ঢাকা ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

দেড় যুগ পর রমজানের স্বস্তি বাজারে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশ কম রয়েছে। আর মধ্য রজমানেও বাজারে পণ্যের দাম ক্রেতাকে বেশ স্বস্তি দিচ্ছে। বিশেষ করে সবজির দাম নিয়ে এবার ক্রেতার কোনো অভিযোগ নেই। বাজারে এখন দুই-তিন রকমের সবজির আইটেম ছাড়া বাকি সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে

আমিনুল হক ভূইয়া
এক-দুই মাস নয়। বছরের পর পেরিয়ে দেড় যুগ পর রমজানের বাজারে স্বস্তি। বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১৫ থেকে ২০ টাকা! এতোটা সস্তায় টমোটো বিক্রির কথা অনেকে হয়তো ভুলেই গিয়েছিলো। ইতিপুর্বে রমজান শুরু আগের দিন প্রতি কেজি শসা বিক্রি বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা আর শ’র ঘর পেরিয়ে যায় কাঁচা মরিচের কেজি। এবারে সেখানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে টমোমো, কাঁচামরিচ। গত রোজায় টমেটো ১২০, পেয়াজ ১৪০, আলু ৫০ টাকা কেজি। আর এবার টমেটো ২০, পিয়াজ ২৫, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। গত রমজানে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা, সেই পেঁয়াজ এবারের প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আলুর কেজি ২০টাকা, যা বিগত ৫ বছর ধরে বিক্রি হয়েছে ৮০টাকা কেজি। আদার কেজি ১২০টাকা যা গত রমজানেও ছিলো ২৫০টাকা। গত রমজানে বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। বেগুনের দাম বাড়ায় বলা হতো মিষ্টি কুমড়া দিয় বেগুনি বানিয়ে খেতে। এ বছর সেই বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
এবার রমজানে শিম ৪০, শসা ৩০, করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০, ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০, প্রকারভেদে প্রতি হালি লেবু ৪০ থেকে ৭০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০, লাউ প্রতিপিস ৪০ থেকে ৫০, ঢ্যাঁড়শ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ ও প্রতি হালি কাঁচাকলা ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবছর রমজানে বাজারে বইছে স্বস্তির হাওয়া। কিন্তু দুঃখ ভোজ্যতেল নিয়ে। তেল নিয়ে কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর চাল বাজি থামছে না। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। বাজারে মুরগীর দাম কমেছে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশ কম রয়েছে। আর মধ্য রজমানেও বাজারে পণ্যের দাম ক্রেতাকে বেশ স্বস্তি দিচ্ছে। বিশেষ করে সবজির দাম নিয়ে এবার ক্রেতার কোনো অভিযোগ নেই। বাজারে এখন দুই-তিন রকমের সবজির আইটেম ছাড়া বাকি সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে। মূলত এখন মৌসুম নয়, এমন সবজির দাম বাজারে কিছুটা বাড়তি। দেশি রসুন ১০০ ও ইন্ডিয়ান রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। দেশি মসুর ডাল ১৪০, মুগ ডাল ১৮০, ছোলা ১১০ ও খেসারির ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি কক মুরগির কেজি ২৬০-২৮০ টাকা। আর সোনালি হাইব্রিড ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাল লেয়ার মুরগি ২৯০, সাদা লেয়ার ২৮০, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ ও দেশি মুরগি প্রতি কেজিতে ৬০০ থেকে ৬৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকারভেদে চাষের শিংয়ের কেজি ৪০০ থেকে ৬০০, রুই মাছ ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৩০, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ১৪০০, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৭৫০ , কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০। দেশের মেঘনা, পদ্মা ও তেতুলিয়া নদীতে পোয়া মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বাজারে পোয়া ৩০০ থেকে ৩৫০, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০, তেলাপিয়া ২০০, কই ২২০ থেকে ২৩০, মলা ৫০০, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৩০০, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০, কাচকি ৪০০, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০, বাইম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৫০, খাসির মাংস ১,১৫০ থেকে ১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৮ টাকায়। ঢাকার খেলগাঁও, সেগুনবাগিচা, গোড়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন জানান, এবারের রমজানে সকল নিত্যপণ্যে স্বস্তি। গত বছর যে টমেটো বিক্রি হয়েছে, একশ’ টাকার ওপরে, সেই টমেটো এবারে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। ১৫ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি টমেটো কিনেছেন বোরহান। এবারে রমজানে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকলেও চালের দাম বেশি। এরমধ্যে রোজা শুরুর পরও বাজারে কিছু কিছু চালের দাম কেজি প্রতি দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে। চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তিন দফা চালের দাম বেড়েছে। সবকিছু হিসাবে নিলে কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু একদফা দুয়েক টাকা কমেছিল। বিক্রেতারা জানান, গত এক সপ্তাহে চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। বিভিন্ন মানের মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে। ৮০ টাকার নিচে কোনো ভালো মানের চাল পাওয়া যায় না। মোটা চালের দামও কম নয়। ৫৮ টাকার নিচে কোনো মোটা সেদ্ধ চাল নেই।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দেড় যুগ পর রমজানের স্বস্তি বাজারে

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশ কম রয়েছে। আর মধ্য রজমানেও বাজারে পণ্যের দাম ক্রেতাকে বেশ স্বস্তি দিচ্ছে। বিশেষ করে সবজির দাম নিয়ে এবার ক্রেতার কোনো অভিযোগ নেই। বাজারে এখন দুই-তিন রকমের সবজির আইটেম ছাড়া বাকি সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে

আমিনুল হক ভূইয়া
এক-দুই মাস নয়। বছরের পর পেরিয়ে দেড় যুগ পর রমজানের বাজারে স্বস্তি। বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১৫ থেকে ২০ টাকা! এতোটা সস্তায় টমোটো বিক্রির কথা অনেকে হয়তো ভুলেই গিয়েছিলো। ইতিপুর্বে রমজান শুরু আগের দিন প্রতি কেজি শসা বিক্রি বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা আর শ’র ঘর পেরিয়ে যায় কাঁচা মরিচের কেজি। এবারে সেখানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে টমোমো, কাঁচামরিচ। গত রোজায় টমেটো ১২০, পেয়াজ ১৪০, আলু ৫০ টাকা কেজি। আর এবার টমেটো ২০, পিয়াজ ২৫, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। গত রমজানে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা, সেই পেঁয়াজ এবারের প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আলুর কেজি ২০টাকা, যা বিগত ৫ বছর ধরে বিক্রি হয়েছে ৮০টাকা কেজি। আদার কেজি ১২০টাকা যা গত রমজানেও ছিলো ২৫০টাকা। গত রমজানে বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। বেগুনের দাম বাড়ায় বলা হতো মিষ্টি কুমড়া দিয় বেগুনি বানিয়ে খেতে। এ বছর সেই বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
এবার রমজানে শিম ৪০, শসা ৩০, করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০, ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০, প্রকারভেদে প্রতি হালি লেবু ৪০ থেকে ৭০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০, লাউ প্রতিপিস ৪০ থেকে ৫০, ঢ্যাঁড়শ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ ও প্রতি হালি কাঁচাকলা ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবছর রমজানে বাজারে বইছে স্বস্তির হাওয়া। কিন্তু দুঃখ ভোজ্যতেল নিয়ে। তেল নিয়ে কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর চাল বাজি থামছে না। তারা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। বাজারে মুরগীর দাম কমেছে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বেশ কম রয়েছে। আর মধ্য রজমানেও বাজারে পণ্যের দাম ক্রেতাকে বেশ স্বস্তি দিচ্ছে। বিশেষ করে সবজির দাম নিয়ে এবার ক্রেতার কোনো অভিযোগ নেই। বাজারে এখন দুই-তিন রকমের সবজির আইটেম ছাড়া বাকি সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে। মূলত এখন মৌসুম নয়, এমন সবজির দাম বাজারে কিছুটা বাড়তি। দেশি রসুন ১০০ ও ইন্ডিয়ান রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। দেশি মসুর ডাল ১৪০, মুগ ডাল ১৮০, ছোলা ১১০ ও খেসারির ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি কক মুরগির কেজি ২৬০-২৮০ টাকা। আর সোনালি হাইব্রিড ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাল লেয়ার মুরগি ২৯০, সাদা লেয়ার ২৮০, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ ও দেশি মুরগি প্রতি কেজিতে ৬০০ থেকে ৬৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকারভেদে চাষের শিংয়ের কেজি ৪০০ থেকে ৬০০, রুই মাছ ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৩০, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ১৪০০, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৭৫০ , কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০। দেশের মেঘনা, পদ্মা ও তেতুলিয়া নদীতে পোয়া মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বাজারে পোয়া ৩০০ থেকে ৩৫০, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০, তেলাপিয়া ২০০, কই ২২০ থেকে ২৩০, মলা ৫০০, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৩০০, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০, কাচকি ৪০০, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০, বাইম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৫০, খাসির মাংস ১,১৫০ থেকে ১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৮ টাকায়। ঢাকার খেলগাঁও, সেগুনবাগিচা, গোড়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন জানান, এবারের রমজানে সকল নিত্যপণ্যে স্বস্তি। গত বছর যে টমেটো বিক্রি হয়েছে, একশ’ টাকার ওপরে, সেই টমেটো এবারে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। ১৫ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি টমেটো কিনেছেন বোরহান। এবারে রমজানে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকলেও চালের দাম বেশি। এরমধ্যে রোজা শুরুর পরও বাজারে কিছু কিছু চালের দাম কেজি প্রতি দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে। চালের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে তিন দফা চালের দাম বেড়েছে। সবকিছু হিসাবে নিলে কেজিপ্রতি প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু একদফা দুয়েক টাকা কমেছিল। বিক্রেতারা জানান, গত এক সপ্তাহে চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে। বিভিন্ন মানের মিনিকেট চালের ২৫ কেজির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে। ৮০ টাকার নিচে কোনো ভালো মানের চাল পাওয়া যায় না। মোটা চালের দামও কম নয়। ৫৮ টাকার নিচে কোনো মোটা সেদ্ধ চাল নেই।