দেশে ফিরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ

- আপডেট সময় : ১০:৩৮:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫ ৯৭ বার পড়া হয়েছে
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আবদুল হামিদ স্বদেশে আসলেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ।গতকাল রোববার মধ্য রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাবেক রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী বিমান অবতরণ করে। থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (টিজি-৩৩৯) তিনি ঢাকায় আসেন। এ সময় ফ্লাইট থেকে হুইল চেয়ার দিয়ে আব্দুল হামিদকে নামিয়ে আনা হয়। তার পরনে ছিল শার্ট ও লুঙ্গি। এসময় তাকে অনেকটা বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে বহনকারী বিমান দেশের মাটিতে অবতরণের পর রাত ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যান। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পরে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন। রাত পৌনে ৩টার সময় তার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় এবং তাৎক্ষণিক তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
এর আগে গত ৬ মে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত রাতে থাইল্যান্ডে যান। থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি দেশ ছাড়েন। এ সময় তার সঙ্গে ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ও শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান গেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ। তার দেশত্যাগ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় তার নিজের জেলা কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়।
এ ছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে নিয়োজিত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার এবং কিশোরগঞ্জে আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একজন উপপরিদর্শক ও এসবির একজন সহকারী উপপরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও করেছে পুলিশ।
এরপর শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারকে সভাপতি করে তিনজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। অপর দুই সদস্য হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
প্রসঙ্গত,আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত আবদুল হামিদ ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকার হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর আওয়ামী লীগের সময়ে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসায় ছিলেন আবদুল হামিদ। গত বছরের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ প্রায় সব শীর্ষ নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এর মধ্যে গত ১৪ জানুয়ারি বিকেলে কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১২৪ জনকে আসামি করা হয়। কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন তহমুল ইসলাম (২৭) নামের এক তরুণ। বাদী কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর লতিবাবাদ এলাকার আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি জানান, তিনি বিএনপির কর্মী। আন্দোলনের সময় তিনি আহত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মামলা করেছেন।