ঢাকা ০৮:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দাগনভূঞায় শিক্ষকরা রাজনৈতিক দলের কমিটিতে প্রাথমিক

শাখাওয়াত হোসেন টিপু, দাগনভূঞা
  • আপডেট সময় : ১২:০৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সরকারি প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবিরা কোন প্রকার রাজনীতি বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

অথচ এই বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এবং সরকারি বিধিমালা তোয়াক্কা না করে অনৈতকভাবে দলীয় এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পদে যুক্ত হয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা।

জানা গেছে, দাগনভূঞা রাজনৈতিক দলসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনের সাবেক এবং বর্তমান কমিটিতে একাধিক নারী-পুরুষ শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। সরকারি চাকরি করে অনেকেই রাজনৈতিক পদ পেতে তথ্য গোপন করে বিভিন্ন পদ-পদবি বাগিয়ে নিয়েছেন। আর এসব পদ-পদবি ব্যবহার করে তারা ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনৈতিক ও সরকারি সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন অনায়সে।

সরকারি চাকরি করেও দলের প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক সুবিধা ও স্থানীয় প্রশাসনকে চাপে রাখছেন সুবিধাভোগীরা। এতে সাধারণ মানুষের কাছে দল এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন স্থানীয়রা।

দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আষিশ দত্ত। তিনি সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি দাগনভূঞা উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি পদে রয়েছেন।

তিনি ছিলেন, যুবলীগ নেতা ও দাগনভূঁইয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবীর রতনের আস্থাভাজন আশীষ দত্ত ছিলেন, শিক্ষকদের বদলী বাণিজ্যের মূলহোতা। তার ক্ষমতার কাছে সবাই ছিলেন জিম্মি। তার ইচ্ছায় ও খেয়াল খুশিমতে সনাতন ধর্মীয় শিক্ষকদের সুবিধাজনক স্কুলে পোস্টিং দেওয়াতেন।

বড় দাদা খ্যাত রাজেস মজুমদার সহকারী শিক্ষক, এনায়েত নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি দাগনভূঞা পৌর আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং ফেনী পৌর যুবলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদ নিয়ে বহাল তবিয়তে আছেন।

দাউদুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক উত্তর কৌশল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি ১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদক ছিলেন। তিনিও শিক্ষা অফিসের বদলি বানিজ্যের সাথে জড়িত ছিলেন।
এছাড়াও দাগনভূঞা আরো অনেক দলবাজ শিক্ষকের কারণে প্রাইমারী শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ধ্বংসের মুখে।

সরকারি কর্মচারী আচরন বিধিমালা ১৯৭৯ ও ২০০২ সংশোধনীর ২৫. ১ এর ধারায় বলা হয়েছে সরকারি কর্মচারী কোন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হবেননা বা অন্য কোন উপায়ে সম্পৃক্ত হবেন না অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রমে কোন উপায়ে অংশগ্রহণ বা সহায়তা করবেন না। হলে সরকার দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। অথচ সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে তারা রাজনৈতিক দলের কমিটিতে যুক্ত এবং কোন বিধি বিধান তোয়াক্কা না করে হরহামেশাই রাজনীতি করে যাচ্ছে।

প্রাইমারী শিক্ষকদের দলবাজী ও দলীয় পদ গ্রহনের বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুর রহমান বলেন, কে কোন দলের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তা আমার জানা নাই। কেউ কখনও আমার কাছে রাজনৈতিক দলের পদবী গ্রহন করেছে মর্মে জানায় নাই।

সরকারী চাকুরীকালীন কেউ সরাসরি রাজনৈতিক দলের পদ-পদবী গ্রহন করতে পারে না। যারা সরকারী নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেনি, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমা বলেন, তারা রাজনীতি করে আমার জানা নেই। সরকারি চাকরি করে রাজনীতি করার কোন বিধান নেই। যারা রাজনীতিতে বা কোন দলের পদ পদবীতে রয়েছেন, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দাগনভূঞায় শিক্ষকরা রাজনৈতিক দলের কমিটিতে প্রাথমিক

আপডেট সময় : ১২:০৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

 

সরকারি প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবিরা কোন প্রকার রাজনীতি বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

অথচ এই বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এবং সরকারি বিধিমালা তোয়াক্কা না করে অনৈতকভাবে দলীয় এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পদে যুক্ত হয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা।

জানা গেছে, দাগনভূঞা রাজনৈতিক দলসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনের সাবেক এবং বর্তমান কমিটিতে একাধিক নারী-পুরুষ শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। সরকারি চাকরি করে অনেকেই রাজনৈতিক পদ পেতে তথ্য গোপন করে বিভিন্ন পদ-পদবি বাগিয়ে নিয়েছেন। আর এসব পদ-পদবি ব্যবহার করে তারা ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনৈতিক ও সরকারি সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন অনায়সে।

সরকারি চাকরি করেও দলের প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক সুবিধা ও স্থানীয় প্রশাসনকে চাপে রাখছেন সুবিধাভোগীরা। এতে সাধারণ মানুষের কাছে দল এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন স্থানীয়রা।

দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আষিশ দত্ত। তিনি সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি দাগনভূঞা উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি পদে রয়েছেন।

তিনি ছিলেন, যুবলীগ নেতা ও দাগনভূঁইয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবীর রতনের আস্থাভাজন আশীষ দত্ত ছিলেন, শিক্ষকদের বদলী বাণিজ্যের মূলহোতা। তার ক্ষমতার কাছে সবাই ছিলেন জিম্মি। তার ইচ্ছায় ও খেয়াল খুশিমতে সনাতন ধর্মীয় শিক্ষকদের সুবিধাজনক স্কুলে পোস্টিং দেওয়াতেন।

বড় দাদা খ্যাত রাজেস মজুমদার সহকারী শিক্ষক, এনায়েত নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি দাগনভূঞা পৌর আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং ফেনী পৌর যুবলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদ নিয়ে বহাল তবিয়তে আছেন।

দাউদুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক উত্তর কৌশল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি ১ নং সিন্দুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদক ছিলেন। তিনিও শিক্ষা অফিসের বদলি বানিজ্যের সাথে জড়িত ছিলেন।
এছাড়াও দাগনভূঞা আরো অনেক দলবাজ শিক্ষকের কারণে প্রাইমারী শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ধ্বংসের মুখে।

সরকারি কর্মচারী আচরন বিধিমালা ১৯৭৯ ও ২০০২ সংশোধনীর ২৫. ১ এর ধারায় বলা হয়েছে সরকারি কর্মচারী কোন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হবেননা বা অন্য কোন উপায়ে সম্পৃক্ত হবেন না অথবা বাংলাদেশে বা বিদেশে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রমে কোন উপায়ে অংশগ্রহণ বা সহায়তা করবেন না। হলে সরকার দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। অথচ সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে তারা রাজনৈতিক দলের কমিটিতে যুক্ত এবং কোন বিধি বিধান তোয়াক্কা না করে হরহামেশাই রাজনীতি করে যাচ্ছে।

প্রাইমারী শিক্ষকদের দলবাজী ও দলীয় পদ গ্রহনের বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুর রহমান বলেন, কে কোন দলের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তা আমার জানা নাই। কেউ কখনও আমার কাছে রাজনৈতিক দলের পদবী গ্রহন করেছে মর্মে জানায় নাই।

সরকারী চাকুরীকালীন কেউ সরাসরি রাজনৈতিক দলের পদ-পদবী গ্রহন করতে পারে না। যারা সরকারী নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেনি, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমা বলেন, তারা রাজনীতি করে আমার জানা নেই। সরকারি চাকরি করে রাজনীতি করার কোন বিধান নেই। যারা রাজনীতিতে বা কোন দলের পদ পদবীতে রয়েছেন, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।