ট্রাইব্যুনালে তারিক সিদ্দিকসহ ৯ জনের নামে লিমনের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৫:২৪:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
র্যাবের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারানো লিমন হোসেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, র্যাব-৮-এর তৎকালীন প্রধান মেজর রাশেদ, বরখাস্ত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে লিমন এসে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
তারপর আমার জামিনের পর আমি যখন আবার হাসপাতালে আসি চিকিৎসার জন্য, তখন হাসপাতাল আমাকে চিকিৎসা করাবে না বলে দেয়। তখন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যার আমার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নেয় প্রথম আলো।
প্রথমে মানবাধিকার কমিশন আমাকে নানাভাবে সাপোর্ট করেছিল। কিন্তু পরে আমি জানি না কেন জানি উনি হয়তো চাপে পড়ে আমার বিষয়টি মীমাংসার জন্য জোর দেন। যেটা আসলে খুবই দুঃখজনক ছিল। কারণ এই ঘটনা কোনো মীমাংসার নয়। আমার ওপর নির্মম নির্যাতন করে আমার একটা পা কেটে ফেলে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছে।
লিমন বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও র্যাব-৮-এর প্রধান মেজর রাশেদ এবং জিয়াউল আহসানসহ মোট নয়জন আসামি আছে এখানে। আরও অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজন আছে এখানে
লিমন আরও বলেন, আসলে একটা পায়ের বিনিময়ে কোনো ক্ষতিপূরণ হয় না। এটার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আইন আছে, সে ভিত্তিতে আমাকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় সে ক্ষতিপূরণ দেবে। ওই সময় হাইকোর্ট থেকে একটি রায় দেওয়া হয়েছিল যে, লিমনের দায়ভার রাষ্ট্রকে নিতে হবে। তখন হাইকোর্টের আদেশও রাষ্ট্র মানেনি। তখন সরকার নিজেকে মনে করতো সব কিছুর ঊর্ধ্বে।
লিমন বলেন, আমাকে যখন গুলি করা হয় আমার মায়ের একটা দাবি ছিল। তিনি র্যাব-৮-এ গিয়ে বলেছিলেন, আমার ছেলের চিকিৎসা করান এবং তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। কিন্তু র্যাব কোনোভাবে এই দায়িত্ব নেয়নি। সবসময় তাদের দাবি ছিল, লিমন সন্ত্রাসী। তবে গণস্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সংস্থার সাহায্যের মাধ্যমে আমি সুস্থ হয়েছি ও আমার পড়াশোনা সম্পন্ন করেছি।
তিনি বলেন, আমার এখন প্রথম চাওয়া হচ্ছে আমাকে যারা পঙ্গু করে দিয়েছে তাদের বিচার চাই। একটা সুষ্ঠু তদন্ত করে এর বিচার করা হোক।
লিমন বলেন, আমি এবং আমার পরিবার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। পিবিআই তাদের এক রিপোর্টে বলেছিল, লিমন ভালো ছেলে। তবে তাকে র্যাব গুলি করেনি, কে বা কারা গুলি করেছে তা জানা নেই, এমন একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। ফ্যাসিবাদ চলে যাওয়ার পর পুরো রাষ্ট্রের ও আমার পরিবারের ট্রাইব্যুনালের প্রতি একটা আস্থা হয়েছে। তাই এই কারণে আমি আজ এখানে অভিযোগ দাখিল করেছি। আমি এখানে সুষ্ঠু বিচার পাবো।
২০১১ সালে রাজাপুর উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী দুই সহোদর মিজান ও মোর্শেদকে ধরতে গিয়ে সোর্সের ভুল তথ্যের কারণে লিমনের পায়ে গুলি করে র্যাব। চিকিৎসাকালে পা হারান লিমন হোসেন। তখন তার বয়স ছিল ১৬। এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় র্যাবের গুলিতে লিমনের পা হারানোর ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।