ঢাকা ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

ডুমুরিয়াবাসীর কান্নায় বিদায় নিলেন ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন

মহিউদ্দিন তুষার
  • আপডেট সময় : ৫৫৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দীর্ঘ প্রায় দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আল-আমিনকে বিদায় জানাতে গিয়ে পুরো উপজেলা যেন আবেগে ভাসল। গত মঙ্গলবার তার বিদায় অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। দায়িত্ববান, সৎ ও মানবিক কর্মকর্তা হিসেবে তাকে “ডুমুরিয়ার অমূল্য সম্পদ” উল্লেখ করে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ।

মুহাম্মদ আল-আমিন ৩৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে ৩৫তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। নড়াইল, গাজীপুর, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদর উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি খুলনার পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় দুই বছর তিনি ডুমুরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিগগিরই তিনি যশোর সেনানিবাসে ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) হিসেবে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করবেন।

ডুমুরিয়ায় দায়িত্ব পালনকালকে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, দীর্ঘ ০১ বছর ০৮ মাসের দায়িত্ব পালনকালে ডুমুরিয়ার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা, আন্তরিক সহযোগিতা ও সমর্থন আমাকে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ করেছে। এই স্মৃতি আমার জীবনের এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, এই উপজেলার জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধান ও নাগরিক সেবার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তারপরও কোনো ব্যর্থতা থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ডুমুরিয়াকে উন্নত, নিরাপদ ও মানবিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার যে আন্তরিক প্রচেষ্টা সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় চলছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ডুমুরিয়ার প্রতি আমার ভালোবাসা ও মমতা অটুট থাকবে।

ডুমুরিয়ার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা ইউএনও আল-আমিনের মানবিক উদ্যোগ, দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্রুত সিদ্ধান্ত, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, সেবাখাতের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি তার সহজ-সরল আচরণের প্রশংসা করেন। বিদায় অনুষ্ঠানে তারা বলেন, ডুমুরিয়া আজ এক নিবেদিতপ্রাণ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে হারালো। একজন নাগরিকের ভাষায়, তিনি শুধুই একজন ইউএনও ছিলেন না, ছিলেন মানুষের কাছে ভরসার জায়গা।

বিদায় মুহূর্তে আবেগঘন পরিবেশে সকলের উদ্দেশে ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ডুমুরিয়া আরও এগিয়ে যাবে এই বিশ্বাস নিয়েই আমি বিদায় নিচ্ছি। ডুমুরিয়াবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিদায়ে পুরো উপজেলায় এক অনুরণিত শূন্যতার অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ডুমুরিয়াবাসীর কান্নায় বিদায় নিলেন ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন

আপডেট সময় :

দীর্ঘ প্রায় দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আল-আমিনকে বিদায় জানাতে গিয়ে পুরো উপজেলা যেন আবেগে ভাসল। গত মঙ্গলবার তার বিদায় অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। দায়িত্ববান, সৎ ও মানবিক কর্মকর্তা হিসেবে তাকে “ডুমুরিয়ার অমূল্য সম্পদ” উল্লেখ করে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ।

মুহাম্মদ আল-আমিন ৩৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে ৩৫তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। নড়াইল, গাজীপুর, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদর উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি খুলনার পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ২১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় দুই বছর তিনি ডুমুরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিগগিরই তিনি যশোর সেনানিবাসে ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) হিসেবে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করবেন।

ডুমুরিয়ায় দায়িত্ব পালনকালকে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, দীর্ঘ ০১ বছর ০৮ মাসের দায়িত্ব পালনকালে ডুমুরিয়ার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা, আন্তরিক সহযোগিতা ও সমর্থন আমাকে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ করেছে। এই স্মৃতি আমার জীবনের এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, এই উপজেলার জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধান ও নাগরিক সেবার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তারপরও কোনো ব্যর্থতা থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ডুমুরিয়াকে উন্নত, নিরাপদ ও মানবিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার যে আন্তরিক প্রচেষ্টা সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় চলছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ডুমুরিয়ার প্রতি আমার ভালোবাসা ও মমতা অটুট থাকবে।

ডুমুরিয়ার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা ইউএনও আল-আমিনের মানবিক উদ্যোগ, দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্রুত সিদ্ধান্ত, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, সেবাখাতের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি তার সহজ-সরল আচরণের প্রশংসা করেন। বিদায় অনুষ্ঠানে তারা বলেন, ডুমুরিয়া আজ এক নিবেদিতপ্রাণ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে হারালো। একজন নাগরিকের ভাষায়, তিনি শুধুই একজন ইউএনও ছিলেন না, ছিলেন মানুষের কাছে ভরসার জায়গা।

বিদায় মুহূর্তে আবেগঘন পরিবেশে সকলের উদ্দেশে ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ডুমুরিয়া আরও এগিয়ে যাবে এই বিশ্বাস নিয়েই আমি বিদায় নিচ্ছি। ডুমুরিয়াবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিদায়ে পুরো উপজেলায় এক অনুরণিত শূন্যতার অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে।