ঢাকা ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চবিতে সংঘর্ষ এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ৯০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা মুখোমুখি অবস্থানের পর গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট-সংলগ্ন জোবরা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইটের আঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনসহ দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হওয়ার খবর জানা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে দুপুর ২টায় হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ১৪৪ ধারা জারির কথা জানানো হয়। দুপুর ২টা থেকে আজ সোমবার ১ সেস্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তি শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ১ সেস্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করা হয়েছে। এই সময়ে উল্লিখিত এলাকায় সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র বহন এবং ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে ১১টার দিকে এক প্রান্তে কয়েক’শ শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। বিপরীত দিকে ছিলেন এলাকাবাসী। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দুই পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যেই ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এসময় ইটের আঘাতে আহত অন্তত ১০ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের দিকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। তাদের মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল।
এর আগে গত শনিবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা। সংঘর্ষে অন্তত ৭০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী সেখানকার একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে ওই নারী শিক্ষার্থির তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। এ সময় ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর স্থানীয় লোকজন মাইকে ডেকে লোক জড়ো করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা হামলা করেছেন। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চবিতে সংঘর্ষ এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি

আপডেট সময় :

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা মুখোমুখি অবস্থানের পর গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট-সংলগ্ন জোবরা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইটের আঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনসহ দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হওয়ার খবর জানা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে দুপুর ২টায় হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ১৪৪ ধারা জারির কথা জানানো হয়। দুপুর ২টা থেকে আজ সোমবার ১ সেস্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তি শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ১ সেস্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করা হয়েছে। এই সময়ে উল্লিখিত এলাকায় সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র বহন এবং ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে ১১টার দিকে এক প্রান্তে কয়েক’শ শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। বিপরীত দিকে ছিলেন এলাকাবাসী। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দুই পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যেই ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এসময় ইটের আঘাতে আহত অন্তত ১০ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের দিকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। তাদের মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল।
এর আগে গত শনিবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা। সংঘর্ষে অন্তত ৭০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী সেখানকার একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে ওই নারী শিক্ষার্থির তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। এ সময় ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর স্থানীয় লোকজন মাইকে ডেকে লোক জড়ো করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা হামলা করেছেন। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে।