থানা চত্বরে প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে এলাকার বিভিন্ন স্তরের নাগরিকদের নিয়ে অপরাধ বিষয়ে সচেতনতামূল মতবিনিময় বৈঠকের আয়োজন করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি মনে করেন, এলাকাবাসীকে অপরাধ বিষয়ে সচেতন করে তোলা সম্ভব হলে সামাজিক নানা রকমের অপরাধ কমে আসবে। তাতে কমে আসবে অপরাধ, যার সুফলভোগী হবেন সাধারণ মানুষ। তাছাড়া এমনি উদ্যোগ অন্যান্য এলাকায়ও প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
জানালেন, তখন তিনি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সেময় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান (বর্তমানে ডিএমপি কমিশনার)। তাঁর পরামর্শেই সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। সেই শুরু, তারপর যেখানেই বদলী হয়ে গিয়েছেন, সেখানেই স্থানীয় নাগরিকদের নিয়ে সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করেছেন। তাতে লাভবানও হয়েছেন।
একজন মানুষ ইচ্ছে করলে সমাজের অবদান রাখতে পারেন। তেমনই একজন ব্যক্তি তৎকালীন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সচেতনতা ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করেছেন। বেদে সম্প্রদায়ের উন্নয়নেও নানা উদ্যোগ রয়েছে হাবিবুর রহমানের। তাঁরই সবচেয়ে আলোচিত এবং প্রশংসিত উদ্যোগটি হচ্ছে, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর কর্মীদের দাফন সম্পন্ন করা। এমন মানবিক কার্যক্রমের জন্য তিনি প্রশংসিত হলেও হাবিবুর রহমান কোন দিন এসব বিষয়ে আলোচনা করেননি। নিরবে-নিভৃতে কাজ করে গিয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সমাজ উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন এবং যেসব পুলিশ কর্মকর্তাদের তার পরামর্শে কাজ করতে উৎসাহিত হয়েছেন, আজ তাদের অনেকেই বিভিন্ন স্থানে কর্মরত অবস্থায় সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
তাদেরই একজন টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান। মধুপুর থানায় যোগদানের পর থেকেই তিনি বিভিন্ন এলাকা তথা হাটবাজার, রাস্তার পাশের দোকান, পাড়া-মহল্লা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যতিক্রমী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। জানালেন, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রীতিমত একটি ক্লাশ করে ইন্টারনেটের সুষ্ঠু ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হচ্ছে।
আজিজুর রহমান রাতের বেলা টহল বের হয়ে থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানের দোকানে বসে গল্প করা মানুষদের নিয়েও সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। এলাকাবাসীও তাদের মতামত তুলে ধরেন। তাতে করে উভয় পক্ষের মতবিনিময় অনেক সমস্যার সমাধান হয়। এমনি উদ্যোগের ফলে নানা অপরাধ প্রবণতা কমে আসছে।
বিশেষ করে মাদকের অপব্যবহার, পাচার, চোরাচালান, ইভ টিজিং ইত্যাদি বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে মধুপুর থানা। এলাকাবাসীকে সঙ্গী করে মধুপুর থানাকে একটি মডেল থানার রূপ দিতে চান মোল্লা আজিজুর রহমান। সেই লক্ষ্যেই দিনরাত কাজ করেছে চলেছেন। তবে, এলাকার অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চান তিনি। তিনি বলেন, পারিবারিকভাবে সচেতন হওয়া একটা বিরাট ব্যাপার। কারণ প্রতিটি মানুষ পরিবার থেকেই প্রথম শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।
গত মে মাসে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত এবং ওয়ারেন্ট তামিলের সাফল্যের জন্য জেলা পুলিশের তরফে শ্রেষ্ঠ অফিসারের পুরষ্কারে ভূষিত হন মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা আজিজুর রহমান।
লাখ টাকার হেরোইনসহ ৪ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার করে মধুপুর থানা। গত বছর ২৫ অক্টোবর রাতে মধুপুর থানাধীন পৌরসভাস্থ চাড়ালজানী খান পেট্রোল পাম্পের পূর্ব পাশে অভিযান চালিয়ে ৮০ (আশি) গ্রাম হেরোইনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, ইন্টারনেটের খারাপ দিক গুলো নিয়ে এলাকার জনগণের সাথে সচেতনামূলক মতবিনিময় করেন মোল্লা আজিজুর রহমান।